লোকসভায় গৃহীত অনাস্থা প্রস্তাব,আজ সব নজর রাজ্যসভায়।
কংগ্রেস এমপি গৌরব গগৈর আনা এবং ৫০ জন এমপির স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করা হল। এরপর স্থির করবেন স্পিকার যে, কবে হবে এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটি। সুতরাং আজ থেকেই প্রতিটি দল তথা দুই প্রতিপক্ষ শিবির নিজেদের এমপিদের উপর হুইপ জারি করে দিয়েছে যে লোকসভায় অনুপস্থিত থাকা চলবে না। একটি নয়। দুটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। কারণ, কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে যেমন অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তেমনই পৃথকভাবে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতিও দিয়েছে অনাস্থা প্রস্তাব সরকারের বিরুদ্ধে। কারণ এই দল ইন্ডিয়া জোটে নেই। আবার এনডিএ জোটেও নেই। কিন্তু ক্রমেই হায়দ্রাবাদে যেভাবে বিজেপি নিজেদের মাটি শক্ত করছে, সেটা দেখে আতঙ্কিত কে চন্দ্রশেখর রাও এতদিনের দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার প্রবণতা থেকে সরে এসে তুমুল বিজেপি বিরোধিতা শুরু করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি ও তার দল কংগ্রেসেরও সমালোচনা করছেন। কারণ স্বাভাবিক তেলেঙ্গানায় আর কয়েক মাসের মধ্যে ভোট। এখনও পর্যন্ত বিজেপি নিজেদের শক্তিশালী দাবি করলেও কংগ্রেস এবং ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতিই প্রধান দুই প্রতিপক্ষ। বিজেপির তৃতীয় স্থান পাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। সুতরাং চন্দ্রশেখর রাওকে সরাসরি কংগ্রেসের জোটে আশা করা যায় না। তাছাড়া কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতিকে ঠিক বিশ্বাস করা হয় না। কারণ অতীতে দেখা গিয়েছে বিরোধী জোটে থাকার পর আচমকা চন্দ্রশেখর রাও মোদির সঙ্গে মিত্রতা করেছেন। তাই তার দলকে এবার ইন্ডিয়া জোটে ডাকাও হয়নি। যদিও লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলেও বিরোধী জোটের বিশেষ আশা করার মতো সাফল্য যে আসবে না সেকথা স্পষ্ট। কারণ বিজেপি এবং তার সহযোগী দল মিলিয়ে ৩৫০ পেরিয়ে যাবে। আবার তাদের স্বাভাবিক মিত্র দলও আছে।অর্থাৎ বিজু জনতা দল অথবা জগনমোহন রেড্ডির ওয়াই এস আর কংগ্রেস। সুতরাং লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবে পরাস্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই মোদির। বিরোধীদের লক্ষ্য হলো, এই প্রস্তাব এনে সংসদের মধ্যে মোদিকে বাধ্য করা হবে বিবৃতি দিতে এবং কিছু বলতে।তিনি যে বিরোধীদের নাটকীয় ভঙ্গিতে আক্রমণ করবেন সেটা প্রত্যাশিত।কিন্তু মণিপুর নিয়ে কিছুই উচ্চারণ না করেন তাহলে সেটা হবে বড়সড় বার্তা। বিরোধীরা ফের বলতে পারবে যে নরেন্দ্র মোদি ভয় পাচ্ছেন মণিপুর নিয়ে কিছু বলতে। অন্যদিকে রাজ্যসভায় কার্যত বিরোধীশূন্যভাবেই সংসদীয় কাজ চলছে।আজ নিয়ে দ্বিতীয় দিন এভাবেই সরকার বিল পাস ও অন্য সংসদীয় কাজ করিয়ে নিয়েছে।কারণ, বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, তাদের বলতে দেওয়া হচ্ছে না। আর এই অভিযোগ তুলে বিরোধীরা সম্মিলিত ওয়াক আউট করে চলেছেন। সুতরাং মীমাংসা সূত্র আসছে না আপাতত। এদিকে আগামীকাল রাজ্যসভার অধিবেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। কেননা, দিল্লীর প্রশাসনিক ক্ষমতা নিয়ে যে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল তা এই অধিবেশনেই হয়তো বিজেপি পাস করিয়ে নেবে। তবে লোকসভায় সংখ্যাধিক্যের জেরে বিজেপি তা পাস করিয়ে নিলেও রাজ্যসভায় বিজেপির কিছুটা অসুবিধা রয়েছে। আম আদমি পার্টি চাইছে সব বিরোধী দল যদি রাজ্যসভায় এককাট্টা থাকে তাহলে রাজ্যসভায় এই বিলকে ফেরত পাঠানো সম্ভব। তাই সব বিরোধী দলই তাদের সাংসদকে আগামীকাল সংসদে হাজির থাকতে হুইপ জারি করেছে। কংগ্রেসও বৃহস্পতিবার তাদের সব সাংসদকে হুইপ জারি করেছে যে তারা যেন রাজ্যসভায় হাজির থাকে। কেননা দিল্লী অর্ডিন্যান্স বিল যেকোনও সময় সংসদে পাস করিয়ে নিতে পারে বিজেপি।