বৈঠকশেষে উল্টো ছবি, সমর্থন নিয়ে রহস্য জিইয়ে রাখলো মথা।
অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার মেলারমাঠ দশরথ দেব ভবনে তিন দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম-কংগ্রেস-তিপ্রা মথার নেতৃত্বরা। বৈঠকশেষে প্ৰদশে কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যা বললেন, তার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই দেখা গেল পুরোপুরি উল্টো চিত্র। আশিসবাবু যা বলেছেন, রবিবার তার উল্টোটাই ঘটলো।এদিন সিপিএম দল একরকম একতরফা ভাবেই ধনপুর ও বক্সনগর কেন্দ্রে তাদের দুই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।প্রশ্ন হচ্ছে, শনিবার মেলারমাঠ সিপিএম পার্টি অফিসে তিনদলীয় বৈঠকে যদি এমন সিদ্ধান্ত হয়েই থাকে, তাহলে সংবাদমাধ্যমে তা বলতে কীসের আপত্তি ছিল? আশিসবাবু স্পষ্ট ভাবেই বলেছিলেন, বৈঠকে প্রার্থীপদ এবং কোন দল দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি।এই বিষয়ে আরও কয়েকটি বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।তাহলে চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতে কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো যে, সিপিএম একাই দুই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে?এমনিতেই রাজ্য কংগ্রেস দলকে সিপিএমের হাতে সঁপে দেওয়ার কারণে, প্রকৃত কংগ্রেস কর্মীরা দল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে অনেক আগেই।২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের কাঁধে ভর করেই তিন কেন্দ্রে জয় মিলেছে। নতুবা ঝুলি শূন্যই থাকতো বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। উপনির্বাচনেও একই ছবি দেখে বর্তমান কংগ্রেসের মধ্যেও স্পষ্ট বিরোধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দলের এক বিধায়ক স্পষ্টতই অন্যপথে হাঁটছেন।ফলে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা নির্দল প্রার্থী হিসাবে দুই কেন্দ্রে লড়াইয়ে নামলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।রাজনীতির ময়দানে সবই সম্ভব।অপরদিকে, তিনদলীয় বৈঠকে তিপ্রা মথার প্রতিনিধি হিসাবে একমাত্র বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মাকে দেখা গেছে।এছাড়া দলের অন্য কোনও শীর্ষ নেতা এমনকী দলের সভাপতি বিজয় রাঙ্খলও এই বিষয়ে এখনো নীরব। নীরব দলের সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণও।এদিকে, রবিবার রাতে ফের একবার বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, আগামী সোমবার তাদের দলীয় বৈঠক হবে। এরপর সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা সবকিছু জানিয়ে দেবেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সিপিএমের প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি স্বাগত জানান, কিন্তু সিপিএম দল বা প্রার্থীকে সমর্থন করার কথা বলেননি। পুরো বিষয়টি তিনি ধোঁয়াশায় মধ্যে রেখে দিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক মহলের একটি বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, তিপ্রা মথার অবস্থান ও সিদ্ধান্ত পুরোটাই নির্ভর করবে দলের সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোরের উপর।তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন, তার উপরই নির্ভর করবে সবকিছু। অনিমেষ দেববর্মা যাই বলুক, যেভাবেই বলুক, শেষ কথা বলবেন প্রদ্যোত কিশোর। ফলে শেষ মুহূর্তে অনেক কিছুই ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখনই জোর দিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। অপরদিকে আগামীকাল রাজ্যে আসছেন বিজেপির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোর্ডিনেটর দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডা. সম্বিত পাত্রা। জানা গেছে, আগামীকাল সকালে বিজেপির নির্বাচন কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে দুই কেন্দ্রের প্রার্থীদের নামে শিলমোহর পড়বে। এরপর সেই নাম যাবে দিল্লীতে। সেখান থেকে অনুমোদনের পর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। শনিবার রাতে উচ্চ-পর্যায়ের দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছে শাসক দল আগামী ১৭ আগষ্ট মনোনয়নপত্র জমা দেবে। ফলে খেলা এখনো বাকি আছে।