এবার কী হবে রাহুলের!
মোদি পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে আপাতত সাংসদ পদ খুইয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। গুজরাটের নিম্ন আদালত হাইকোর্ট হয়ে এবার সুপ্রিম কোট। সুপ্রিম কোর্টে কি রেহাই মিলবে রাহুল গান্ধীর? নাকি সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখবে? (এক) সুপ্রিম কোর্ট যদি রাহুল গান্ধীকে রেহাই দেয় তাহলে হয়তো রাহুল গান্ধী সাংসদ পদ ফিরেও পৈতে পারেন। (দুই) এমনও হতে পারে সুপ্রিম কোর্ট রাহুল গান্ধীকে স্বস্তি দিলো না । তাহলে কী হবে। রাহুল গান্ধীর কি দুই বছর জেল হবে? তাহলে কি লোকসভা ভোট রাহুলকে ছাড়াই করতে হবে বিরোধীদের? রাহুল কি জেলে যাবেন মোদি পদবি নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের দায়ে ? এরকম বহু যদি,কিন্তুর উপর আপাতত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভবিষ্যৎ দাঁড়িয়ে রয়েছে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা। কর্ণাটকে লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে প্রচার চলাকালীন মন্তব্য করে বসেন যে, সব চোরেদের পদবি মোদি কেন? রাহুল সম্ভবত, ললিত মোদি, নীরব মোদিদের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি এর অন্য অর্থ বের করে। গুজরাটে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। বিজেপির এক বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি গুজরাটের এক নিম্ন আদালতে মানহানির মামলাটি করেন। তার বক্তব্য ছিল, রাহুল গান্ধী গোটা মোদি সমাজকে অপমান করেছেন । মামলাটির আর বিশেষ অগ্রগতি কিছুই হচ্ছিল না। একসময় মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন আবেদনকারী। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২৩ সালে রিট মামলাটি পুনরায় জেগে উঠে। এমন সময় রাহুল গান্ধী সংসদে আক্রমণাত্মক মেজাজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে মোদি – গৌতম আদানির সম্পর্কের নিরিখে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন। এরপরই দেখা গেল হঠাৎ করে চলতি বছরের গত ২৩ মার্চ গুজরাটের এক নিম্ন আদালত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মানহানি সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে ২ বছরের সাজা শোনায়। সাধারণত মানহানি মামলায় অভিযুক্তদের বেশিরভাগই ‘টোকেন’ শাস্তি দেওয়া হয়। যে মামলা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে করা হয় এতে সর্বোচ্চ ২ বছরের সাজার বিধান ছিল। দেখা গেল যে, রাহুলকে ২ বছরেরই সাজা শুনানো হয়।রাহুল গান্ধী একজন লোকসভার সাংসদ। একই সাথে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কোন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা যদি গৃহীত হয় এবং তাতে যদি ওই অভিযুক্তের কমপক্ষে ২ বছরের সাজা হয় তাহলে তার বিধায়ক/ সাংসদ ইত্যাদি পদ বাতিল হয়ে যাবে।
গুজরাটের নিম্ন আদালত রাহুল গান্ধীকেও ঠিক ২ বছরের সাজাই শোনায়। স্বভাবতই তড়িৎ গতিতে লোকসভার স্পিকার রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ বাতিল করে দেন। আর এতেই রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠে। কংগ্রেস সরাসরি শাসক বিজেপিকে এর জন্য দায়ী করে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আদানির সম্পর্ক নিয়ে রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলতেই দীর্ঘ চার বছর আগের মামলায় রাহুল গান্ধীকে সাজা দেওয়া হয়েছে এবং একই সাথে তার সাংসদ পদও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কেননা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ যাতে খারিজ করে দেওয়া যায় সেজন্যই পরিকল্পনামাফিক তাকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সাজা শুনানো হয়। শাসহুল গান্ধীকে কথা বলতে দেওয়া যাবে না। সেজন্য চক্রান্ত করেছে রাহুলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস যদিও হাল ছাড়তে নারাজ। হাইকোর্টে আবেদন করলেও সম্প্রতি হাইকোর্টও রাহুলকে স্বস্তি দেয়নি। এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার সব নজর সুপ্রিম কোর্টের দিকে। সুপ্রিম কোর্ট যদি রাহুলকে স্বস্তি না দেয় তাহলে হয়তো রাহুলকে জেলে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে ২০২৪-এর আগে বিরোধী জোটের কাছে তা হবে এক বিরাট ধাক্কা। আর যদি রাহুল গান্ধী সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পান তাহলে কি ফের সাংসদ পদ ফিরে পাবেন রাহুল? আপাতত কিছু যদি, কিন্তুর উপর রাহুলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ভবিষ্যৎই কথা বলবে রাহুল গান্ধীর ভবিষ্যৎ নিয়ে।