ফের কাঠগড়ায় টিপিএসসি।

 ফের কাঠগড়ায় টিপিএসসি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || পিআরটিসি জটে টিপিএসসি পরিচালিত ইঞ্জিনীয়ার পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার।সরকারী চাকরির নামে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হচ্ছে।যার খেসারত দিতে যাচ্ছে রাজ্যের লক্ষাধিক বেকার।কারণ সারা দেশের মধ্যে রাজ্য সরকারের ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন উল্টো পথে চলছে।দেশের সবগুলি রাজ্যে নিজস্ব লোকসেবা আয়োগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার ক্ষেত্রে পারমানেন্ট রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক ৷ অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কূটচালে রাজ্যের বেকাররা আসাম, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, চেন্নাই, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে গিয়ে সরকারী চাকরির আবেদন করতে পারেন না।শুধু তাই নয়, বেসরকারী ক্ষেত্রেও রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। অভিযোগ অনেক ক্ষেত্রে আবার রাজ্যের বেকারদের তাড়িয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়। এই সত্যটা সকল রাজ্যবাসীর জানা রয়েছে।তবে কোন উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার ত্রিপুরায় সরকারী চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে পিআরটিসির বাধ্যতামূলক নিয়মকে বাতিল করে দিল? এ প্রশ্নের উত্তর গত ৫ বছরেও দিল না ত্রিপুরা সরকার। রাজ্য সরকারের এই বেকার বিরোধী সিদ্ধান্ত রাতারাতি কার্যকর করার লক্ষ্যে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও সরকারী চাকরির পরীক্ষায় আবেদনের জন্যে পিআরটিসি বাধ্যতামূলক নিয়ম বাতিল করে দিল।যার ফলে বর্তমানে বহিঃরাজ্যের বেকাররা রাজ্যে এসে টিপিএসসি ও অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারী চাকরির সুযোগ নিচ্ছে।রাজ্য সরকারের জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ সি এবং তাদের ডি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও পিআরটিসির নিয়মকে বাতিল করা হয়েছিল।এই কারণে বহিঃরাজ্যের হাজারো বেকার এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শামিলের সুযোগ পেয়ে যায়। কিন্তু দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ঘুম ভাঙে রাজ্য সরকারের। এরপর লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের এক সপ্তাহ আগে জেআরবিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পিআরটিসি নিয়মকে পুনরায় বাধ্যতামূলক করা হয়।কিন্তু বিজ্ঞাপন প্রকাশের সময় যেহেতু পিআরটিসি নিয়ম ছিল বাধ্যতামূলক আর ফলাফল প্রকাশে বাতিল। তাই জেআরবিটি এখন যাচ্ছে আদালতে।অভিযোগ রাজ্যের বিজেপি জোট সরকারের এই সিদ্ধান্তর জন্যে টিসিএস, টিপিএস, অধ্যাপক অধ্যাপিকা সহ অন্যান্য গ্রুপ এ, গ্রুপ বি, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের চাকরি পর্যন্ত বহিঃরাজ্যে চলে যাচ্ছে। যদিও প্রথম জোট সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে ৫০ হাজার সরকারী চাকরির! শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার এখানেই থেমে নেই। টিপিএসসি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের আগ মূহুর্তে টিপিএসসি’র মাধ্যমে গ্রুপ এ এবং গ্রুপ বি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘ সাত বছর পর ১৭৬টি পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে রাজ্যের সিভিল, ইলেক্ট্রিকাল, মেকানিকাল, বিভাগে উত্তীর্ণ ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার বেকাররা উৎসাহিত ছিলেন। এমনকী এরপর জোট সরকার ও ক্ষমতায় এসে যায়। কিন্তু এখন আগামী ১৬ জুলাই ইঞ্জিনীয়ার পদের নিয়োগ পরীক্ষার আগ মূহুর্তে রাজ্যের বেকারদের কাছে একটি সত্য প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। যা দেখে বেকার বিক্ষোভ ও অসন্তোষ চরম পর্যায়ে উঠেছে। এমনকী টিপিএসসির রাজ্য দপ্তরে প্রায় প্রত্যেকদিন বেকার বিক্ষোভ চলছে। কারণ এই জুনিয়র ইঞ্জিনীয়ার গ্রেড ভি (এ) এবং গ্রেড ভি (বি) নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও পিআরটিসির নিয়ম বাতিল করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের ইঞ্জিনীয়ার বেকাররা এনিয়ে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই তারা একপ্রস্থ বৈঠকও করে নিয়েছে পরবর্তী রণকৌশল নিয়ে জানা গেছে বেকার ইঞ্জিনীয়াররা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন। টিপিএসসি সূত্রে খবর এই সুযোগে বহিঃরাজ্যের হাজারো বেকার ইঞ্জিনীয়ার এই পদে আবেদন করেছেন। ফলে সহজেই অনুমেয় ১৭৬টি পদের অধিকাংশ চাকরি বহিঃরাজ্যে চলে যাচ্ছে। এদিকে রাজ্যের বেকার ইঞ্জিনীয়ারদের অভিযোগ রাজ্যে কলকারখানা নেই, নেই বেসরকারী চাকরি,নেই ব্যবসার সুযোগ।একমাত্র সরকারী চাকরিই রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের ইঞ্জিনীয়ার বেকাররা ব্যাঙ্কে, করণিক ও শিক্ষক শিক্ষিকা পদে চাকরি করতে বাধ্য হচ্ছে।অন্যদিকে রাজ্যের হাজারো বেকার ইঞ্জিনীয়ার রাজপথে। অনেকে বয়স উত্তীর্ণ বেকারে পরিণত হয়েছেন। তবে কেন রাজ্য সরকার বহিঃরাজ্যের বেকারদের রাজ্যে এনে সরকারী চাকরি দিতে ব্যস্ত। কারণ রাজ্য সরকারের তুঘলকি সিদ্ধান্তে চাকরি বঞ্চিতর পথে রাজ্যের বেকার ইঞ্জিনীয়াররা।বেকারদের দাবি অবিলম্বে এই ইঞ্জিনীয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে হবে।আবার নতুন করে পিআরটিসির নিয়ম বাধ্যতামূলক করে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হোক।যাতে বহিঃরাজ্যে একটিও সরকারী চাকরি না যায়। রাজ্যে সব সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে পুনরায় পারমানেন্ট রেসিডেন্ট সার্টিফিকেটের নিয়ম চালু করতে হবে। এখন দেখার রাজ্যের বেকারের স্বার্থে সিদ্ধান্ত হয়, নাকি বহিঃরাজ্যের বেকারের স্বার্থে সিলমোহর প্রদান করে রাজ্য সরকার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.