আগামীকাল ১৬ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি ইসরোতে।
শুক্রবার ভারতীয় সময় দুপুর দুটো বেজে ৩৫ মিনিট আর এক ইতিহাস রচনা করতে চলেছে ইসরো। পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু যে স্বপ্ন নিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন সেই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকেই উৎক্ষেপণ হতে চলেছে চন্দ্রযান-৩।২০১৯ সালের ২২ জুলাই জিএসএলভি মার্ক-থ্রি’তে চেপে অন্ধ্রের শ্রীহরিকোটা থেকে রওনা দিয়েছিল চন্দ্রযান-২। ওই বছর ৬ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে চাঁদের মাটি স্পর্শ করা ঠিক আগের মুহূর্তে ল্যান্ডার বিক্রম বিকল হয়ে যায়। বিক্রম ব্যর্থ হলেও তৃতীয় চন্দ্রযানের সেটাই যেন সাফল্যের পথ। তিন লক্ষ কিলোমিটারের বেশি পথ দ্বিতীয় চন্দ্রযান যেভাবে পাড়ি দিয়েছিল সেই পথ ধরেই এগোবে তৃতীয় চন্দ্রযান।সময়ের ভগ্নাংশ মেপে প্রতিটি মুহূর্তে তার যাত্রাপথকে পরিবর্তন করে এগিয়ে যাবে তৃতীয় চন্দ্ৰযান। দুটো বেজে ৩৫ মিনিটে শ্রী হরি কোটা থেকে রওনা দেবার ঠিক সাড়ে চার সেকেন্ডের কিছু বেশি সময় যখন উৎক্ষেপণ স্থল থেকে মাত্র ২৪ মিটার উঁচুতে থাকবে তখনই তার অভ্যন্তরের জ্বালানি দহন শুরু হবে। সেই অবস্থায় রকেটটি ৪৪ কিলোমিটার ৬৬৮ মিটার উঁচুতে উঠতে সময় নেবে মাত্র ১০৮ সেকেন্ডের সামান্য বেশি।তারপরে ৬২ কিলোমিটার ওপরে উঠেই সম্পূর্ণভাবে আলাদা হয়ে যাবে চন্দ্রযানের মধ্যে থাকা দুটি জ্বালানি ট্যাঙ্কার। এর জন্য হাতের সময় আর মাত্র ১৯ সেকেন্ড। এরপরের রুদ্ধশ্বাস গতি। ৬৮ সেকেন্ডের মাথায় পেলোড ফেয়ারিং অর্থাৎ যার মধ্যে চন্দ্রযান রয়েছে সেটি তখন একা নিঃসঙ্গ অবস্থায় উড়তে থাকবে। পরের ৫১ কিলোমিটার উঠতে তার সময় লাগবে ২০০ সেকেন্ড। এর মধ্যেই তরল অবস্থায় যে হাইড্রোজেন গ্যাসটি সেটি তখন ক্রায়োজেনিক ২৫ এর গতিকে ত্বরান্বিত করবে। যারা নিম্ন অংশ খসে পড়ে যাবে একবার হিসাবে। আড়াই ভগ্নাংশের হিসাবে। সেকেন্ডের মধ্যেই ক্রায়োজেনিক ২৫ চন্দ্রযানকে বহন করে নিয়ে যাবে এক কিলোমিটার ২০০ মিটার। তারপরে তারও বিদায়।সাড়ে ৬০০ সেকেন্ডের মাথাতে ক্রায়োজেনিক ২৫ পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে চন্দ্রযান থেকে। এই গোটা প্রক্রিয়া ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে ৯৬৯ সেকেন্ডের সামান্য কিছু বেশি। মানে ষোল মিনিট নয় সেকেন্ডের মধ্যেই পৃথিবীর কক্ষপথকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে চন্দ্রযান একা। শুধু উড়তে থাকবে মহাকাশে। লক্ষ্য তার একটাই চাঁদের মাটি। শুরুতে মহাকাশযানের গতিবেগ থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ০.৪৫২ কিলোমিটার। উঁচুতে উঠে যখন চন্দ্রযান-৩ স্পেস শাটল্ থেকে বেরিয়ে যাবে তখন এর গতিবেগ থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ১০.২৬৯ কিলোমিটার। আর এই গতি নিয়েই পৃথিবীর কক্ষপথ পেরিয়ে মহাশূন্যে ভেসে চন্দ্র কক্ষে প্রবেশ করবে স্বপ্নের চন্দ্ৰযান।