তীব্র তাপদাহে দেশের চা শিল্পে মারাত্মক প্রভাব, চিন্তায় বোর্ড।
অনলাইন প্রতিনিধি || গত দুই-তিন মাসে টানা তীব্র তাপদাহে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেছে চা শিল্পে।ভারত সরকারের চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী তীব্র তাপদাহে চা উৎপাদনে বড় ধরনের ধস নেমেছে। যা চা শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।এই ক্ষতি কিভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটাই এখন সবথেকে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চা বোর্ডের দাবি।চা গাছের জন্য ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবথেকে উত্তম।তবে সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চা গাছ সহ্য করতে পারে।এছাড়া চা বাগানে যদি প্রতি ৩০ ফুট অন্তর অন্তর বড় গাছ থাকে,(যাকে ‘সেড ট্রি’ বলা হয়)তাহলে ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপ সহন করতে পারে চা গাছ।কিন্তু এর উপরেই গেলেই সর্বনাশ।এবার সেটাই হয়েছে।বৃষ্টিহীন গত দুই-তিন মাসে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রির উপর পৌঁছেছে।ত্রিপুরা রাজ্যেও তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি পৌঁছেছিল।এই তীব্র তাপদাহে শুধু ত্রিপুরাতেই নয়, গোটা দেশে পুড়েছে চা বাগানগুলি। তাপে ঝলসে গেছে চায়ের পাতা। বিশাল সবুজের সমারোহ হারিয়ে এখন চা বাগানগুলি কালচে লাল রং ধারণ করেছে।বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চা গাছে লাল মাকড়সা, থ্রিপস এবং লুপার নামক পোকার আক্রমণ ঘটেছে।এই পোকাগুলি চা পাতার কুঁড়ি সহ গোটা গাছকেই কুঁকড়ে বিবর্ণ করে দিয়েছে।যে কারণে এই পাতা আর কোনও কাজে লাগবে না।কেরালা এবং কর্ণাটকে চা উৎপাদন হয়। গত বছর এপ্রিলে ওই তিন রাজ্যে চা উৎপাদন হয়েছিল ২০.৮০ মিলিয়ন কেজি।এ বছর এপ্রিলে ওই তিন রাজ্যে উৎপাদন হয়েছে ১৯.০৬ মিলিয়ন কেজি।এ বছর মে মাসে উৎপাদন আরও মারাত্মকভাবে কমে গেছে। শুধু ভারতেই নয়, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, কেনিয়াসহ অন্যান্য দেশেও চা উৎপাদনে টান পড়েছে।এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দায়ী অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহ।পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, তার ধারেকাছেও বৃষ্টিপাত হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণের ফলে জলবায়ুতে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।’গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ নিয়ে পরিবেশবিদরা বারবার সতর্ক করলেও কে শুনছে কার কথা। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে।এভাবে উৎপাদন কমতে থাকলে পথে বসবে চা শিল্প।এই আশঙ্কাই করছেন সংশ্লিষ্টরা।রোজগারহীন হয়ে পড়বে লক্ষ লক্ষ চা শ্রমিক।দেশে বর্ষা ঢুকলেও ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।