প্রাইভেট টিউশন নিয়ে কঠোর বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।

 প্রাইভেট টিউশন নিয়ে কঠোর বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || প্রাইভেট টিউশন নিয়ে শুক্রবার কঠোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ছাত্র- ছাত্রীদের উপর প্রাইভেট টিউশন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে মানসিকভাবে চাপ পড়ছে ছাত্রদের উপর। যা কোনও অবস্থাতেই কাম্য নয়। এ নিয়ে অভিভাবক সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা। এ দিন মহারাণী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের জন্য বিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ নানা ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।তাহলে ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট টিউশনের প্রতি কেন আগ্রহ তৈরি হবে। সরকারী স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার লক্ষ্যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন। সরকারী শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার লক্ষ্যে রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি অভিভাবকদেরও বিদ্যালয়ের পড়াশোনার প্রতি আস্থা রাখার জন্য আহ্বান জানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার সরকারী বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। আগামীদিনে শিক্ষাক্ষেত্রেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ৷এ দিন তুলসীবতী স্কুলে নার্সারি ক্লাস, অটল টিঙ্কারিং ল্যাবরেটরি রুম এবং আয়রন মুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পর্যদের পরীক্ষায় স্কুলের কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বর্তমান রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে শুধু শহর এলাকার স্কুলই নয়, জেলা, মহকুমা এবং দুর্গম এলাকার স্কুলগুলিতেও পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন নয়া ব্যবস্থা যুক্ত হলো রাজধানীর মহারাণী তুলসীবতী গার্লস স্কুলে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে প্রাইভেট টিউশন নিয়ে নিজের কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাক প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নে লাগাতর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদান করা রাজ্য সরকারের অন্যতম একটি লক্ষ্য। কিন্তু এখনও বিভিন্ন জায়গায় সরকারী স্কুলের একাংশ শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছেন। যা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। অথচ সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তবে এরপরও প্রাইভেট টিউশন চলছে। দেখা যাচ্ছে, শিক্ষকরা বিভিন্ন জায়গায় বাড়ির মধ্যে সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছেলে মেয়েদের টিউশন দিচ্ছেন। আর অভিভাবকরা বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। এমন পরিবেশে প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার ফলে ছেলে-মেয়েদের উপর নানা ভাবে চাপ বাড়ছে। মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ছে। তাই ছেলেমেয়েদের উপরে বাড়তি চাপ কমাতে প্রাইভেট টিউশন বন্ধে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিভাবকদেরও চিন্তা ভাবনা করার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন নয়া শিক্ষানীতি নিয়েও আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তিনি বলেন, বাস্তবের সঙ্গে মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী দিনে ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ যাতে হয় সেই দিশা নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়িত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নেশাদ্রব্য ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিভিন্ন বয়সি ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও নেশার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই সবাইকে আরও সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। রাজ্য সরকার নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এ দিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের কর্পোরেটর রত্না দত্ত, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৗধুরী, অধিকর্তা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধান শিক্ষক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.