পাঁঠার মাথা নিয়ে মাতাবাড়িতে বসছে মাংসের বাজার, ক্ষোভ।
অনলাইন প্রতিনিধি :- গেরুয়া তিলকধারীদের দৌলতে মাতাবাড়ি মন্দির চত্বর মাংস বাজারে পরিণত হলো। বর্তমান সময়ে মাতাবাড়ির পবিত্র স্থানটিকে এক প্রকার মাংস বাজারে পরিণত করেছেন তথাকথিত গেরুয়া তিলকধারী রাষ্ট্রবাদী নেতারা। বলি ঘরের হাড়িকাঠের সামনের সিঁড়িতে সারিবদ্ধভাবে সাজানো পাঁঠার মাথা চামড়া থেকে খসানো মাংস কলাপাতার উপর সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির উদ্দেশে। আবার কেউ বলি ঘরের সিঁড়ির সামনে দুই একজন দুই হাতে পাঁঠার মাথা ঝুলিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন আর দাম হাঁকাচ্ছেন। দেখলে মনে হবে যেন একটি মাংস বাজার। এটা কোনও মাংস বাজার নয়। এটা হচ্ছে একান্ন পীঠের এক পীঠ মাতা ত্রিপুরেশ্বরীর পূর্ণ ধাম। ধর্মীয় মতে এই স্থানটি হচ্ছে সবচেয়ে পবিত্র একটি স্থান। একদা মন্দিরে বলি প্রথা নিয়ে উচ্চআদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছিল। যদিও ধর্মীয় ভাবাবেগের কথাকে বিবেচনা করে দীর্ঘ সময় বলি প্রথা বন্ধ থাকার পর পুনরায় মন্দিরে শুরু হয় বলি প্রথা। কিন্তু বলি দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট বন্ধ ঘরের মধ্যেই। কিন্তু বলি দেওয়ার পর প্রতিদিন শুরু হয় মাংস বাজারের খেলা। তা আবার মন্দির চত্বরেই। অভিযোগ, মন্দিরে বলি দেওয়া ঘরের সিঁড়ির মধ্যে প্রতিদিন বহু সংখ্যক পাঁঠার মাথা বিক্রি করার জন্য সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। একদিকে পাঁঠার মাথা অপরদিকে পাঁঠার চামড়া ও চামড়া থেকে খসানো মাংস। মন্দিরে মতো একটি পবিত্র স্থানে এই ধরনের দৃশ্য দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি মায়ের মন্দিরে প্রকাশ্যে চলছে মাংস বিক্রি? যদিও দীর্ঘ দিন যাবৎ এই অভিযোগ উঠতে থাকলেও মন্দির কর্তৃপক্ষ এমনকী প্রশাসন কোনও ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। শুধু তাই নয় প্রতিদিন বলি দেওয়ার পর পাঁঠার মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রকাশ্য সিড়ি দিয়ে। আর পাঁঠার রক্তে প্লাবিত হচ্ছে মন্দিরের সিঁড়িগুলো। এছাড়াও অভিযোগ, প্রতিদিন বলি দেওয়ার পর কিছু লোক মন্দিরের উপরের দুই হাতে পাঁঠার রক্তমাখা মাথা নিয়ে ঘুরাঘুরি করছেন বিক্রির জন্য। মন্দিরের মতো একটি পবিত্র স্থানে এই ধরনের দৃশ্য অনেকটাই ধর্মীয় ভাবাবেগকে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। অভিযোগচ ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মন্দিরে এই ভাবে প্রকাশ্যে মাংস বিক্রির পদ্ধতি চালু হয়েছে। অভিযোগ, প্রতিদিন বলি দেওয়া পাঁঠার মাথা সরকারী দামে ক্রয় করে চড়া দামে বিক্রি করছেন। মাতাবাড়ি মন্দিরের মতো একটি পবিত্র স্থানে প্রকাশ্যে মাংস বিক্রির ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে মন্দিরে আসার ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে। দাবি উঠছে অতি শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক মন্দির কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্যই অবিলম্বে মাংস বিক্রির ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে এমনটাই দাবি করেছে ধর্মপ্রাণ মানুষ।