নাগিছড়ায় আম প্রদর্শনীতে কৃষিমন্ত্রী,সুস্বাদু আম উৎপাদনে নজর কাড়ছে রাজ্য।

 নাগিছড়ায় আম প্রদর্শনীতে কৃষিমন্ত্রী,সুস্বাদু আম উৎপাদনে নজর কাড়ছে রাজ্য।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানই শুধু নয়, ত্রিপুরা রাজ্যেও এখন বাহারি দেশি বিদেশি সুস্বাদু আমের ফলন শুরু হয়েছে। রাজ্যের চাষিরা বিভিন্ন স্থানে এখন বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ শুরু করেছেন।ধলাই জেলার গণ্ডাছড়া মহকুমা এবং দক্ষিণ জেলা ইতিমধ্যেই নানা প্রজাতির সুস্বাদু আম উৎপাদনে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। বর্তমানে রাজ্যের দক্ষিণ জেলায় সবথেকে বেশি আম উৎপাদন হচ্ছে। চাষিরাও লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। বুধবার নাগিছড়ায় রাজ্য উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ম্যাংগো ডাইভারসিটি এগজিবিশন’-এর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। প্রদর্শনীতে রাজ্যে উৎপাদিত ৩৫ প্রজাতির সুস্বাদু আমের প্রদর্শন করা হয়।এ ছাড়াও গবেষণা কেন্দ্রে উৎপাদিত বিভিন্ন রকমের ফল যেমন ড্রাগন, করমচা, গোয়াভা, কাঠবাদাম, আনারস, কাঠাল, মুসাম্বির,আদা, কাঁচালঙ্কা সহ আরও একাধিক কৃষি উৎপাদিত সামগ্রী প্রদর্শন করা হয়। বর্তমানে নাগিছড়াতে ১৩টি ভারতীয় প্রজাতি এবং ২২টি বিদেশি প্রজাতির আম চাষ হচ্ছে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে।অম্বিকা, অরুণিক, আম্রপালি, হিমসাগর এগুলি দেশীয়- প্রজাতি। রয়েছে মিয়াজাকি, হাড়িভাঙা, ইয়েলো ব্যানানা, জাপানিস অলটাইম, থাই হিমসাগর ইত্যাদি বিদেশি প্রজাতির আম। রয়েছে দেশীয় আলফানসো, রত্নগিরি, কেসর আম, দশেরি আম, কিষান ভোগ, চোসা ইত্যাদি।এ দিন প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার মাটি আমের জন্য উৎকৃষ্ট। তাই বাণিজ্যিকভাবে আমের উৎপাদনে জোর দেওয়া হয়েছে। চাষিরা ইতিমধ্যে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। রাজ্যে আম চাষে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে বলে আশা ব্যক্ত করে আরও বলেন,আম গাছ কল্প বৃক্ষ নামে পরিচিত।আম ভারতের জাতীয় ফল।আমকে ফলের রাজাও বলা হয়। উন্নত বীজ ও আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চাষের কারণে এখন খুব তাড়াতাড়ি ফলন হয়। গাছ বেশি বড় হয় না। পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও উত্তম। বাড়ির ছাদে, টবের মধ্যেও আমের চারা লাগানো যায়। সাধারণ জনগণকেও আম গাছ লাগানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যায়। যেমন- আলফানসো, রত্নগিরি মহারাষ্ট্রে পাওয়া যায়। কেসর আম গুজরাটে। দশেরি আম লখনৌতে। হিমসাগর, কিষান ভোগ পশ্চিমবঙ্গে পাওয়া যায়। চোসা উত্তরপ্রদেশে। বাদামি কর্ণাটকে পাওয়া যায়। বিভিন্ন জাতের আমের স্বাদ ও গন্ধ আলাদা আলাদা।এর মধ্যে আলফানসো রূপে, স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি পাওয়া যায়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে দেশে আমের উৎপাদন হয়েছে আনুমানিক ২১ মিলিয়ন মেট্রিকটন। আমাদের দেশে উত্তরপ্রদেশে সর্বাধিক আমের উৎপাদন হয়, যা মোট উৎপাদনের প্রায় ২৩%। আমাদের ত্রিপুরাতেও বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করা হয়। যথা- আম্রপালি, হিমসাগর, অম্বিকা, অরুণিক ইত্যাদি।
ত্রিপুরাতে প্রায় ১০,৩৫৭ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়। যার গড় উৎপাদন ৫.০৯ মেট্রিকটন/হেক্টর। এই উদ্দেশ্যে উদ্যান ও গবেষণা কেন্দ্র, নাগিছড়ায় *আমের বৈচিত্র্য প্রদর্শনী” আয়োজন করা হয়েছে।এ দিন মন্ত্রী রতনলাল নাথ আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনার আওতায় ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ পরিবারকে ১৫ লক্ষ চারা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে (লেবু, পেঁপে, সুপারি, কলা এবং আম)। পাম অয়েলের জন্য সরকার ২০০০ হেক্টর জমিতে চাষের টার্গেট নিয়েছে। এ বছর ১৩০০ হেক্টরে আলাদা করে আম, কাঁঠাল, কমলা, আনারস এবং কলার জন্য টার্গেট নেওয়া হয়েছে। নারকেলের জন্য জমির বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে ২৯৫ হেক্টর। পাশাপাশি আমাদের চিরাচরিত ফলের চাষও বৃদ্ধি করা হবে। যেমন জাম, লিচু, পেয়ারা, কুল— এগুলোর চারা আমরা বিতরণ করব। আরবান হর্টিকালচার স্কিমে দপ্তরের তরফে ২ লক্ষ ১৫ হাজার চারা বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এটা একটা নতুন স্কিম।এর মাধ্যমে নারকেল, আম, হাইব্রিড সবজির চারা এবং ফুলের চারা বিতরণ করা হবে। এ দিন নাগিছড়ায় ‘ম্যাংগো ডাইভারসিটি এগজিবিশনে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, সাংবাদিক শেখর দত্ত, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সঞ্জীব দেব এবং শিল্পোদ্যোগী রতন দেবনাথ।মন্ত্রী এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে নাগিছড়া কৃষি উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.