প্রস্তাবিত বাজেটে আলোচনা শুরু,এটা এনজিও বাজেট: অনিমেষ অন্তঃসারশূন্য বললেন জিতেন্দ্র।

 প্রস্তাবিত বাজেটে আলোচনা শুরু,এটা এনজিও বাজেট: অনিমেষ অন্তঃসারশূন্য বললেন জিতেন্দ্র।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের পেশ করা বাজেট বরাদ্দের উপর সোমবার সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। রীতি অনুযায়ী এ দিন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনার সূচনা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী নেতা শুরুতেই বলেন, এই বাজেটের শুরুটা কোথায় আর শেষ কোথায় সেটাই বুঝলাম না। বাজেটকে সম্পূর্ণ দিশাহীন, ভবিষ্যৎ হীন বাজেট বলে আখ্যায়িত করেন। এই বাজেটে রাজ্যের চল্লিশ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যৎ তৈরি হবে বলে মনে করি না।এই বাজেটে রাজ্যের বেকারদের জন্য, কৃষকদের জন্য, শিল্প বাণিজ্য নিয়ে কিছুই নেই।এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। ত্রিপুরা একটাই থাকবে। কিন্তু শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বাজেটে বিরোধী নেতা বলেন, যে বাজেট পেশ করা হয়েছে সেটা কোনও একটি রাজ্য সরকারের বাজেট হতে পারে না।সব দেখে মনে হয়েছে এটি একটি এনজিও বাজেট।এনজিও যেমন বাজেট করে অনুদান কোথা থেকে আসবে, সেটাকে কীভাবে কাজে লাগাবে। বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রীও সেই এনজিও বাজেট পেশ করেছেন। কীভাবে রাজ্যকে আত্মনির্ভর করা হবে তার কোনও দিশা নেই। সিপিএম এই রাজ্যকে সর্বনাশ করে দিয়েছে। কিন্তু সেই সর্বনাশ থেকে উত্তরণের জন্য কোনও দিশা নেই। আত্মনির্ভর ত্রিপুরা শুধু ভাষণেই থাকবে নাকি বাস্তবে হবে? তার কোনও পথ দেখানো হয়নি। এই বাজেট রাজ্যকে আত্মনির্ভর করার ক্ষেত্রে অন্তরায় বলে মন্তব্য করেন বিরোধী নেতা।বিরোধী নেতা বলেন, ঘাটতির অর্থ কী? ৬১১ কোটির ঘাটতি বাজেট পেশ করা হয়েছে। টাকা পেলে খরচ করবো।কিন্তু কোথা থেকে টাকা আসবে তার কোনও উল্লেখ নেই। অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণ ভালো কাগজে, ভালো প্রিন্ট হয়েছে। কিন্তু কী করবো সেটা নেই? রাজ্যে নয় লক্ষ বেকারের জন্য একটি শব্দও নেই। এ দিন বিরোধী নেতা বর্তমান শাসকদলের ২০১৮ ভিশন ডকুমেন্ট এবং ২০২৩-এর সংকল্প পত্রে উল্লেখিত প্রতিশ্রুতি নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। টবের মধ্যে নারকেল গাছ লাগিয়ে রাখার মতো এডিসিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। বাজেটে এডিসির জন্য ৬৭২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা পুরো বাজেটের মাত্র ২.৭ শতাংশ। ৬৭২ কোটির মধ্যে ৫৮০ কোটি চলে যাবে বেতন আর পেনশনে। অবশিষ্ট অর্থে কী হবে? কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। আসলে এটা অন্য একটি মুখের মধ্যে শাহরুখ খানের মুখোশ পরিয়ে দেওয়ার মতো। তাই এই বাজেটকে জনমুখী বাজেট বলা তো দূরের কথা, এটি রাজ্যের বেকার, কৃষক, জনজাতি বিরোধী একটি দিশাহীন বাজেট বলে আখ্যায়িত করেন বিরোধী নেতা অনিমেষ দেববর্মা। এ দিন বাজেটে আলোচনায় অংশ নিয়ে একই সুরে কথা বলেন সিপিআই(এম) পরিষদীয় দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীও। তিনি বলেন, খুশি হতাম যদি এই বাজেট রাজ্যের বিকাশের জন্য হতো।এই বাজেট দিশাহীন তো বটেই। অসংখ্য গোঁজামিল ও খামখেয়ালির বাজেট। জাগলারি করা হয়েছে। অন্তঃসারশূন্য বাজেট। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির সাথে সাথে নেশার কবলে ডুবছে রাজ্য। তাই এখন জেলায় জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্র খুলতে হচ্ছে। ক’দিন বাদে হয়তো নেশামুক্তি কলেজ, নেশামুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে হবে। এমনকী বিধানসভাতেও নেশামুক্তির জন্য চেম্বার খুলতে হয় কি না ভেবে দেখতে হবে। জিতেন্দ্রবাবু বলেন, বাজেটে মুখ্যমন্ত্রীর নামে নানা যোজনা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী অমুক যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী তমুক যোজনা, রাজ্যের যা পরিস্থিতি তাতে মুখ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেট দমন যোজনা করুন। ২৫ বছরে বামফ্রন্ট সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ করেছে, বর্তমান সরকার তো ৫ বছরেই ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ করে ফেলেছে। যদিও বাজেট নিয়ে জিতেন্দ্রবাবুর বক্তব্য রাখার সময় বারবারই ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। নিজেকেও সমালোচনা হজম করতে হয়েছে।এ দিন বাজেট প্রস্তাবের উপর দারুণভাবে বক্তব্য রাখেন শাসক দলের তরুণ বিধায়ক শম্ভু লাল চাকমা। তার ভাষণ অনেকেরই নজর কেড়েছে। এছাড়াও এ দিন বক্তব্য রাখেন বিধায়ক রঞ্জিত দাস,বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই, বীরজিৎ সিনহা, বিধায়িকা অন্তরা দেব সরকার, বিধায়িকা স্বপ্না দেববর্মা, বিধায়ক শৈলেন্দ্ৰ চন্দ্ৰ নাথ, বিধায়ক পাঠান লাল জমাতিয়া, বিধায়ক ইসলাম উদ্দিন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.