বাড়িতে বিজেপির জাম্বো টিম,উপভোটে বিরোধী শিবিরে ধাক্কা কংগ্রেস ছাড়ছেন বিল্লাল মিয়া।

 বাড়িতে বিজেপির জাম্বো টিম,উপভোটে বিরোধী শিবিরে ধাক্কা কংগ্রেস ছাড়ছেন বিল্লাল মিয়া।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নিজের অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেস দল ছাড়ছেন দলের দীর্ঘদিনের সৈনিক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিল্লাল মিয়া। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই আচমকা বিল্লাল মিয়ার কংগ্রেস ছাড়া নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। এদিন দুপুরে একপ্রকার অপ্রত্যাশিতভাবেই বিজেপি দলের রাজ্য নেতাদের একটি জাম্বো টিম সোনামুড়ার দুর্গাপুরস্থিত কংগ্রেস নেতা বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে হাজির হন। এই টিমে ছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, মন্ত্রী রতনলাল নাথ, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী সুধাংশু দাস, মেয়র দীপক মজুমদার, বেশ কয়েকজন বিধায়ক, কৈলাসহরের সংখ্যালঘু নেতা মবস্বর আলি সহ আরও অনেকে। মুহূর্তে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। সাংবাদিকরাও হাজির হয় বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে। প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। বিল্লাল মিয়া শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতা-নেত্রীদের মাংস-বিরিয়ানি খাইয়ে আপ্যায়ন করেন। বৈঠক শেষে বেরিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, বিল্লালদা আমাদের পুরনো সাথী। সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেই তার বাড়িতে আসা। বিল্লাল মিয়া কি বিজেপি দলে যোগ দিচ্ছেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী বলেন, সেটা বিল্লালদা বলতে পারবেন। তবে বিল্লাল বাবু এই জেলার একজন বাম বিরোধী নেতা। সারা জীবন সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। সেই লড়াই এখনও অব্যাহত। তিনি একজন প্রকৃত বাম বিরোধী নেতা। আমরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। কংগ্রেস আজ দেউলিয়া হয়ে গেছে। সিপিএমের দয়ায় শুধু সাইনবোর্ড ধরে রেখেছে। শুনেছি বিধায়ক বীরজিৎ সিন্হাও কংগ্রেসের এই দেউলিয়া ভূমিকায় দারুণভাবে ক্ষুব্ধ । এই রাজ্যে যারা প্রকৃত বাম বিরোধী, তারা এখন আর কংগ্রেস দলে থাকতে পারবেন না। আর যাকে নিয়ে এত জল্পনা, সেই বিল্লাল মিয়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেই জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, রতনলাল নাথ, সুশান্ত চৌধুরী আমরা দীর্ঘদিন একসাথে রাজনীতি করেছি। আজকে যেহেতু তারা সোনামুড়া এসেছেন, তাই আমার বাড়িতে এসেছে। এছাড়া অন্য কিছু নয়। আপনি কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? জবাব দিতে গিয়ে খানিকক্ষণ চুপ থেকে বলেন, ‘আমি তো কংগ্রেস করি’। পরে সাংবাদিকরা জানতে চান, দুই কেন্দ্রে তো কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না। সিপিএম প্রার্থীকে সমর্থন করার কথা বলছে? জবাবে বিল্লাল মিয়া বলেন, “এটা কংগ্রেস দল বলতে পারবে’। আপনি কবে যোগ দেবেন বিজেপিতে? এবারও খানিকক্ষণ চুপ থেকে বলেন, ‘এই সব নিয়ে কোনও কথা হয়নি, পরে দেখা যাবে’। মোদ্দা কথা ঝেরে কাশলেন না। এদিকে বৈঠকের খবর হচ্ছে, আলোচনা যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন বিল্লা মিয়া তার অনুগামীদের সাথে কথা বলার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছেন। এরপরই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে। জানা গেছে, শুধু বিল্লাল মিয়াই নন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের প্রথম সারির আরও কয়েকজন নেতা, যুবনেতা কংগ্রেস ছেড়ে পদ্মবনে শামিল হতে পারে।
রাজ্যের দুইটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার শাসক দলের দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সোনামুড়ায় শাসক দলের গোটা রাজ্য নেতৃত্ব হাজির হন। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে গোটা মন্ত্রিসভা, সকল বিধায়ক, রাজ্য নেতৃত্ব, সকল মোর্চার পদাধিকারী সহ অনেকে। মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে, দুপুরে হঠাৎ করেই রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রীর কনভয় যখন সোনামুড়ার দুর্গাপুরের সড়কের দিকে ছুটে যাচ্ছিল, সেই সময় মানুষ কার্যত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। দুর্গাপুর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত একটি এলাকা। বক্সনগর বিধানসভা কিংবা সোনামুড়ার সিপিএম বিরোধী রাজনীতিতে এই দুর্গাপুর সবসময়েই পাশে ছিল বিল্লাল মিয়ার। তিনি সোনামুড়ার সংখ্যালঘু অংশের মানুষের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম। একা কুম্ভের মতো সোনামুড়ার সিপিএম বিরোধী রাজনৈতিকে কয়েক দশক ধরে সামলে রেখেছেন। ১৯৮৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন। কংগ্রেস-টিইউজেএস ভোটে সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি মন্ত্রী হন। মন্ত্রী হয়ে এই সোনামুড়া মহকুমার উন্নয়নে বহু কাজ করেছেন। বহু বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এখনও সোনামুড়ায় কংগ্রেস রাজনীতিতে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় রয়েছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.