বিধানসভার টুকিটাকি।

 বিধানসভার টুকিটাকি।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

শত হাঙ্গামার পরও মুলতবিহীন বিধানসভা।
নজিরবিহীন হৈ হট্টগোলের মধ্যেও বৃহস্পতিবার কার্যত গোটা দিনভর চললো বিধানসভার কার্যপ্রণালী। সকাল ১১টা থেকে বাজেট ভাষণের মাধ্যমে অধিবেশন শুরু হয়। তা চলে সন্ধ্যা সাতটার পরও। বিরোধী পক্ষ এদিন শুরু থেকেই ছিল আগ্রাসী। তারা রীতিমতো চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছিলেন বিধানসভার মার্শালদের। এতসবের পরও একটিবারের জন্যও সভা মুলতবি হয়নি। যার প্রেক্ষিতে বিধানসভায় নয়া মাইলফলক হয়েছে বলেই তথ্যাভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
ডবল ট্র্যাক রেলওয়ে প্রস্তাব।।


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি প্রণয়নের পর ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে।রাজ্যের যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক, বিমান এবং রেল চলাচল ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত আমূল
পরিবর্তন হয়েছে। রাজ্যের জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বেশ আন্তরিক। আজ বিধানসভায় বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল আনীত ‘লামডিং থেকে আগরতলা হয়ে সাক্রম পর্যন্ত ডবল-ট্র্যাক রেলওয়ে লাইন স্থাপনের জন্য ত্রিপুরা বিধানসভা কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছে’ শীর্ষক বেসরকারী প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করে পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কথাগুলি বলেন।
পরিবহণ মন্ত্রী শ্রীচৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য খুবই আন্তরিক ও উদ্যমী ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে লামডিং থেকে সাক্রম পর্যন্ত রেল ট্র্যাকটি সিঙ্গল রয়েছে। এর ফলে রাজ্যের ট্রেন পরিষেবা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে না। বিষয়টি উপলব্ধি করে ট্রেন পরিষেবার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রকের নিকট রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারের সঙ্গে আলোচনায় রাজ্যের রেল পরিষেবা উন্নয়নে সর্বতো সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে।

মহিলা বিধায়কদের জন্য আলাদা কক্ষ।।

মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ বিধানসভা ভবনে মহিলা বিধায়কদের জন্য আলাদা কক্ষ এবং পাশেই বেবি কেয়ার রুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা এবং বিধায়কগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্টোরথের মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।।

কুমারঘাটে উল্টোরথের সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এবং ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮৮ জন যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ বিধানসভার অধিবেশনে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। বিধায়কগণ দাঁড়িয়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন দুটি ঘটনায় শোকজ্ঞাপন করে বলেন, গত ২৮ জুন কুমারঘাটে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক ধরে অগ্রসর হওয়া উল্টোরথের চূড়া ওই সড়কের উপর দিয়ে যাওয়া হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের সাথে সংযোগ হয়ে যায়। এর ফলে উল্টোরথ স্পর্শ করে চলা পুণ্যার্থীদের মধ্যে দুই শিশু সহ ৮ জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। কুমারঘাটের এই মর্মবেদনাদায়ক ঘটনাটি শুধু রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়,সমগ্র দেশবাসীই শোকস্তব্ধ। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বড় মিলিয়ে আর ও পনেরোজন আহত হয়েছেন। ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকে আকস্মিক এই মর্মান্তিক ঘটনায় আহতদের উন্নততর চিকিৎসার যাবতীয় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনায় সমগ্র রাজ্যবাসী আজও শোকে বিহ্বল। অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনায় বিধানসভায় গভীর শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা ব্যক্ত করছে। পাশাপাশি দুঃখজনক এই ঘটনায় আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে।

বিধানসভায় স্মৃতিচারণ।।

বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধে আজ ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রী বিধুভূষণ মালাকার, প্রাক্তন বিধায়ক অমল মল্লিক এবং রাজ্যের প্রথম পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপক তথা বিশিষ্ট প্রশাসক হিমাংশু মোহন চৌধুরীর প্রয়াণে স্মৃতিচারণ করা হয় এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিধায়কগণ দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন।শোক প্রস্তাবে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন জানান, গভীর দুঃখের সঙ্গে এই সভাকে অবহিত করছি যে, ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিধুভূষণ মালাকার গত ২৪ মে কমলপুর মহকুমার হালাহালীতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। জীবনাবসানকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, দুই কন্যা সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধদের রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।অধ্যক্ষ বলেন, গভীর দুঃখের সঙ্গে এই সভাকে অবহিত করছি যে, ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন সদস্য অমল মল্লিক গত ১৩ জুন বিলোনীয়াস্থিত নিজ বাড়িতে হঠাৎ করে অসুস্থতা বোধ করায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি জীবনাবসানকালে স্ত্রী, এক পুত্র এবং এক কন্যা সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধদের রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.