মিডিয়া স্বাধীনতা না পেলে, তথ্য বঞ্চিত হবে মানুষ : মুখ্যমন্ত্রী।

 মিডিয়া স্বাধীনতা না পেলে, তথ্য বঞ্চিত হবে মানুষ : মুখ্যমন্ত্রী।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- সংবাদ মাধ্যম সমাজের দর্পণ। এই দর্পণে মানুষ যে রকম প্রকৃত তথ্যকে দেখতে পায় তেমনি রাজ্য সরকারও তার ভুল ত্রুটিগুলি দেখার সুযোগ হয়। এ কথা বললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা। বুধবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য দপ্তর ও আগরতলা প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী মিডিয়া ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে উদ্বোধকের ভাষণে এ কথাগুলি বলেন। তার সাথে সুনির্দিষ্ট সংবাদ পরিবেশনে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান রাখেন। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারকে সাংবাদিকদের বান্ধব বলে মনে করেন।তিনি বলেন, এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের নানা সমস্যার বিষয়গুলোর সম্পূর্ণরূপে সমাধান করতে পেরেছেন তা বলবো না, তবে সাংবাদিক বান্ধব হিসাবে সরকার কাজের প্রতিফলনের মধ্যে দিয়ে তা করে দেখাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমকে স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্যে বহুবার সাংবাদিকদের থেকেও উত্থাপিত হয়। সেই দিকেও মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত করে বলেন, সংবাদ মাধ্যমকে স্বাধীনতা না দিলে প্রকৃত তথ্য মানুষের কাছে যাবে না । তাছাড়া সরকারের যদি কোনও ব্যর্থতা থাকে, কোনও কাজে গাফিলতি থাকে তার সংবাদ মাধ্যম তুলে ধরেন। এর ফলে সরকারের কিছু শেখার পাশাপাশি সংশোধন করার সুযোগ হয়।এমনকী সংবাদপত্র এবং মাধ্যমে উঠে আসা সংবাদ দেখে বুঝতে পারি এটা তো ভুল হয়েছে,এভাবে করলে ভালো হতো। আপনারা কিন্তু আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। তাই সংবাদ মাধ্যম সমাজের দর্পণ । সাংবাদিকদের কাজের ভূমিকা নিয়ে বলেন, এ সমাজের সাংবাদিকরা প্রহরীর মতো কাজ করছে। ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। তথ্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন এর বিষয়টি টেনে বলেন, অনেক সময় দেখা যায় কোনও মিডিয়া টকঝাল মিলিয়ে লিখতে ভালো চলে। কিন্তু পড়বে ঠিকই তবে এ ধরনের সংবাদে ভরসা কম হবে। কেননা সেখানে প্রকৃত ম্যাটেরিয়ালকে খুঁজে পাবে না। মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ১০০% নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন ভীষণ কষ্টকর। তারপরও যারা টক ঝাল মিশিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে তাদের প্রতিও আমাদের বিরূপ মনোভাব থাকে না। তার জন্য এই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা খুবই দরকার।কেননা ফুটবল খেলাতে রেফারি যেরকম কোনও পক্ষ না নিয়ে খেলা পরিচালনা করে, তেমনি সাংবাদিকদেরও অনেকটা রেফারির মতোই কাজ করতে হয়।যদিও সেই কাজটা বড়ই কঠিন। তাই এ ধরনের কর্মশালা সংবাদিকদের উৎকর্ষতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে।এই ট্রেনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে উৎকর্ষতা বৃদ্ধির কলমের মাধ্যমে চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটবে। জানি এরকম চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। দেশব্যাপী বর্তমান সংবাদ মাধ্যম যেভাবে কাজ করছে তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে রাজ্যের সাংবাদিকদের কাজ করার প্রয়াস রাখতে বলেন। সংবাদের সত্যনিষ্ঠা পরিবেশন সাংবাদিকের দায়িত্ব যেরকম বোঝালেন, তেমনি সরকারের দায়িত্ব রয়েছে তাও নির্দ্বিধায় বলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জোর গলায় বলেন, সমস্যার সমাধান করার জন্যই সরকার। সমস্যা যদি সমাধান না করতে পারে সরকারে থাকার কোনও মানেই হয় না। আর এই রাজ্য সরকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কাজ করছেন সেই দিশায় রাজ্য সরকারও কাজ করছে।এ দিন, বিশেষ অতিথির ভাষণে আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক রমাকান্ত দে বলেন, প্রেস ক্লাবের লক্ষ্য হচ্ছে সাংবাদিকদের কল্যাণমূলক কাজ করা। তিনি রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ দেন স্বাস্থ্য বিমার পদক্ষেপটিকে। বলেন, নতুন পরিচালন কামিটর মাত্র পাঁচ মাস হয়েছে। তার মধ্যেই অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রেস ক্লাবে লিফ্‌ট বসানো এবং তিনতলা একটি হলঘর নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি আশাবাদী এক বছরের মধ্যেই লিফট এবং হল নির্মাণ হয়ে যাবে। এছাড়া আগামী পনেরো আগষ্ট প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দীর্ঘ ছয় বছর পর অভিমুখ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, অধিকর্তা বিস্তিস্বার ভট্টাচার্য, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য সহ অন্যরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.