বিপজ্জনক জাতীয় সড়ক।

 বিপজ্জনক জাতীয় সড়ক।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ফের বিপজ্জনক জাতীয় সড়ক। মেঘালয়ের সোনাপুরে জাতীয় সড়কে ধসে দেশের অবশিষ্ট অংশের সাথে সড়কপথে ত্রিপুরার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। উদ্বেগে কাটাচ্ছে আসামের একটা অংশ, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা।প্রতি বছর বর্ষা এলেই পালা করে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।রাস্তায় ধস পড়ে জাতীয় সড়ক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রতি বছরই একই অবস্থা। কিন্তু হেলদোল নেই—না রাজ্য সরকারের,না কেন্দ্রীয় সরকারের।ফলে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের হয়। জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। পণ্যসামগ্রীর আকাল দেখা দেয়। বেশি দাম দিয়ে জিনিসপত্র কিনতে হয় মানুষকে।বছরের পর বছর একই চিত্র।মেঘালয়ের সোনাপুরে এই অবস্থা আজকের নয়। আগে ছিল এটি ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এর নাম ছিল আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক। আসাম হয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করে এই সড়ক। বর্তমানে এটি ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক হিসাবে চিহ্নিত। শুধু ত্রিপুরা নয়, মেঘালয় হয়ে আসামের একটা অংশে যেতে এই সড়ক ব্যবহৃত হয়। তেমনি শিলচর দিয়ে মণিপুরে প্রবেশের জন্যও এই সড়ক। ফলে মণিপুরেরও এটি প্রবেশদ্বার। তেমনি ত্রিপুরাতেও প্রবেশের এটিই পথ অর্থাৎ সড়ক। তাহলেই বোঝা যাচ্ছে কীরকম গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষায় সোনাপুর সংবাদ শিরোনামে আসে। কেননা এই অঞ্চলে ধস পড়ে। গোটা পাহাড়ই রাস্তায় নেমে আসে। ফলে সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের যেমন চলাচলে অসুবিধা হয়, পণ্য পরিবহণে মারাত্মক অসুবিধা হয়। ফলে আসামের একটা অংশ, মিজোরাম, মণিপুরের একটা অংশ এবং ত্রিপুরায় এর প্রভাব পড়ে সরাসরি। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেই। একটা টানেল তৈরি হয়েছিলো বহু বছর আগে।এই পর্যন্ত যা। আর কোনও উদ্যোগ নেই।গত কয়েকদিন ধরে সোনাপুরে যে চিত্র ধরা পড়েছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের। বর্তমানে ত্রিপুরায় বিজেপিশাসিত সরকার, আসামে বিজেপিশাসিত সরকার, মেঘালয়ে বিজেপি সরকারের শরিক। তদুপরি কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপি পরিচালিত। ফলস্বরূপ মেঘালয়ের এই সমস্যা সমাধানে কোনও অসুবিধা হবার কথা ছিল না। কিন্তু প্রতি বছরই একই চিত্র। ফলে মানুষের দুর্ভোগ লেগেই রয়েছে।গত বছর পাহাড় লাইনে রেলপথেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। নিউ হাফলংয়ে গোটা পাহাড়ই চলে এসেছিল স্টেসনে। রেল লাইন,স্টেশন এমনকী রেলগাড়ি পর্যন্ত ধসের কবলে পড়েছিল। মনে হয়েছিল রেলপথে ফের পরিষেবা চালু হতে অন্তত ছয় মাস লাগবে। কিন্তু অতি তৎপরতার সাথে রেল মাত্র দুই মাসের মধ্যে তা চলাচলের উপযোগী করে তোলে। একটা সময় ছিল রেলপথ বর্ষার সময় বিচ্ছিন্ন থাকতো, সড়কপথ বিচ্ছিন্ন থাকতো। ফলে ত্রিপুরা বর্ষাকালে প্রায়শই অবশিষ্ট ভারতের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মেঘালয়ের সোনাপুরের এই বেহাল দশা বিশেষ করে বর্ষায় তা কোনও মতেই কাটছে না।এখানে মেঘালয় সরকারের একটি উদাসীনতা কাজ করছে। মেঘালয়ের সরকার সোনাপুরে জাতীয় সড়কে এই অচলাবস্থা কাটাতে অনেকটাই গড়িমসি করছে। মেঘালয় সরকার মনে করছে সোনাপুরের দিকে জাতীয় সড়কে কাজ করলে তাদের তেমন কোনও স্বার্থ নেই।এটা তাদের লেজের অংশ মাত্র। স্বার্থ রয়েছে আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরার। কিন্তু সংশি- লষ্ট রাজ্য সরকারের তরফে এনিয়ে কোনও হেলদোল নেই। কেন্দ্ৰীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির কোনও প্রচেষ্টা নেই, উদ্যোগ নেই। ফলস্বরূপ প্রতি বছর বর্ষায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ে।ত্রিপুরা সরকার এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও টু শব্দটি করেছে বলে কেউ জানতে পারেনি। মেঘালয়ে সোনাপুরে জাতীয় সড়কে ধসের ফলে ত্রিপুরা যে সড়কপথে প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এ নিয়ে ত্রিপুরা সরকারের এখন পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ নেই। কোনও চিঠি চালাচালি নেই। খাদ্য দপ্তর, পরিবহণ দপ্তর কোনও ধরনের রিভিউ মিটিং করেছে বলে কারোর জানা নেই। রাজ্যে চাল, ডাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, পেট্রোল, ডিজেলের কী অবস্থা, রেল সড়ক বন্ধ হলে এর বিকল্প কী এ নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা রয়েছে কিনা সরকারের এ নিয়ে সাধারণ মানুষ কিছু জানে না। মেঘালয়ে সোনাপুরে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যাবার ফলে রাজ্য সরকারের তরফে মেঘালয় সরকারের সাথে অবিলম্বে যোগাযোগ সহ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য উভয় সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে নেওয়া আশু জরুরি বলে মনে করছেন এ রাজ্যের সচেতন নাগরিক মহল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.