ভেঙে পড়লো রাশিয়ার লুনা – ২৫,চাঁদ অভিযানে আরও একধাপ এগোল ভারত।

 ভেঙে পড়লো রাশিয়ার লুনা – ২৫,চাঁদ অভিযানে আরও একধাপ এগোল ভারত।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাশিয়ার জন্য দু:সংবাদ, ভারতের জন্য সুসংবাদ। রাশিয়ার মিশন লুনা – ২৫ শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলো। অন্যদিকে, ভারতের মিশন চন্দ্রযান ৩ তার শেষ।ডিবুস্টিং অপারেশনটি সফলভাবে সম্পন্ন করলো। বিপর্যয় নেমে এলো রাশিয়ার চন্দ্রাভিযানের উপর। চাঁদের মাটিতে ভেঙে পড়লো রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা – ২৫। চন্দ্রযান ৩-র পরে যাত্রা শুরু করলেও ভারতের স্বপ্নের মহাকাশযানের আগে চাঁদে অবতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল লুনা – ২৫। কিন্তু বিধি বাম। ভারতকে টেক্কা দিতে গিয়ে শেষমেশ ভেঙে পড়লো রাশিয়ার লুনা – ২৫। রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকোমোসের তরফে জানানো হয়েছে, চাঁদের কাছে এসে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় লুনা – ২৫। তারপর চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে। শনিবার বিকাল দুটো বেজে সাতান্ন মিনিটে (ভারতীয় সময় বিকাল পাঁচটা বেজে সাতাশ মিনিটে) লুনা -২৫-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাতচল্লিশ বছরে রাশিয়ার প্রথম চন্দ্রাভিযান শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার মুখ দেখলো।এই মিশন ঘিরে রাশিয়ায় অনেক আশা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত মিললো না সাফল্য। এখনও দুর্ঘটনার কোনও বিস্তারিত কারণ জানানো হয়নি।এই বিপর্যয়ের কারণে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অভিযানের ক্ষেত্রে এখন গোটা বিশ্বের ভরসা ভারতের চন্দ্রযান মিশন। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের যে লক্ষ্য নিয়ে ভারত এই অভিযান শুরু করেছিল তাতে অকস্মাৎ ছন্দপতন ঘটে লুনা ২৫-এর অপ্রত্যাশিত আগমনের কারণে। কিন্তু এখন ভারতের সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পুরোপুরি সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণ সময় সতেরো মিনিট পিছিয়ে দিয়েছে ইসরো। মনে করা হচ্ছে, লুনা -২৫-এর আছড়ে পড়া থেকে শিক্ষা নিয়ে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছে ইসরো। প্রবাদ আছে, ‘স্লো বাট স্টেডি উইনস দ্য রেস’। এবার সেই কথাটিই অক্ষরে অক্ষরে পালনের পথে হাঁটছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। চন্দ্রযান – ২-এর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই অভিযানের প্রথম থেকেই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। এবার আর কোনও ভুলচুক যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে সাবধানে পা ফেলা হচ্ছে। তেইশ আগষ্ট পাঁচটা বেজে সাতচল্লিশ মিনিটে নয়, আরও সতেরো মিনিট পিছিয়ে ছয়টা বেজে চার মিনিটে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে ল্যান্ডার বিক্রম।উল্লেখ্য, শনিবার মধ্যরাতেই চাঁদের কক্ষপথে শেষ ল্যাপে দ্বিতীয় ডি বুস্টিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় চন্দ্রযান – ৩-এর। আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরেই স্বপ্ন পূরণ হবে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর। শনিবার মধ্যরাতে শেষ ডি বুস্টিং অপারেশনের পর চন্দ্রযান- ৩ এখন পঁচিশ কিলোমিটার x ১৩৪ কিলোমিটার কক্ষপথে অবস্থান করছে। প্রত্যাশা অনুসারেই কাজ করছে ল্যান্ডার বিক্রম। ইসরো জানিয়েছে, ল্যান্ডারটির স্বাস্থ্য ভালোই আছে। চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর ল্যান্ডার বিক্রমের গতি ধাপে ধাপে অনেকটাই কমানো হয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অনেক বড় বড় গর্ত রয়েছে। সেখানেই বিক্রমের সফট ল্যাণ্ডিং করিয়ে কামাল করতে চায় ইসরো। তাই ধীর গতিতে পা ফেলা হচ্ছে। এখন চাঁদ থেকে মাত্র পঁচিশ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার পর ল্যান্ডার বিক্রমের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। এরপর সে চাঁদের পৃষ্ঠে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবে। এই অভিযানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো নিরাপদে একটি ল্যান্ডারকে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করানো এবং একটি রোভারের সাহায্যে ইন সিটু রাসায়নিক বিশ্লেষণ করা। ইসরো জানিয়েছে, চাঁদে অবতরণের আগে ল্যান্ডার মডিউলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা করা হবে এবং নির্দিষ্ট স্থানে সূর্য ওঠার জন্য অপেক্ষা করা হবে। ল্যান্ডারের সময় অবতরণের মাধ্যমে নয়া ইতিহাস সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের যুব সমাজের মধ্যে ঔৎসুক্য এবং অন্বেষণের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসা তৈরি হবে বলে এক পোস্ট করেছে ইসরো।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.