মাটির গভীরে ‘গোপন শহরে ১০ লক্ষ মানুষের বাস বেজিংয়ে।

 মাটির গভীরে ‘গোপন শহরে ১০ লক্ষ মানুষের বাস বেজিংয়ে।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

চিনের রাজধানী বেজিং শহর মানুষের ভিড়ে ঠাসা। শহরে বাস করার মতো বিশেষ জমিও অবশিষ্ট নেই। যেটুকু আছে, সেই জমিতে ফ্ল্যাট কেনা সাধারণ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য। তাই মাটির নীচে, ভূগর্ভে বিশাল এক শহর বানিয়ে ফেলেছে চিন। বেজিংয়ের ১০ থেকে ১৮ মিটার গভীরে। নিম্নবিত্ত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ এই শহরে বসবাস করেন। কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ‘এ কলকাতার মধ্যে আছে আর একটা কলকাতা, হেঁটে দেখতে শিখুন’ । কবির ভাষা ধার করে এই শহর সম্পর্কেও অনেকে বলেন, ঝা চকচকে বেজিংয়ের মধ্যে আছে আর একটা বেজিং, ভূগর্ভে হেঁটে দেখুন!মাটির নিচে যারা বাস করে, তাদের স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘র‍্যাট ট্রাইবাল’। বাংলায় বলা যেতে পারে ইঁদুর জনগোষ্ঠী। ৭৮ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই শহরের নাম ডিক্সিয়া চেং। বস্তুত, এটি এক গোপন শহর। মাটির উপর মানুষের ভিড় এবং আলোর ছটা থাকলেও নিচের শহর বাঁচে অন্ধকারে। নীরব সেই শহরটা মোটেই বেজিং শহরের মতো পরিষ্কার নয়, বরং বেশ নোংরা। অর্থের কারণেই এই ভূগর্ভস্থ শহরে বাসা বেঁধেছে লোকজন। ডিক্সিয়া চেং কিন্তু আজকের নতুন শহর নয়।১৯৬৯ সালে সাবেকভসোভিয়েত-চিন উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন বেজিং শহরের নিচে শহর নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির তদানীন্তন চেয়ারম্যান মাও জে দং। খাদ্যসঞ্চয় এবং যুদ্ধের জন্য সেই শহরকে দ্রুত প্রস্তুত করতে বলেন মাও। প্রথমে বলা হয়েছিল, লাল ফৌজের বাঙ্কারের মতো কাজ করবে আস্ত একটি শহর। শহরের নকশা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে এই অঞ্চলকে পরমাণু এবং জৈব রাসায়নিক হামলা থেকে রক্ষা করা যায়। বেজিংয়ের উপর হামলা হলে যাতে রাজনীতির কেষ্টবিষ্টু থেকে আমলা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভূগর্ভস্থ শহরে একাধিক প্রবেশপথও তৈরি করা হয়। তেমন হামলা অবশ্য বেজিংকে কখনও সামলাতে হয়নি। পরবর্তীকালে সুড়ঙ্গে বসবাস করা স্থানীয়েরা বাকি বাড়িগুলিকে কম টাকার হোটেলে পরিণত করে ফেলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.