স্বচ্ছতার সঙ্গে আপস করবে না সরকার, দিশার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী।

 স্বচ্ছতার সঙ্গে আপস করবে না সরকার, দিশার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || জনজাতি এলাকার উন্নয়ন বর্তমান রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের অন্যতম ক্ষেত্র। এই লক্ষ্য পূরণে সরকার শুরু থেকেই সচেষ্ট। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে বর্ধিত উদ্যমে কাজ চলছে। দপ্তর কর্তাদের এইসব কাজ নিয়মিত তদারকির নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার চলতি অর্থ বছরের প্রথম রাজ্যস্তরের দিশা কমিটির বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা । এদিনের বৈঠকে রূপায়িত সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির কাজ গুণমান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশিকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্প রূপায়ণকারী দপ্তরগুলিকে এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতেও বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে বর্তমান সরকার আপস করবে না। স্বচ্ছতার সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করে রাজ্যকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর বর্তমান সরকার। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের দিশা কমিটির সভা সচিবালয়ের দুই নং সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিধায়ক দীপঙ্কর সেন, বিধায়ক স্বপ্না মজুমদার, বিধায়ক মাইলাফ্রু মগ, মুখ্যসচিব জে কে সিন্হা উপস্থিত থেকে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। সভায় রাজ্যে রূপায়িত কেন্দ্রীয় সহায়ক প্রকল্পগুলির বর্তমান অবস্থা, অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও নতুন উদ্যোগ সমুহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সংশি- লষ্ট দপ্তরের প্রধান সচিব ও সচিবগণ রাজ্যে চলমান কেন্দ্রীয় সহায়ক প্রকল্প সমূহের বিস্তারিত তথ্য মেলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণে সচেষ্ট রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য পূরণে দপ্তর কর্তাদের সচেষ্ট হতে হবে। রাজ্যে রূপায়িত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি দপ্তরের আধিকারিকদের সরোজমিনে পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও মতামত জানানোর উপর গুরুত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রকল্পসমূহ রূপায়ণে কোনও ধরনের সমস্যা হলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতি একশ দিন অন্তর সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান জনসমক্ষে তুলে ধরার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক রাজ্যে রূপায়িত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির কাজ সময়সীমার মধ্যে শেষ করার গুরুত্ব দেন। এমজিএন রেগা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের চলতি মাসের কুড়ি তারিখ পর্যন্ত রাজ্যে এমজিএন রেগায় ৭৫.৩৯ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) রাজ্যে দুই লক্ষ বারো হাজার নিরানব্বইটি ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক চলতি বছরের ২১ মে অতিরিক্ত আরও ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৯৫টি ঘর রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে চলতি মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত ১ লক্ষ ১২ হাজার ৮০০টি ঘর মঞ্জুর করা হয়েছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি করবান মিশনে রাজ্যের সাতটি করবান ক্লাস্টারে মোট চারশটি কাজের মধ্যে ২৩০টির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকিগুলির কাজ চলছে। সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনার অন্তর্গত রাজ্যের চিহ্নিত তেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটিতে ৭৪২টি কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩১১টি কাজ শেষ হয়েছে। দীনদয়াল অন্ত্যোদয়, যোজনা জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে গিয়ে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব জানান, রাজ্যে বর্তমানে ৪৮,৩৯৪টি স্বসহায়ক গোষ্ঠীতে মোট ৪,৪৪,৮৪১ গ্রামীণ মহিলা সদস্য রয়েছেন। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় ৪ হাজার ১৭০ জন প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্তি পেয়েছেন। স্বচ্ছ ভারত মিশন আরবান নিয়ে আলোচনায় নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং বলেন, রাজ্যের কুড়িটি নগর সংস্থাকে ওডিএফ -এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই কুড়িটি নগর সংস্থার মধ্যে সাতটিকে ওডিএফ লাসেরও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, রাজ্যে ৮৫টি সেকেণ্ডারি বর্জ্য পৃথকীকরণ কেন্দ্র ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি আমরুত ২.০, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-১, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা -২, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-৩ রূপায়ণে রাজ্যের বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন। সভায় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় কৃষকদের কল্যাণে রাজ্যে রূপায়িত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। সভায় শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী কেন্দ্রীয় প্রকল্প পিএম পোষণ (স্কুল মিড ডে মিল এবং সমগ্র শিক্ষা প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপুর্ব রায় কৃষকদের কল্যাণে রাজ্যে রূপায়িত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির বিস্যপিএমইজিপি, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্প সমূহ, বিদ্যুৎ দপ্তরের অন্তর্গত কেন্দ্ৰীয় প্রকল্প পি এম পোষণ (স্কুল মিড ডে মিল এবং সমগ্র শিক্ষা প্রকল্প সমুহ,বিদ্যুৎ দপ্তরের অন্তর্গত কেন্দ্রীয় প্রকল্প জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন, ভূমি ও রাজস্ব এবং তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধান সচিব ও সচিবগণ আলোচনা করেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.