স্ট্রোক থেকে বাঁচাবে নাকের ড্রপ, যুগান্তকারী অনুসন্ধান।
ব্রেন স্ট্রোক, চালু কথায় স্ট্রোক। মধ্য বয়সের পর যে কোনও মানুষ, বিশেষত উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন হলেই ব্রেন স্ট্রোক হয়। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়লে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলেই অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন তখন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন যে শারীরিক অবস্থা তৈরি হয় তাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক হলে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে যাওয়ারই পরামর্শ দেন ডাক্তারবাবুরা। স্ট্রোকের রোগীকে কীভাবে বাঁচানো যায়, কত তাড়াতাড়ি মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত তরল করা যায়, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। আগে আপৎকালীন চিকিৎসা বলতে মুখে কোরামিন ড্রপ দেওয়া হতো। এখন ইঞ্জেকশনও তৈরি হয়েছে। এবার বাজারে আসতে চলেছে ন্যাজাল স্প্রে বা নাকের ড্রপ।গোথেনবার্গ ইউনিভার্সিটি ও চেক অ্যাকাডেমি সায়েন্সের গবেষকরা ব্রেন স্ট্রোকের রোগীকে বাঁচাতে নাকের ড্রপ তৈরি করেছেন।ইঁদুরের উপর গবেষণায় এটি “অসাধারণ” কাজ করেছে। বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ‘জার্নাল অফ ক্লিনিকাল ইনভেস্টিগেশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই অনুসন্ধানকে ‘যুগান্তকারী আবিষ্কার’ বলছে। এতদিন স্ট্রোকের চিকিৎসায় ওষুধ, অপারেশনই একমাত্র রাস্তা। এখন ইঞ্জেকশন আসতে চলেছে বাজারে। তবে এতদিন অবধি সবচেয়ে সহজলভ্য ও সুবিধাজনক কোনও পদ্ধতি জানা ছিল না যা চটজলদি স্ট্রোকের রোগীর প্রাণ বাঁচাতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাকের ড্রপ কার্যকরী হলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচবে।হাসপাতালে যেতে দেরি হলেও চিকিৎসাটুকু শুরু করা যাবে বাড়িতেই।স্ট্রোক হওয়ার পরবর্তী চার ঘণ্টা সময়েই সবচেয়ে দামি। এই সময়টাকে ডাক্তারবাবুরা বলেন ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এই সময়তে সঠিক পদক্ষেপ করতে পারলে তবেই রোগীর প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। এই সময়টাতে কী ধরনের চিকিৎসা দ্রুত করা যায়, সে নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নানা গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষক দলের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী নিউরো ইমিউনোলজস্ট মার্শেলা পেকনা বলছেন, তাদের আবিষ্কৃত ন্যাজাল স্প্রে-তে এমন উপাদান আছে যা দ্রুত ব্রেনে জমাট বাঁধা রক্ত তরল করতে পারে। ড.পেকনা জানিয়েছেন, তাদের তৈরি নাকের ড্রপে পেপটাইড সিওএ আছে যা রক্ত জমাট বা ব্লাড ক্লট ঠেকাতে পারে।স্ট্রোকে আক্রান্ত ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে এই উপাদানের কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।