তপ্ত মণিপুরে সমাবেশের ডাক নাগাদের।
অনলাইন প্রতিনিধি :- মণিপুরের পরিস্থিতি ক্রমশই ঘোরালো হয়ে উঠতে শুরু করেছে।এবার আসরে নামতে চলেছে সংযুক্ত নাগা পরিষদ। রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংখ্যালঘু কুকি জনগোষ্ঠীর চলমান সহিংসতার মধ্যেই নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে সোচ্চার হতে চলেছে নাগা জনগোষ্ঠী। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল মণিপুরের নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সমাবেশের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত নাগাদ পরিষদ। প্রস্তাবিত চুক্তির আওতায় কেন্দ্রের সাথে শান্তি আলোচনার সফল পরিসমাপ্তির দাবিতেই এই সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। একটি বিবৃতি দিয়ে সংযুক্ত নাগা পরিষদ জানিয়েছে, আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে তামেংলাং, সেনাপতি, উখরুল এবং চান্দেল জেলাগুলোর জেলাসদরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত চুক্তি সম্পাদনে অযাচিত বিলম্ব ঘটায় উদ্বেগ বৃদ্ধির পাশাপাশি শান্তি প্রক্রিয়াটি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। এই কারণেই সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংযুক্ত নাগা পরিষদের তরফে। সংযুক্ত নাগা পরিষদ একটি প্রভাবশালী নাগা সংগঠন এবং আগামীকালের সমাবেশে সকল নাগাদের বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে কুকি জনগোষ্ঠীর শীর্ষ সংগঠন কুকি ইনপি মণিপুর। বর্তমানে রাজ্যে জাতিগত সহিংসতার কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুকিরা। সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা সরকারী ক্ষমতাকে ব্যবহার করে জাতিগত নির্মূলীকরণের পথে হাঁটছে।এমতাবস্থায় নাগাদের প্রস্তাবিত সমাবেশগুলোকে সমর্থন জানাচ্ছে কুকি ইনপি মণিপুর। সংগঠনের তরফে বিবৃতি দিয়ে এই কথা বলা হয়। নাগা গোষ্ঠীর সঙ্গে কেন্দ্রের শান্তি আলোচনার বিরুদ্ধে কাজ করছে মণিপুর সরকার। এই অভিযোগে আগামী ২১ আগষ্ট থেকে প্রস্তাবিত মণিপুর বিধানসভার অধিবেশনে যোগ না দিতে রাজ্যের ১০ নাগা বিধায়ককে বলেছে নাগা জনগোষ্ঠীর একটি শক্তিশালী গণসংগঠন নাগা হোহো। রাজ্যে জাতিগত সহিংসতার প্রেক্ষাপটে দলীয় পরিচয় নির্বিশেষে কুকি বিধায়করাও প্রস্তাবিত ওই অধিবেশনে যোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে ওই জনগোষ্ঠীর নেতারা। মণিপুর বিধানসভায় ১০ জন কুকি জমি বিধায়ক রয়েছেন। এর মধ্যে সাত জন বিজেপির, দুই জন কুকি পিপলস অ্যালায়েন্সের এবং একজন নির্দল। রাজ্যে অশাস্তির পরিস্থিতিতে গুজবে কান না দিতে এবং মিথ্যা ভিডিও সম্পর্কে সাবধান থাকতে মানুষকে অনুরোধ করেছে মণিপুর পুলিশ। এদিকে মণিপুরের বিজেপি শাখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছে যেন রাজ্য থেকে আসাম রাইফেলস বাহিনীকে একেবারের জন্য সরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য কোনও আধা সামরিক বাহিনীকে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। জনগণের স্বার্থে এই পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি মণিপুর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করা হয় রাজ্য শাখার তরফে। বলা হয়েছে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতার অবস্থায় আসাম রাইফেলসের ভূমিকা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে এবং গণরোষের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহিংসতার প্রথম দিন থেকেই আসাম রাইফেলস নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। দলের আরও বক্তব্য খুবই স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল পরিস্থিতিতেও এই আধা সামরিক বাহিনী পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে যার কারণে আসাম রাইফেলসকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে জনগণ। এমতাবস্থায় অবিলম্বে রাজ্য থেকে আসাম রাইফেলসকে অপসারনের দাবি জানিয়েছে মণিপুরের বিজেপি শাখা। ওই মেমোরেণ্ডামে স্বাক্ষর করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি এ সায়দা দেবী এবং সহসভাপতি চিদানন্দা। সাম্প্রতিক একটি ঘটনার কথাও তারা তুলে এরেন যখন অসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের তাড়া করা রাজ্য পুলিশের একটি দলের পথরোধ করে আসাম রাইফেলস।