উপনির্বাচনের লড়াই

 উপনির্বাচনের লড়াই
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বক্সনগর এবং ধনপুরে অকাল ভোটের লড়াই হচ্ছে। দুই কেন্দ্রই দীর্ঘদিন আগলে রেখেছিল এ রাজ্যে বামেরা। ২০২৩ সালের গত ফেব্রুয়ারীর বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পাঁচ দশক পর ধনপুরে বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি জয়ী হয়। ধনপুরে পাঁচ দশক পরে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছিলনে ধনপুরেরই ঘরের মেয়ে তথা বিজেপি নেত্রী প্রতিমা ভৌমিক।কিন্তু বক্সনগর বরাবরই বামেদের শক্ত ঘাঁটি।২০১৮ সালে বিজেপির প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও বামেরা বক্সনগরে জয়ী হয়েছিল।এমনকী ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের নির্বাচনেও বামেরা তাদের জয়ের ধারা অক্ষুন্ন রেখেছিলো। প্রথমবারের মতো বক্সনগর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। বাম নেতা শামসুল হক। কিন্তু পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই ২টি কেন্দ্রে ফের অকাল ভোট।এই দুই কেন্দ্রে অকাল ভোটে শাসক বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে ময়দানে নেমেছে।শাসক দল বিজেপি তার পুরো টিমকে ২ ভাগ করে ২ কেন্দ্রে মাঠে নামিয়েছে। অন্যদিকে, বামেরা তাদের চিরাচরিত কায়দায় চটজলদি প্রার্থী নির্বাচন করে প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছে। ধনপুরে বিজেপি প্রার্থী নবাগত। বামেদের প্রার্থী পুরনো। বক্সনগরে বামেদের প্রার্থী নবাগত। বিজেপির প্রার্থী পুরনো। স্বভাবতই দুই কেন্দ্রে একটা ভালো লড়াই দেখা যাবে এটা আশা করা যেতেই পারে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর যে চিত্র রয়েছে তাতে বক্সনগরেও চারজন প্রার্থী এবং ধনপুরেও চারজন প্রার্থী। তবে উভয় ক্ষেত্রে মূল লড়াই হচ্ছে বিজেপি – বামেদের মধ্যে।ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের সাথে আগষ্ট – সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের তফাৎটা হলো ২ কেন্দ্রেই তৃতীয় শক্তি হিসাবে তিপ্রা মথার অনুপস্থিতি। ফেব্রুয়ারীর ভোট বিজেপিকে ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে পরোক্ষ সহায়তা করেছিলো তিপ্রা মথা। এটা স্বীকার করুক আর না করুক, এটা ঘটনা। বিজেপি যে টেনেটুনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে তা মথার জন্যই। অর্থাৎ তিপ্ৰা মথা পরোক্ষে ভোট কেটে বিজেপির জয় সহজ করেছে অনেক কেন্দ্রে এবং এক্ষেত্রে ক্ষমতায় আসা সহজ হয়েছে শাসক বিজেপির – রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের – মতামত এটিই।এবার এই দুই কেন্দ্রে নির্বাচনে মথার অনুপস্থিতি শাসকদলকে নিশ্চিতভাবে ভাবাচ্ছে। বাম-কংগ্রেস জোট বক্সনগর এবং ধনপুরে কতটা অটুট রয়েছে তা অবশ্য সময়ই বলবে। তবে এটা বলা যায়, বাম-কং-মথার ভোট যদি বিজেপিবিরোধী হিসাবে একবাক্সে যায় তাহলে বিজেপির শঙ্কার কারণ রয়েছে।অবশ্য মথা এখনও প্রকাশ্যে ঝেরে কাশছে না। তাদের দলের সমর্থনকারীরা কাকে ভোট দেবেন না দেবেন এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনও কথা নেই নেতৃত্বের তরফে। অন্যদিকে, কংগ্রেসও বামেদের সমর্থনের বিষয়টি প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। কংগ্রেস বরং বামেদের আগেভাগে প্রার্থী ঘোষণায় কিছুটা বিরক্ত যে হয়েছে তা অবশ্য আকারেইঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছে।সিপিএম উভয় কেন্দ্রেই নিজেদের মতো করে প্রচার করছে। বক্সনগর কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটে থাবা কে বসাতে পারে সেটাই এখন দেখার। কেননা প্রার্থীও উভয়ই সংখ্যালঘু মুসলিম।ধনপুরে উপজাতি ভোট ফ্যাক্টর হতে পারে। সেক্ষেত্রে ধনপুর এবং বক্সনগরে শাসকদলের কাছে উপভোট এত সহজ হবে না। তাই পুরো শক্তি নিয়ে দল ঝাঁপিয়েছে উভয় কেন্দ্রেই। মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতা, পদাধিকারী কেউ বসে নেই। শাসক দল উপনির্বাচনে অনেক অ্যাডভান্টেজ পাবে। প্রশাসনযন্ত্র, পুলিশ সবই তাদের। ফলে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ রয়েছে শাসকের। ভোটের দিন ভোট কেমন হয়, পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ এলাকায় কীরকম প্রভাব বিস্তার করে, দুই কেন্দ্রের ভোটাররা কতটা ভোট দিতে পারে নির্ভয়ে — সবকিছুর উপর নির্ভর করবে বিরোধীদের ফলাফল।শাসকের কাছে ২ কেন্দ্রে জয় আর বিরোধীদের কাছে বক্সনগর ধরে রাখা এবং ধনপুরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যায় কিনা এ নিয়েই আপাতত ২ কেন্দ্রে ভোট লড়াই জারি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.