মাটির ১৩৭৫ ফুট গভীরে সুদৃশ্য হোটেল চলছে ব্রিটেনে।
এ যেন ‘ছিল বিড়াল, হয়ে গেল রুমাল’-এর বাস্তব রূপ। ছিল কয়লা খনি। মাটি থেকে তার গভীরতা ছিল ৪১৯ মিটার, অর্থাৎ ১৩৭৫ ফুট। সেই খনি আজ বদলে গেছে সুদৃশ্য হোটেলে।পর্যটকরা গোলাকার সিঁড়ি ধরে মাটির গভীরে নেমে হোটেলে প্রবেশ করছেন। রাত্রিযাপন করছেন। ডিমর্ট ডাফিন বলে এক পর্যটক ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তে বহু তারকা হোটেলে রাত্রিবাস করেছেন, কিন্তু এমন মনোরম অভিজ্ঞতা ইতিপূর্বে কখনও হয়নি। হোটেলের নামটিও বাহারের, ‘ডিপ স্লিপ’ (গভীর ঘুম)। ব্রিটেনের নর্থ ওয়েলসে এরাইরি ন্যাশনাল পার্কের স্নোডোনিয়া পর্বতের নীচে সেই ভিক্টোরিয়া আমলে তৈরি হয়েছিল এই খনি, যা এখন হোটেল। হোটেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন,খনিতে নেমে এমন বিলাসবহুল রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা বিশ্বে আর কোথাও নেই।এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে একটি পর্যটন সংস্থা।এই হোটেলে চারটি ডাবল রুমের ঝকঝকে ঘর রয়েছে। আর আছে একটি গুহা। সেই গুহাতেও দুজনের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। তবে আপনি ব্রিটেনে বেড়াতে যেতে চাইলেও এই হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। কারণ, সপ্তাহে মাত্র এক দিনই ডিপ স্লিপ’ হোটেলে রাত্রিবাস করা যাবে। শনিবার গিয়ে রাতে থেকে রবিবার সকালে আবার ফিরে আসতে হয়। এই হোটেলের এমনটাই নিয়ম। তবে এই হোটেলে পৌঁছনোর পথটি খুব মসৃণ নয়। খনি মূলত তিন ধরনের হয়। একটি ভূগর্ভস্থ খনি, যেখানে যন্ত্রচালিত ডুলিতে ওঠানামা করতে হয়।আর একটি আছে পুকুরের মতো খোলামুখ খনি, যেখানে গাড়ি নিয়েই ঘূর্ণায়মান পথ ধরে নিচে নেমে যাওয়া যায়। আর একটি হল মিশ্র খনি। যে খনি ভূগর্ভস্থ হলেও নিচে প্রবেশ করতে হয় মাটি বা পাথর কেটে তৈরি বৃত্তাকার সিঁড়ি ধরে। এই ধরনের একটি মিশ্র খনি রূপান্তরিত হয়েছে হোটেলে। তাই এখানেও সিঁড়ি ধরে ট্রেক করে হোটেলে প্রবেশ করতে হয়। প্রায় এক ঘণ্টার পথ। তবে আপনাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবেন এক জন গাইড। সিঁড়িও খুব সহজ নয়, আদতে পাথরের খাঁজ। খনিতে নামার আগে পর্যটকদের দেওয়া হবে বিশেষ বুট, হেলমেট, টর্চলাইট। দীর্ঘ খনিপথের শেষে পড়বে স্টিলের দরজা। সেই দরজা খুললেই যেন আলিবাবার রত্নগুহা! খরচ কত ? দুই জনের অভিযান এবং এক রাতে থাকা, খাওয়ার খরচ ৩৫০ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৬ হাজার টাকা।