ভারী বর্ষণে ফের বিপজ্জনক সোনাপুর, প্রায় অবরুদ্ধ সড়ক।

 ভারী বর্ষণে ফের বিপজ্জনক সোনাপুর, প্রায় অবরুদ্ধ সড়ক।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-মাঝখানে একদিন মোটামুটি ঠিক থাকার পর আবারও বিপর্যস্ত সোনাপুর। বিপজ্জনক অবস্থায় এসে ঠেকেছে ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক। বন্ধ হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচল।অঝোর ধারায় বৰ্ষণ চলছে।পাহাড় বেয়ে নামছে ধস। জাতীয় সড়ক চলে গেছে ধসের তলায়।পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সড়কপথে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ত্রিপুরা।একই অবস্থা আসামের দক্ষিণাংশ, মিজোরাম এবং মণিপুরের একাংশের।কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক সড়ক হবে বলা শক্ত।ধস সরিয়ে জাতীয় সড়ক যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করার কাজ চলছে। প্রবল বর্ষণ ও ধসের জেরে এই কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। খুব বেশি যন্ত্রপাতি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। মাত্র দুটি ডজার দিয়ে মাটি সরানোর চেষ্টা চলছে।শনিবার বিকাল চারটা পর্যন্ত অবস্থার অবনতি চলছে।
এমতাবস্থায় মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলা পুলিশের তরফে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। যানবাহনের চালকদের ঝুঁকি না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে সম্ভাব্য বিকল্প সড়ক ধরে যানবাহন চালানোর জন্য। জেলা পুলিশের তরফে লেখা এক চিঠিতে একথা জানানো হয়েছে মেঘালয়ের পূর্ত প্রশাসনকেও৷আর এখানেই বেধেছে বিপত্তি। ত্রিপুরা সহ মিজোরাম এবং আসামের বরাক উপত্যকার তিন জেলা সহ মণিপুরের একাংশের সঙ্গে দেশের ভূখণ্ডে সংযোগ রক্ষার জন্য সড়কপথে কোনও বিকল্প নেই। ফলে অনিবার্য বিপদ অপেক্ষা করছে এসব এলাকার জন্য। দাঁড়িয়ে রয়েছে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন সহ যাত্রীবাহী বাস এবং নানা ধরনের ছোট গাড়ি।মূল সংকটস্থল সোনাপুর। এখানেই রয়েছে অত্যন্ত খরস্রোতা লোভা নদী।এই নদীর উপর থাকা সেতুর অস্তিত্ব বিপন্ন হয় প্রতি বর্ষাতেই।এবারও হাল ভালো নয় মোটেও। লোভা নদীর পাশে জয়ন্তিয়া পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এগিয়ে চলেছে সড়ক। ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক মেঘালয়ের রাতাছড়া এবং আসামের মালিডহর হয়ে বদরপুর পর্যন্ত রয়েছে। রাতাছড়া ও মালিডহরের কাছে অপর খরস্রোতা পাহাড়ি নদী বলেশ্বর দুই রাজ্যের মধ্যে প্রাকৃতিক সীমারেখা তৈরি হয়েছে। আপাতত,রাতাছড়া মালিডহর সংলগ্ন অংশ সহ বলেশ্বর নদী সংলগ্ন অংশে তেমন বিপদ নেই। বিপদ সোনাপুরের কৃত্রিম সুড়ঙ্গের মুখ থেকে শুরু করে দুর্গা মন্দির এলাকা পর্যন্ত।
বর্ষা শুরু হতেই জয়ন্তিয়া পাহাড় জুড়ে ধস নামা শুরু হয়েছে। বালি, সিমেন্ট, কংক্রিটের মিশ্রণের মতো করে উঁচু পাহাড় বেয়ে নামা ধসের কবলে পড়ছে সড়ক। বন্ধ হয়ে পড়ছে কৃত্রিম সুড়ঙ্গের মুখ।শুক্রবার শেষ রাত থেকে মাঝখানে একদিন বিরতির পর প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে শুরু হয়ে পাহাড় বেয়ে জল মাটির মিশ্রণ নামা। এই অবস্থা চলেছে টানা শনিবার বেলা দুটো পর্যন্ত। তারপর বর্ষণের প্রাবল্য কমেছে। তবে শেষ হয়নি। ধস সরানোর কাজ ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না। অবস্থার উন্নতি হয়নি শনিবার রাত পর্যন্ত।এ অবস্থায় আসামের কাছাড় জেলার তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প অধিকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলার উপ-কমিশনার এ চিঠি দিয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জাতীয় সড়ক পুনরুদ্ধার করার কথা বলেছেন।পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করেছেন জগপাল সিং ধানুয়া । তিনি মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলার পুলিশ সুপার। তার সঙ্গে দৈনিক সংবাদের তরফে কথা হয়েছে প্রতিবেদকের।তিনি প্রতিবেদককে জানান,পরিস্থিতি অন্ধকারাচ্ছন্ন।কারণ বর্ষণ থামার নাম নেই।সেই সঙ্গে পাহাড় বেয়ে ধস নামারও বিরাম নেই।তার বক্তব্য, এক দিকে ধসের কাদা মাটি সরাতে না সরাতে অপর দিকে নামছে।বয়ে চলছে ধসের বন্যা।বাড়ছে দুশ্চিস্তা। কাজ চলছে এর মধ্যেও জানান ধানুয়া ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.