আগামী দু’বছর, বিশ্বজুড়ে বাড়বে ভাইরাল অসুখ সতর্ক করল হু
দৈনিক সংবাদ অনলাইন || ফিরে এসেছে ‘এল নিনো’। আর তাকেই ‘দামাল ছেলে’ বলে ব্যাখ্যা করলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আধানাম গেব্রিয়াসুস। আর তারপরেই বললেন, ‘সে এসেই তাণ্ডব শুরু করেছে। জলবায়ুর উপর প্রভাব খাটাচ্ছে, বৃষ্টি- অতিবৃষ্টি-খরা ডেকে আনছে, তছনছ করে দিচ্ছে আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে।’ এই “এল নিনো’কে নিয়েই পর্যয় আগাগোড়াই ভয় নেই। পাচ্ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৩ এবং আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সাল গোটা বিশ্বকে নাকানিচোবানি খাওয়াবে এল নিনো। ফলে ভাইরাস ঘটিত অসুখ আবার বাড়তে শুরু করবে। এই ‘এল নিনো’ হল সমুদ্রের জলে লার উষ্ণ স্রোত। প্রশান্ত মহাসাগরে দু’রকমের আবহাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক হল, লা-নিনা যার জেরে তাপমাত্রা কমে, আর দুই হল ‘এল নিনো’। ভীষণ উত্তাপ নিয়ে সবকিছু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে আসে সে। ‘এল নিনো’ হলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বেড়ে তায় প্রায়ই দুই থেকে তিন মিলিমিটার। চিলি, পেরু-সহ দক্ষিণ আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলিতে ‘এল নিনো’র প্রভাব দেখা যায় প্রায় ২ থেকে ৭ ছর অন্তর। ওই সময় মহাসাগরের পৃষ্ঠের জল দ্রুত হারে অসম্ভব গরম হয়ে রে কারণ, ওই সময় প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম প্রান্ত থেকে গরম জলের স্ত্রোত ধেয়ে আসে মহাসাগরের পূর্ব দিকে।
এল নিনোর উষ্ণ জলস্রোত যখন পূর্ব উপকূলের ঠান্ডা জলকেও উষ কে তোলে তখন মহাসাগর সংলগ্ন স্থলভাগের বিভিন্ন দেশের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’ জানাচ্ছে, এল নিনোর প্রভাবে এশিয়ার দেশে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে প্রশান্ত মহাসাগরে ঘনাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। অঅস্ট্রেলিয়ায় আবার ভয়ঙ্কর খরা দেখা দিয়েছে। জলবায়ুর এই নানা বদলের কারণে ভাইরাসদের উপদ্রব বাড়ছে। এশিয়ার দেশগুলিতে মশাবাহিত রোগ র বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন গেব্রিয়াসুস। তিনি বলছেন, বৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া,চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। পেরুতে ডেঙ্গির প্রভাব মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ডেঙ্গির ডেনভি ভাইরাসও চরিত্র বদল করছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। স্ত্রী এডিস মশা এই ভাইরাসদের বাহক। এরা আবার ইয়েলো ফিভার ভাইরাস, জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসেরও বাহক। চিকুনগুনিয়া ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন ফ্রান্সের বিজ্ঞানী। সেই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে। জিকাও মশাবাহিত রোগ। এক্ষেত্রেও দায়ী এডিস মশা। ভাইরাস মশার কামড় থেকে শরীরে ঢুকে রোগ ছড়ায়। জিকার উপসর্গও অনেকটা একই রকম, তবে এই ভাইরাস শরীরের স্নায়ুতন্ত্রে বড়সড় আঘাত করে। গর্ভবতী এবং শিশুদের এই ভাইরাস সংক্রমণে জটিল অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।