মুখ্যমন্ত্রীকে কালি ছেটাতে রক্ত দানের নামে লাখোয়ারী তোলাবাজি।

 মুখ্যমন্ত্রীকে কালি ছেটাতে রক্ত দানের নামে লাখোয়ারী তোলাবাজি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || আগে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা রাজ্যের সব ক্লাব, সংস্থা, রাজনৈতিক দল সহ সাধারণ মানুষের কাছে রক্ত সংকট দূর করতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে আহ্বান করেন। তিনি এই রক্তদানকে উৎসবের রূপ দেবার আহ্বানও জানান৷মুখ্যমন্ত্রীর এই মহতি উদ্যোগে রাজ্যবাসী যখন খুশি হলেন, ঠিক তখনই শাসক দলের একাংশ নেতা- নেত্রী এবং শাসক দলের অনুগত কর্মচারী সংগঠনের কিছু অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ নেতৃত্ব বাম আমলের চাঁদা সংস্কৃতিকে পুনরায় আমদানি করতে ময়দানে নেমেছে। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সজ্জন ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতেই শাসক শিবিরের একাংশ গদ্দার ও গণবর্জিত নেতৃত্বের প্রকাশ্য ইন্ধনে শুরু হয়েছে চাঁদাবাজির অপসংস্কৃতি।এমনই একটি উদ্যোগকে কেন্দ্র করে উদয়পুর মহকুমাতে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। টিআরকেএসের নামে আয়োজিত এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছে শাসকদলের কয়েকজন নেতার কাছের বলে পরিচিত দুর্নীতিবাজ ও সুযোগ সন্ধানী নেতৃত্ব। এদের মধ্যে এমনও অনেকে আছেন যাদের কুকর্মের জন্যই গত বিধানসভা নির্বাচনে উদয়পুর মহকুমাতে সরকারী কর্মচারীদের বিশাল সংখ্যক ভোট হারাতে হয়েছে বিজেপি দলকে।উল্লেখ্য, টিআরকেএস আয়োজিত এই তথাকথিত রক্তদান শিবিরের নামে মহকুমার প্রতিটি স্কুল, অফিস আদালতে কর্মচারীদের ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে চাঁদার রসিদ। যে সংখ্যায় একশ এবং দু’শ টাকার ছাপানো রসিদ বিলি করা হচ্ছে (ঘোষিতভাবে) তাতে কম করেও পাঁচ লক্ষাধিক টাকা আদায় হবে।একদিনের রক্তদান শিবির আয়োজনের জন্য আদৌ পাঁচ লাখ টাকার কতটুকু প্রয়োজন আছে সেটা নিয়ে প্রকাশ্যেই আলোচনা করছেন কর্মচারী থেকে সাধারণ মানুষ সবাই।এই চাঁদাবাজিতে টিআরকেএসের গণবর্জিত ও ধান্দাবাজ নেতা তপন মজুমদারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে তপন মজুমদার প্রকাশ্যেই বিজেপির দলের বিরুদ্ধে ভোট দেবার জন্য বহু সরকারী কর্মচারীদের প্ররোচনা দিয়েছিলো বলে অভিযোগ। এহেন তপন মজুমদারের সব অপকর্মেই নাকি যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছে বলে দিগ্‌বিজয় ভাওয়াল সহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।সাধারণ কর্মচারীদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে দাবিমতো চাঁদা দিতে। আরএসএস অনুগত একটি কর্মচারী সংগঠন এভাবে চাঁদা তুলছে জেনেও আরএসএসের প্রদেশ ও জেলাস্তরের নেতৃত্বের অপ্রত্যাশিত নীরবতা অবাক করছে কর্মচারী মহলকে। গত ১০ মে ঘটা করে বৈঠকের আয়োজন করে টিআরকেএস এই চাঁদাবাজির সীলমোহর দিয়েছে। এই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তকে লিফলেট আকারে বিলিও করা হয়েছে। গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে স্পষ্টভাবেই লেখা আছে সকল স্তরের নিয়মিত কর্মচারীদের কাছ থেকে ২০০/- (দুইশত) টাকা এবং সকল স্তরের অনিয়মিত ও সকল গ্রুপ- ডি কর্মচারী কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ১০০/- (একশত) টাকা স্বেচ্ছা অনুদান হিসাবে গণ্য করা হবে।অর্থাৎ টিআরকেএস ঘোষিতভাবেই প্রায় পাঁচ লাখ টাকা অর্থ তোলার সীলমোহর দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে স্থানীয় মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় এবং বিধায়ক তথা বিজেপির জেলা কমিটির সভাপতি অভিষেক দেবরায় রক্তদান শিবিরের আয়োজনের নামে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায়ের সম্মতি দেননি।কিন্তু টিআরকেএস যেহেতু আরএসএসের সংগঠন, তাই তারা বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতেও পারছেন না।এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে তৎপর হয়েছে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মচারী নেতা৷অভিযোগ এমনও উঠেছে যে ছাপানো রসিদে পাঁচ লাখ টাকা দেখানো হলেও বাস্তবে পনেরো লাখ টাকা তোলার ফন্দি এঁটেছে এই কুচক্রি গোষ্ঠী।এমন অর্থ আদায়ের বিষয়টি জানা সত্যেও আরএসের জেলা ও রাজ্যস্তরের পদাধিকারীদের হীরন্ময় নীরবতা সাধারণ মানুষ সহ কর্মচারীদের মনে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এই রক্তদানের নাম করে রসিদে ছাপানো মূল্যের অনেক বেশি পরিমাণে চাঁদা আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।এই অবস্থায় সর্বস্তরের কর্মচারীদের মধ্যে একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে রক্তদানের নামে এই চাঁদা সংস্কৃতি আখেরে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাকে কালিমালিপ্ত করারই ষড়যন্ত্র নয়তো! গোটা বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে রহস্যের সৃষ্টি করেছে রক্তদান আয়োজনের জন্য টিআরকেএসের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রক্তদান আয়োজনের তারিখ নিয়ে ধোঁয়াশা। কারণ উদ্যোক্তারা তাদের সিদ্ধান্ত যে তারিখের কথা বলেছিল, সেই নির্ধারিত দিন তারিখ এরই মধ্যে পেড়িয়ে গেছে। কবে আবার রক্তদান অনুষ্ঠিত হবে তার নতুন করে দিন তারিখও উল্লেখ নেই। অথচ চুটিয়ে এখনো চলছে তোলাবাজি ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.