দল বাঁচাতে সর্বনাশা বনধ কে হাতিয়ার করলো প্রদ্যোত কিশোর!!
ত্রিপুরা ভাগের বাসনায় গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের ডাক দিয়ে বছর দুয়েক আগে তিপ্রামথা নামক জনজাতি ভিত্তিক নতুন আঞ্চলিক দল গড়ে ছিলেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন। তাঁর ডাকে সারা দিয়ে তখন রাজ্যের অধিকাংশ জনজাতিরাই সামিল হয় গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের আন্দোলনে। সেই আন্দোলনে এখনো গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড নামক আকাশের চাঁদ হাতে না পাওয়া গেলেও, এই শ্লোগানে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক লাভ হয়েছে
প্রদ্যোত কিশোরের। নিজে একজন লড়াকু নেতা হিসেবে রাজ্যের জনজাতি সমাজে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সেই সুবাদে এডিসিতে ক্ষমতা দখল করতে পেরেছেন।
শুধু তাই নয়, ২০২৩ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ৪২ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৩টি আসনে জয়ী হয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পেরেছেন।
কিন্তু রাজনীতিতে ‘সময়’ বলে একটা কথা আছে। সেই সময়ের ফেরে এখন পড়েছেন প্রদ্যোত কিশোর। তাঁকে ঘিরে এবং তার দলকে ঘিরে জনজাতিদের সেই উচ্ছাস, উদ্দীপনা, আবেগ এখন আর আগের মতো নেই। বলতে গেলে, জোয়ার ভাটার মতোই সব উধাও হয়ে গেছে। সেই জোয়ার ভাটার টানে, গত ছমাস ধরে পাহাড়ের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একসময় তাঁকে ঘিরে এবং গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের আবেগে যে জনজাতিরা দলে দলে তিপ্রামথায় সামিল হয়েছিল, তারাই এখন দলে দলে তিপ্রামথা এবং প্রদ্যোতের সঙ্গ ছেড়ে অন্যদলে সামিল হচ্ছে। অথচ গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড এখনও অধরা।
শুধু তাই নয়, গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড থেকে সরে এসে প্রদ্যোত এখন অন্য সুরে কথা বলছেন। এই পরিস্থিতিতে একদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ বাড়াতে এবং অবশ্যই নিজের দল ধরে রাখতে প্রদ্যোত কিশোরকে এখন সর্বনাশা বনধ রাজনীতিকে হাতিয়ার করতে হচ্ছে বলে, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এডিসি এলাকায় ১২ ঘন্টা বনধ ডাকার ঘোষণা দিয়েছেন প্রদ্যোত কিশোর। সামনে শারোদৎসব। রাজ্যে তারই প্রস্তুতি চলছে জোড় কদমে। এই সময়ে আচমকা বনধ ডাকার সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিসঙ্গত? তা প্রদ্যোত কিশোর এবং তার দলের নেতৃত্বরাই বলতে পারবেন। তবে একটা কথা জোর দিয়ে বলা যায়, বনধে সবদিকে ক্ষতি ছাড়া লাভের কিছুই নেই। শুধু তাই নয়, উৎসবের আগে রাজ্যে শান্তি শৃঙ্খলা অবনতির আশংকাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।