গিনেস বুকে মোদি।
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবসে আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে ইতিহাস রচনা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। নবম আন্তর্জাতিক যোগা দিবসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এ বছর নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদির যোগদান ঘিরে ছিল সকলের নজর।হাই ভোল্টেজ এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের হেড কোয়ার্টারে।সেই অনুষ্ঠানে সকলের সাথে মিলে যোগায় অংশ নিয়েছেন মোদি। আর এখানেই তৈরি হয়েছে রেকর্ড। কেন না,বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নাগরিক একই যোগ সেশনে অংশ নিয়েছিলো। তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ১৮০টি দেশের নাগরিকরা এই মেগা ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন এবং যোগাভ্যাস করেছেন।এটা শুধু আন্তর্জাতিক রেকর্ডই নয়, ভারতের পরম্পরাগত ঐতিহ্যশালী সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ফের একবার গোটা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হলো। বিষয়টি মোটেও হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। বরং একশ চল্লিশ কোটি ভারতবাসীর কাছে এটি অত্যন্ত গৌরবের।গোটা পৃথিবীতে বহু আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন হয় প্রতি বছর। কিন্তু মাত্র নয় বছরের মধ্যে রাষ্ট্রসংঘের ঘোষিত কোনও আন্তর্জাতিক দিবস ঘিরে ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ তৈরি হওয়া সম্ভবত -এই প্রথম। শুধু তাই নয়, একসাথে বিশ্বের এতগুলো দেশ (১৮০টি) একটি ইভেন্টে যোগ দিয়েছে এর আগে, এমন কোনও তথ্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে এটি অত্যন্ত সম্মানের,গর্বের।এই নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। মূলত ভারতের দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাষ্ট্রসংঘ ২১ জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসাবে ঘোষণা দেন। ২০১৫ সালের ২১ জুন সারা বিশ্বে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দিনটি পালন হচ্ছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ও লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই যোগা বিশ্বের জনপ্রিয়তা লাভ করে নেয়। নিউইয়র্কে আয়োজিত আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি যোগাভ্যাসের উপকারিতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেছেন, ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগাভ্যাস ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ভারত থেকে এসেছে যোগাভ্যাস। আমাদের দেশের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হলো এই যোগাভ্যাস।এর কোনও কপিরাইট নেই।নেই কোনও পেটেন্টও।কোনও রয়্যালিটির বালাই নেই। যে কোনও বয়সের ব্যক্তি, যে কোনও সময়ই শরীর মন সুস্থ ও সবল রাখতে যোগাভ্যাস চর্চা শুরু করতে পারেন। এর জন্য বিশেষ কোনও স্থান-কাল-পাত্র বা সময়ের প্রয়োজন নেই।শরীর ও মনকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে যোগাভ্যাসের কোনও বিকল্প নেই।এই কারণেই যোগাভ্যাস বিশ্বজনীন এবং এর উপকারিতাও অপরিসীম।কিন্তু সব ছাপিয়ে মোদির আন্তর্জাতিক কূটনীতিই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। এবছর জি-২০ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে ভারত। জি-২০ সম্মেলনেরও মূল থিম হচ্ছে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’। অর্থাৎ ‘এক পৃথিবী- এক পরিবার – এক ভবিষ্যৎ’। বিশ্ব যোগ দিবসেও এ বছরের থিম ‘যোগা ফর বসুধৈব কুটুম্বকম’। অর্থাৎ যোগব্যায়ামে সারা বিশ্ব এক পরিবার। গোটা বিশ্বের সামনে ভারতকে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী মোদি যেভাবে একের পর এক বার্তা দিচ্ছেন, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।