মোদি কা গ্যারান্টি!

 মোদি কা গ্যারান্টি!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত কয়েকদিন আগে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে একদিনের সফরে গগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে রেলের একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশে পাঁচটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা করেন। এরপর ভোপালে বিজেপির বুথ কমিটির প্রধানদের নিয়ে আয়োজিত একটি সভায় অংশ নেন। ওই সভায় শুধু মধ্যপ্রদেশ থেকেই নয়, বলতে গেলে সারা দেশ থেকেই বুথ সমিতির প্রধানরা অংশ নিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি দলের বুথ সমিতির প্রধানদের রীতিমতো – রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক পাঠ দিয়েছেন। প্রথমে ঠিক ছিলো ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী কোনও ভাষণ রাখবেন না। দলীয় কর্তাদের প্রশ্নের জবাব দেবেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, দলীয় কার্যকর্তাদের প্রশ্নের জবাব দেওয়াটাই প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে পরিণত হয়।এদিন প্রধানমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের অনেক প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন।
কিন্তু জবাবগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি আলোচনায় ওঠে এসেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মোদির গ্যারান্টি’ এবং সাম্প্রতিক পাটনায় অনুষ্ঠিত বিরোধী দলের বৈঠক নিয়ে মোদির কটাক্ষ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইদানিং বিরোধীরা একটা কথা খুব বলছে,গ্যারান্টি।এই গ্যারান্টি হলো দুর্নীতির গ্যারান্টি। আজ আমি আপনাদের একটি গ্যারান্টি দিচ্ছি, সেটি মোদির গ্যারান্টি। সব দুর্নীতিবাজ, সব চোরদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার গ্যারান্টি। যারা গরিব
মানুষকে লুঠ করছে, যারা দেশকে লুঠ করেছে, তাদের জেলে ঢোকানো। এটাই মোদির গ্যারান্টি।প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, দিন কয়েক আগে বিরোধী দলের নেতারা একসাথে ছবি তোলার একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। সেখানে যারা ছিলেন, তাদের সব মিলিয়ে কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি রয়েছে। তাদের জেলের দরজা সামনে বলেই এখন একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে।এদের কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম হলো, দুর্নীতির তদন্ত থেকে রক্ষা পাওয়া। তাই আগে থেকেই গারদে থাকার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হলে, পাটনা ছাড়া আর ভালো জায়গা আছে কোথায়? তাই পাটনাতেই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। ছাড়া হবে না কাউকেই।এটাই মোদির গ্যারান্টি।’মোদি আরও বলেন, ‘আসলে বিরোধীরা বুঝতে পেরেছে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনও বিজেপিই জিততে চলেছে।তাই এখন তারা জোট বাঁধছে, বৈঠক করছে বাঁচার জন্য। কিন্তু মনে রাখবেন বিরোধী মানেই দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারির গ্যারান্টি।’কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যে মধ্যপ্রদেশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর গ্যারান্টি বলে বিরোধীদের নিশানা করে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সুর বেঁধে দিয়েছেন,সে রাজ্যেই ব্যাপম নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের আমলে। ২০১৩ সালে এই নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ এবং মধ্যপ্রদেশের তৎকালীন রাজ্যপালের নামও জড়িয়েছিল। যদিও সেইসব অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে সেই শিবরাজকে মুখ্যমন্ত্রী করেই আবার মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই এদিন মোদির বক্তব্যে বিরোধীদের দুর্নীতি প্রসঙ্গ উঠে এলেও ব্যাপম প্রসঙ্গ আসেনি।এখানেই শেষ নয়, শনিবার দিল্লীতে ১৭তম ভারতীয় সমবায় কংগ্রেসের উদ্বোধন করেও প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর গ্যারান্টির কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কৃষকদের কল্যাণে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রতি বছর কৃষকদের কোনও না কোনওভাবে পঞ্চাশ হাজার টাকা সহায়তা করছে।এটা কোনও প্রতিশ্রুতি নয়।এটাও মোদির গ্যারান্টি।যদিও কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিরোধীদের অনেক অভিযোগ রয়েছে। কৃষকদের আয় আদৌ দ্বিগুণ হয়েছে কি না?এই নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। কৃষি আইন নিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে মোদি সরকারকে।সে যাই হোক, ২০১৯ লোকসভায় মোদি স্লোগান তুলেছিলেন, ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ২০২৪ লোকসভাতেও — নতুন স্লোগানের জন্ম দিলেন মোদি। আর সেটা হলো ইয়ে মোদি কা গ্যারান্টি হ্যায়’? কিন্তু এই ‘গ্যারান্টি’ দেশবাসীর মনে কতটা : প্রভাব বিস্তার করবে? সেটা সময়ই বলবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.