প্রজ্ঞানের সিসমোগ্রাফে প্রথমবার ধরা পড়ল চাঁদের তরঙ্গের অনুভূতি।
অনলাইন প্রতিনিধি : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঐতিহাসিক অবতরণের ঠিক তিন দিন পর, অর্থাৎ ২৬ আগস্ট চাঁদের মাটিতে প্রথম ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডারে ‘ইনস্ট্রুমেন্ট ফর দ্য লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি’ বা আইএলএসএ পেলোড রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পের সর্বশেষ আপডেটে এ কথা জানাল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরো।তারা জানিয়েছে, কম্পনের উৎসের খোঁজ অনুসন্ধান চলছে।ইসরো ট্যু ইটারে পোস্ট করে বলেছে যে, ‘এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা এবংতার উৎসের তদন্ত চলছে।’আইএলএসএ পেলোড রোভার এবং অন্যান্য পেলোডগুলির গতিবিধিও রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
ইসরো তার সর্বশেষ পোস্টে লিখেছে,চন্দ্রযান-৩ মিশন: ইন-সিটুবৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডারে চাঁদে প্রথম মাইক্রো ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেম বা মেস্’এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক যন্ত্র ইনস্ট্রুমেন্ট ফর লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি বা ইলসা পেলোড রোভার প্রজ্ঞান এবং অন্যান্য পেলোডের গতিবিধি রেকর্ড করেছে।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য;আইএলএসএ পেলোড বেঙ্গালুরুতে ডিজাইন করা হয়েছিল। আর বেঙ্গালুরুর ইউআরএসসি ডেভল্পমেন্ট মেকানিজম তৈরি করেছে বলেজানিয়েছে ইসরো। অন্য একটি পোস্টে ইসরো বলেছে, চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডারে যে রেডিও অ্যানাটমি অব মুন বাউন্ড হাইপারসেন্সিটিভ বা রম্ভা’ রয়েছে তার সাহায্যে চাঁদের দু’টি বায়ুস্তর
,আয়োনোস্ফিয়ার এবং অ্যাটমোস্ফিয়ারের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। পেলোড চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্লাজমার ঘনত্ব প্রথম পরিমাপ করছে।আইএলএসএ-তে ছয়টি উচ্চ-সংবেদনশীলতা অ্যাক্সিলোমিটারের একটি ক্লাস্টার রয়েছে, যেগুলি সিলিকন মাইক্রোমেশিনিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে দেশিয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে।কোর সেন্সিং এলিমেন্টে ইলেক্ট্রোড -সহ একটি স্প্রিং-মাস সিস্টেম থাকে।বাহ্যিক কম্পনগুলি স্প্রিং এর বিচ্যুতি ঘটায়, যার ফলে ক্যাপাসিট্যান্সের পরিবর্তন ঘটে যা ভোল্টেজে রূপান্তরিত হয়।ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে; ‘প্রাথমিক মূল্যায়ন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, চন্দ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি প্লাজমাস্তর তুলনামূলকভাবে বিরল। এই পরিমাণগত পরিমাপগুলি সম্ভাব্যভাবে লুনার প্লাজমা রেডিও তরঙ্গ যোগাযোগে যে শব্দ হয় তা প্রশমিত করতে সহায়তা করে।২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করার পর বিক্রম এবং প্রজ্ঞান তাদের ক্যামেরায় অনেক কিছু ধরে ফেলেছে। পাশাপাশি চাঁদের বায়ুতে যে অক্সিজেনের অস্থিত্ব রয়েছে তাতেও সিলমোহর দিয়েছে। এর পাশাপাশি অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালশিয়াম, লৌহ, ক্রোমিয়াম, সিলিকন, অক্সিজেন, ম্যাঙ্গানিজ, টাইটানিয়াম ইত্যাদির খোঁজ ইতিমধ্যেই মিলেছে। এখন খোঁজ চলছে হাইড্রোজেন সহ অন্যান্য উপাদানের।
এর আগে যে সকল মহাকাশযান চাঁদে গিয়েছিল এবং গবেষণা করা হয়েছিল তা থেকে জানা গিয়েছিল চাঁদে ভূমিকম্প হয়। কিন্তু চাঁদে ভূমিকম্প হওয়ার জলজ্যান্ত উদাহরণ অর্থাৎ ভিডিও সচরাচর দেখা যায়নি। এবার সেই ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করলো ল্যান্ডার বিক্রম। শুধুভিডিও নয়, এর পাশাপাশি ভূমিকম্পের গতিবিধি রেকর্ড করা হয়ে হয়েছে।