পাতাল প্রবেশের বিশাল দৈত্যাকার গর্ত মিলল ভারত মহাসাগরে।

 পাতাল প্রবেশের বিশাল দৈত্যাকার গর্ত মিলল ভারত মহাসাগরে।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনেক দিন আগেই বিজ্ঞানীরা এই দৈত্যাকার গর্তের সন্ধান পেয়েছিলেন। তবে সেটিকে জরিপ করতে এতদিন ধরে চলছিল গবেষণা। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ঠিক দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে বিশাল এই গর্ত আদতে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা মাধ্যাকর্ষণজনিত গর্ত। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণেই ৩০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এমন গর্ত তৈরি হয়েছে, যা সমুদ্রের একেবারে নিচের স্তরের চেয়েও গভীর। ভারত মহাসাগরের নিচে এমন সুবিশাল গহ্বর দেখে কারও মনে হতেই পারে, এটাই হয়তো পাতালের প্রবেশপথ।
গোটা বিশ্বে এখনও অনেক বিষয়ই আছে যা বিজ্ঞান জানতে পারেনি। জলস্তর থেকে শুরু করে স্থলভাগ, মহাকাশ সব ক্ষেত্রেই এই অজানাগুলি জানার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ভারত মহাসাগরের নিচে এই গর্ত আবিষ্কারের ফলে পৃথিবী সংক্রান্ত অনেক অজানা তথ্যও সামনে আসতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ঠিক দক্ষিণে রয়েছে ওই দৈত্যাকার গহ্বরটি। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এই গর্তের নাম ‘ইন্ডিয়ান ওশান জিওয়েড লো’ বা সংক্ষেপে আইওজিএল। একে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা অভিকর্ষীয় গহ্বরও বলা হয়। ঘটনা হল, ওই গহ্বরটি ১৯৪৮ সালে আবিষ্কৃত হয়। সম্প্রতি, একটি স্যাটেলাইট দ্বারা পাওয়া একটি ছবির মারফত এই গহ্বরটির সম্পর্কে সবিস্তারে জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। – ভারত মহাসাগরের যে জায়গায় গহ্বরটি রয়েছে, গোটা বিশ্বের নিরিখে সেখানে পৃথিবীর অভিকর্ষ বল অত্যন্ত দুর্বল থাকায় সমুদ্রের জলতলের ১০০ মিটারেরও নিচে অবস্থান করছে ওই গহ্বর।উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই গবেষণার মূলে আছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের দুই বাঙালি বিজ্ঞানী। ভূ-বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক দেবাঞ্জন পাল এবং অধ্যাপক আত্রেয়ী ঘোষ। মেসোজোয়িক যুগে লরেশিয়া এবং গন্ডোয়ানা উপমহাদেশের মাঝে ছিল টেথিস মহাসাগর। তবে পরে
স্থলভাগ জুড়ে গেলে তার বিলুপ্তি ঘটে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, প্রায় দুই কোটি বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলে। তৎকালীন সময়ে টেথিস মহাসাগর যখন পৃথিবীর কোলে হারিয়ে যেতে থাকে তখন প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়।যার জেরে টেথিস মহাসাগরের কিনারায় মাটি ফুঁড়ে উঠে আসে লাভা এবং ছাই। এর ফলে সেই জায়গার মাঝে বেশ কিছুটা জায়গা খালি থেকে যায়।একটি জার্নালে এই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী।মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে এই অসামঞ্জস্যতার ফলেই পৃথিবীর পৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পার্থক্য ঘটে। যদিও এই বিষয়ে আরও তথ্য জানতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.