খবরের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর দাবড়ানি,প্রাণী সম্পদে অবশেষে বেতন পেলো এমভিইউ প্রকল্পের কর্মীরা।
অনলাইন প্রতিনিধি || খবরের জেরে এবং মুখ্যমন্ত্রী অফিসের দাবড়ানি খেয়ে অবশেষে টনক নড়লো রাজ্য প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের পুনর্বাসনপ্রাপ্ত অকর্মণ্য প্রধান সচিবের। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অ্যাম্বুলেটরি মোবাইল ভেটেরিনারি ইউনিট’ (এএমভিইউ) প্রকল্পে নিযুক্ত সাতান্নজন কর্মচারী অবশেষে শুক্রবার সাড়ে চার মাসের বেতন একসাথে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলেন। শুধুমাত্র একটি স্বাক্ষরের জন্য গত তিন সপ্তাহ ধরে ওই কর্মীদের বেতনের ফাইল দপ্তরের প্রধান সচিব বিএস মিশ্রের টেবিলে পড়েছিলো । গত একুশ জুন এ বিষয়ে দৈনিক সংবাদে ‘প্রাণী সম্পদে ছয় মাসেই মুখ থুবড়ে পড়লো এমভিইউ প্রকল্প’ শীর্ষক তথ্যমূলক সংবাদ পরিবেশিত হয়।প্রকাশিত সংবাদ মুখ্যমন্ত্রীর নজরেও যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাথে সাথে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে খোঁজখবর নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের দাবড়ানি খেয়ে শেষে হুঁশ ফেরে প্রধান সচিবের। তারপরও নানা অজুহাত তুলে অকারণে পরদিন বাইশ জুন দিনভর টালবাহানা করে সন্ধ্যায় ফাইলে স্বাক্ষর করেন প্রধান সচিব। এরপর রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত প্রকল্পের সাথে যুক্ত আধিকারিকরা কর্মীদের বেতনের যাবতীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে আজ শুক্রবার সকালে ব্যাঙ্কে পাঠান। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কালবিলম্ব না করে আজকেই বিকালে সাতান্নজন কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা রিলিজ করে দিয়েছে। দপ্তর সূত্রে খবর, পত্রিকায় খবর প্রকাশিত না হলে এই মাসেও তারা বেতন পেতেন না। বর্তমান রাজ্য সরকার যেখানে প্রশাসনে স্বচ্ছতা এবং কর্মসংস্কৃতি নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক ও আন্তরিক, সেখানে একটিমাত্র স্বাক্ষরের জন্য প্রধান সচিবের টেবিলে তিন সপ্তাহ পড়ে থাকে ফাইল! তাও দাবড়ানি খাওয়ার পর ফাইল রিলিজ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিএস মিশ্রদের মতো এমন কিছু অকর্মণ্য আমলার কারণেই সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয়। জনকল্যাণে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তগুলি সমাজের অস্তিম ব্যক্তি পৌঁছে দিতে অযথা বিলম্ব হয়। যে কাজ এক ঘন্টার মধ্যে হয়ে যাওয়ার কথা, সেই কাজ অকারণেই দিনের পর দিন আটকে থাকে আমলাদের টেবিলে। তাদের ইচ্ছা ও মর্জির উপর নির্ভর করে থাকতে হয় সাধারণ জনগণকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মচারীরা গত পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। অথচ দপ্তরের প্রধান সচিবের কোনও হেলদোল নেই। দপ্তরের অন্য আধিকারিকরা দিল্লী দৌড়ঝাপ করে শেষমেষ অর্থের ব্যবস্থা করলেও, সেই ফাইল আটকে রেখে দিয়েছেন প্রধান সচিব। যা দেখে বিস্মিত দপ্তরের অন্য কর্মচারীরাও। অবাক করার বিষয় হলো, কী কারণে প্রধান সচিব তিন সপ্তাহ ফাইলে স্বাক্ষর না করে ফাইল আটকে রাখলেন? এর কোনও যুক্তিগ্রাহ্য জবাব খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতি বিকাশে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সরকারও এক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব দিতে চাইছে। কিন্তু বিএস মিশ্রের মতো আমলাদের কারণে সরকারের সেই উদ্দেশ্য মার খাচ্ছে বলে দপ্তরের অন্দর থেকেই অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে পুনর্বাসনপ্রাপ্ত এই আমলাকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি উঠেছে।