কোণে কোণে নেটওয়ার্ক, আগ্রাসী বিএসএনএল।

 কোণে কোণে নেটওয়ার্ক, আগ্রাসী বিএসএনএল।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-অন্ধকূপে জাল বিছিয়ে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে বিএসএনএল। রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি গত কয়েক বছরে কার্যত অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছিল। হারিয়েছে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক এবং মুনাফা।মূলত মোবাইল প্রযুক্তির আধুনিকতর নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের দিতে না পারায় সংস্থাটি পিছিয়ে পড়েছিল প্রতিযোগিতায়। অবশেষে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া প্রয়াস। মোবাইল পরিষেবায় ‘ব্ল্যাক হোল’ বা অন্ধকার কূপ শব্দটি খুবই ব্যবহৃত ও পরিচিত শব্দ। অর্থাৎ যেখানে মোবাইল টাওয়ারের সিগন্যাল পৌঁছে না সেই স্থানটিকে ব্ল্যাক হোল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। রাজ্যে এরকম অজস্র ব্ল্যাক হোল রয়েছে, যেখানে কোনও মোবাইল অপারেটরেরই সিগন্যাল পাওয়া যায় না।এর মধ্যে বহু জনবসতি যেমন রয়েছে তেমনি পর্যটন এলাকাও রয়েছে। ফলে এই সমস্ত স্থানে মোবাইল কাজ করে না।রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ব্ল্যাক হোলগুলিকে মোবাইল নেটওয়ার্কের অধীনে নিয়ে আসার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে বিএসএনএল। তার জন্য বসানো হচ্ছে ১২৭টি নতুন মোবাইল টাওয়ার। এগুলি বেশীরভাগই গ্রামাঞ্চলে।

সবগুলি টাওয়ার বা বিটিএস হবে ফোর জি প্রযুক্তির। এটি মূলত ভারত সরকারেরই পরিকল্পনা ও প্রজেক্ট।সারা দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌঁছেনি এমন ব্ল্যাক হোল বা এলাকায় নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিতে ইউনিভার্সাল অবলিকেশন বা ইউএসও ফাণ্ডের অধীন প্রয়োজনীয় টাওয়ার স্থাপন করতে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিএসএনএলকে দায়িত্ব দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। তারই অংশ হিসেবে ত্রিপুরার গ্রামে গ্রামে স্থাপিত হবে ১২৭টি নতুন বিটিএস। ইতোমধ্যে রজ্যে ব্ল্যাক হোলগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে।বর্তমানে বিএসএনএলের অধীনে রাজ্যে রয়েছে ৩৫৬টি বিটিএস। রাজধানী আগরতলা সহ শান্তিরবাজার, বিলোনীয়া এরকম কিছু আরবান এলাকায় ১১৮টি টাওয়ারে রয়েছে ফোর জি পরিষেবা। অবশিষ্ট বিটিএসগুলি চলছে ২জি এবং ৩জি প্রযুক্তিতে। নতুন ১২৭টি বিটিএস সহ পুরনো অবশিষ্ট সব বিটিএস শীঘ্রই ৪জি প্রযুক্তিতে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে।২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরই স্বদেশী উৎপাদন উদ্ভাবন বাড়ানোর জন্য মেক ইন ইন্ডিয়া স্লোগান ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে দেশে ফোর জি এবং ফাইভ জি প্রযুক্তির বিটিএস নির্মাণ শুরু হয়ে গেছে।স্বদেশী সংস্থা সি ডট এবং তেজস ত্রিপুরা সহ গোটা দেশে ফোর জি মোবাইল বিটিএস স্থাপনের বরাত পেয়েছে।১৯৮৪ সালে ভারতীয় টেলিকম ইঞ্জিনীয়ার, উদ্ভাবক শ্যাম পিত্রোদার হাত ধরে সি ডট টেলিকম শিল্পের প্রতিষ্ঠা হয় এবং নব্বইয়ের দশকে ত্রিপুরায় এবং দেশে ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ স্থাপন এবং টেলি বিপ্লব এনেছিল এই সংস্থাটি। যারা স্যামসং, নোকিয়া, এরিকসন, আলফাটেল, মোটোরলা ইত্যাদি বিদেশি টেলিকম ইক্যুইপমেন্ট সংস্থাকে পেছনে ফেলে
এগিয়ে গেছে সাম্প্রতিককালে ।বিএসএনএল কর্তারা আশাবাদী,শীঘ্রই তাদের সংস্থা পুরনো গ্রাহকদের ফিরে পাবে। যেহেতু রাজ্যের কোণে কোণে শক্তিশালী নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক উপলব্ধ হবে তাই গ্রাহকরা বিএসএনএল পরিষেবা গ্রহণ করতে উৎসাহী হয়ে এগিয়ে আসবে।সেখানে অন্যান্য প্রতিযোগী সংস্থাগুলি ৫জি পরিষেবা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে সেখানে বিএসএনএলের ফোর জি গ্রাহকদের কতটা আকৃষ্ট করবে? সঙ্গত কারণে এই প্রশ্নটি উঠবে। এই প্রশ্নের জবাবে বিএসএনএলের ডিজিএম বিকাশ সরকার বলেন, স্বদেশী উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মোবাইল নেটওয়ার্ক অনেক শক্তিশালী এবং দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার হবে। যা কোনও অংশেই কম হবে না অন্য সংস্থার ফাইভ জির চেয়ে। গ্রাহকরা উন্নত পরিষেবা পাবে।বিএসএনএল সূত্রে জানা গেছে, নতুন ইউএসও টাওয়ারগুলি দুর্গম এলাকায় স্থাপনের ফলে মাত্র ১৩টি অপটিক্যাল ফাইবারে লিঙ্ক হচ্ছে। ২১টি টাওয়ার লিঙ্ক হবে স্যাটেলাইটে। যা কিনা একটা রেকর্ড। মাইক্রোওয়েভ লিঙ্ক হবে ৯৩টি। বিদ্যুতের বিকল্প উৎসহ হিসেবে থাকবে সোলার প্যানেল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.