বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় রূপান্তর গ্রিন ও ক্লিন এনার্জি নিয়ে দিল্লীতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
অনলাইন প্রতিনিধি :-দেশে গ্যাস ও কয়লা সংকটের বিষয়টি চিন্তা করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।দেশে ক্রমশ গ্যাস ও কয়লার মজুত ভাণ্ডার কমে আসছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দেশে গ্যাস ও কয়লার মজুত ভাণ্ডার তলানিতে গিয়ে ঠেকবে।এই পরিস্থিতিতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।এই সংকটের কথা মাথায় রেখে ভারত সরকার এখন থেকেই বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করেছে।ওই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবেই বৃহস্পতিবার দিল্লীতে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীর পৌরোহিত্যে উত্তর- পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিদ্যুৎমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিবদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে ত্রিপুরা থেকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ এবং দপ্তরের সচিব।
দিল্লী থেকে ফিরে শুক্রবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি বলেন,দেশের ইতিহাসে এতবড় সিদ্ধান্ত আর হয়নি। দেশে ক্রমবর্ধমান গ্যাস ও কয়লা সংকটের বিষয়টি মাথা রেখে এবং পরিবেশের কথা চিন্তা করে ২০৭০ সালের মধ্যে দেশে গ্যাস ও কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শূন্যে নামিয়ে আনতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন থেকেই সেই পরিকল্পনা রূপায়ণের কাজ শুরু করা হয়েছে।সেই লক্ষ্যে গোটা দেশে যত বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে,২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদার ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সোলার, গ্রিন এন্ড ক্লিন এনার্জিতে রূপান্তরিত করতে হবে।২০৩০ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লক্ষ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ত্রিপুরার জন্য টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০মেগাওয়াট।মন্ত্রী জানান, প্রথম ধাপে গোটা দেশের জন্য কুড়ি হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।এর মধ্যে ত্রিপুরা পাবে ১২ থেকে ১৪ কোটি টাকা।বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, আমাদের রাজ্যে অধিকাংশই গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট রয়েছে।যেমন বড়মুড়া, রুখিয়া, মনারচক,পালাটানা, আরসি নগর।একটিমাত্র হাইড্রো প্ল্যান্ট, সেটি ডম্বুর। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে গ্রিন ও ক্লিন এনার্জি উৎপাদনে কাজ শুরু করেছে।মন্ত্রী জানান,পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারী ও বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানে সোলার প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সব বাড়ির ছাদে, যেখানে ছাদ নেই সেখানে মাটিতে সোলার প্ল্যান্ট বসানো হবে। মন্ত্রী জানান, সোলার পার্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার পার্ক করতে ন্যূনতম ৫ একর জায়গা প্রয়োজন।আমাদের রাজ্যে এত জায়গা নেই। ত্রিপুরা রাজ্যে অধিকাংশই ফরেস্ট ল্যান্ড। তাই ত্রিপুরা সরকার থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেসব ফরেস্ট ল্যান্ডে গাছ নেই সেখানে সোলার পার্ক তৈরি করার।প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।এছাড়াও উইন্ড প্ল্যান্ট, জলে ভাসমান সোলার প্ল্যান্ট, হাইড্রো পাম্প স্টোরেজ, স্মল হাইড্রো প্ল্যান্ট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।মন্ত্রী জানান, ডম্বুর জলাশয়ে ভাসমান সোলার প্ল্যান্ট করা হবে।সব মিলিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভেবে গ্রিন এনার্জি উৎপাদনে অগ্রসর হতে হবে।এছাড়া কোনও উপায় নেই।পরিবেশকে রক্ষা করতে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে সকলকে এগোতে হবে বলে জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।