দুই টুকরো মথা! সংকটে এডিসি ও

 দুই টুকরো মথা! সংকটে এডিসি ও
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যের সরল জনজাতিদের মনে বিভেদের বিষ ছড়িয়ে, এবং জনজাতিদের ভাবাবেগে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার সুরসুরি দিয়ে রাতারাতি জনজাতি সমাজে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন ত্রিপুরার রাজপরিবারের উত্তরসূরি প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মন। ত্রিপুরার জনজাতিদের মধ্যে রাজপরিবারের প্রতি একটা আনুগত্য এবং ভালোবাসা রয়েছে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। জনজাতিদের এই ভালোবাসাকে হাতিয়ার করে, ফের একবার পৃথক রাজ্যের ডাক দিয়ে রাজ্যের জনজাতি সমাজকে উদ্বেলিত করে তুলেছিলেন তিনি। ডাক দিয়েছিলেন থানসার। অর্থাৎ নানাভাবে বিভক্ত জনজাতিদের ঐক্য এবং সকলকে একছাতার নীচে আসা। তাঁর এই আহবানের উপর আস্থা ও ভরসা করে অনেকেই এসেছেন। জনজাতিভিত্তিক ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলিকে তাদের অস্তিত্ব বিলিন করে দিয়ে সামিল করেছেন তার হাতে গড়া নয়া দল তিপ্রামথায়। গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের শ্লোগান দিয়ে দখল করেন ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলাপরিষদের মসনদ। তারপর ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে ৪২ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৩ আসন জয়লাভ করে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তিপ্রামথা। কিন্তু বিধানসিভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরই সবকিছু যেন ওলোট পালট হতে শুরু করে। পৃথক রাজ্যের স্বপ্ন ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়। জনজাতিরাও ধীরে ধীরে বুঝতে পারে তাদের আবেগ নিয়ে খেলা হয়েছে। পরিস্থিতির চাপে প্রদ্যোতকিশোর ও সম্মানজনক পলায়নের পথ খুজছিলেন। শেষে দলের দায়িত্ব বিজয় রাংখলের উপর ছেড়ে দিয়ে তিনি বহিঃরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। এরপরে পাহাড়ে শুরু হয়ে যায় দলের ভাঙন। প্রতিদিনিই দলে দলে জনজাতিরা মথার শিবির ছেড়ে পদ্মশিবিরে শামিল হতে থাকে। সদ্য সমাপ্ত দুই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল তিপ্রামথাকে আরও বড় ধাক্কা দিয়েছে। এবার তাঁর দলই দুই ভেঙে টুকরো হয়ে গেলো। এমনটা হবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কেননা, চালাকি করে কোনও মহৎ কাজ হাসিল করা যায় না। মানুষকে অবাস্তব স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণা করা ছাড়া, আর কিছুই করা যায়না। যে থানসার ডাকে একদিন প্রদ্যোতের ছাতার নীচে সামিল হয়েছিল অনেকে, আজ তারাই একে একে ছাতার নীচ থেকে বেড়িয়ে আসছেন। সোমবার তিপ্রামথা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে শ্রীদাম দেবর্বমা, দীনেশ দেববর্মাদের তিপ্রাল্যান্ড স্টেট পার্টি। আগামীদিনে আরও অনেকেই হয়তো বেড়িয়ে আসবে। মথা সূত্রে খবর, বর্তমান পরিস্থিতিতে এডিসিও সংকটে।যে কোনও সময় একাধিক এমডিসি বিজেপি দলে সামিল হতে পারে বলে খবর। ফলে এই পরিস্থিতিতে ত্রিপ্রামথার ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠে গেছে বড় ধরনের প্রশ্নচিহ্ন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.