কাঠগড়ায় টিপিএসসি,টিইএস প্রশ্নপত্র নিয়ে বেকারমহলে তীব্র ক্ষোভ।

 কাঠগড়ায় টিপিএসসি,টিইএস প্রশ্নপত্র নিয়ে বেকারমহলে তীব্র ক্ষোভ।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে বেকার ইঞ্জিনীয়ারদের সাথে কি রসিকতা করলো রাজ্য সরকার ? রবিবার ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত টিইএস- ২৩ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঘিরে রাজ্যব্যাপী এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন বেকার ইঞ্জিনীয়াররা।রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম নিয়ম লঙ্ঘন করে ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষা শুধুমাত্র পূর্ত দপ্তরের জন্য করেও বসে থাকেনি টিপিএসসি।আজ আরও একধাপ এগিয়ে বেকারবিরোধী প্রশ্নপত্র করে দেখাল রাজ্য সরকার।

অভিযোগ ইউপিএসসি আয়োজিত ইঞ্জিনীয়ার সার্ভিস পরীক্ষা এবং গেট (GATE) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু টিইএস-২৩
পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ছাপিয়ে দিয়েছে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন।অভিযোগ টিইএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যারা ২০২৩ সালে তৈরি করেছেন তাদের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।যার খেসারত দিলেন রাজ্যের কয়েক হাজার বেকার ইঞ্জিনীয়ার ।

এক্ষেত্রে টিপিএসসি কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর টিইএস-এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ১০০ নম্বরে হয়। এরমধ্যে ২০ নম্বর জি.কে এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, ইংরেজি বিষয়ে হয়।আর বাকি ৮০ নম্বর ইঞ্জিনীয়ারিং-টেকনিক্যাল বিষয়ে হয়। শুধু তাই নয়, পরীক্ষার নিয়ম হল এই ক্ষেত্রে ৮০ নম্বরের মধ্যে মাত্র ১৫ নম্বরের প্রশ্ন অঙ্ক বিষয় থেকে থাকবে।পরীক্ষার সময় ২ ঘন্টা।আর ইঞ্জিনীয়ারিং- টেকনিক্যাল বিষয়ে একটি অঙ্ক সম্পন্ন করতে বেকারদের প্রায় ৫ মিনিট সময় লাগে। তাই সময় বাঁচাতে বেকারের স্বার্থে অঙ্ক বিষয়ে সর্বোচ্চ ১৫ নম্বর কিংবা অনেক ক্ষেত্রে মাত্র ৫ নম্বরও থাকতে পারে। টিইএস পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যায় না।এমনকী অনেক ক্ষেত্রে ক্যালকুলেটর দিয়ে পর্যন্ত ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিসের অঙ্ক ৫ মিনিটে সম্পন্ন অসম্ভব। তাই অঙ্কে নম্বর কম থাকে। যাতে বেকাররা দু-ঘন্টার মধ্যে ১০০ নম্বরের উত্তর লিখতে পারে। এটাই টিইএস পরীক্ষার নিয়ম।এই প্রথম টিইএস পরীক্ষার নিয়মকে কলাপাতায় পরিণত করা হয়েছে।প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরের ইঞ্জিনীয়ারিং-টেকনিক্যাল বিষয়ে প্রায় ৫৮ অম্বরের ছিলো অঙ্ক।মাত্র ২২ নম্বর ছিলো ইঞ্জিনীয়ারিং টেকনিক্যাল বিষয়ে।ফলে একটি অঙ্ক সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রায় ৫ মিনিটের প্রয়োজন।এই হিসেবে যেহেতু পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার নিয়ম নেই, তাই ৫৮টি অঙ্ক সম্পন্ন করতে একজন বেকার ইঞ্জিনীয়ারের প্রয়োজন প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা।যা বেকারদের কাছে ছিলো না।এইভাবে ডিপ্লোমার ক্ষেত্রেও অঙ্ক ছিলো ৫০ নম্বরের।ফলে টিইএস-২৩ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা কঠিন হয়েছে বলে অধিকাংশ বেকার ইঞ্জিনীয়ারই অভিযোগ করেছেন।প্রশ্ন উঠেছে, এদিকে কেন রাজ্যের বেকারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রশ্ন তৈরি করা হলো।এ প্রশ্নের উত্তর টিপিএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। ফলে বেকারদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অভিযোগ টিইএস-২৩ পরীক্ষার অনেক প্রশ্নে উত্তর পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ছিলো। রাজ্যের বেকারদের আরও অভিযোগ রাজ্যে ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের বেকারদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। শুধুমাত্র পূর্ত দপ্তরে ইঞ্জিনীয়ার পদে নিয়োগের জন্য হলো।এদিকে, রাজ্য মহাকরণ সূত্রে খবর Combined Recruitment Rule 2022 অনুযায়ী রাজ্যে সব দপ্তরের শূন্যপদে ইঞ্জিনীয়ার নিয়োগের জন্য টিপিএসসি মাধ্যমে একটি পরীক্ষা-টিইএস পরীক্ষা হবে। এই নিয়মে টিইএস-২৩ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পূর্ত দপ্তরের সাথে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে, পঞ্চায়েত, খাদ্য, আরক্ষা, বিদ্যুৎ সহ অন্য দপ্তরে ইঞ্জিনীয়ার পদে নিয়োগ হবে। যা এবছর লঙ্ঘন হয়েছে। রাজ্য সরকারের নিয়মে অন্যান্য দপ্তরের ইঞ্জিনীয়ার -পদগুলি আগামী কিছুদিনের মধ্যে অবলুপ্ত হয়ে যাবে।যদিও ২০১০-২০১৩-২০১৬ সালেও টিইএস পরীক্ষার মাধ্যমে পূর্ত দপ্তর,গ্রামোন্নয়ন দপ্তর সহ অন্যান্য এক সাথে ইঞ্জিনীয়ার পদের নিয়োগ হয়েছে।এমনকী রাজ্যে ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টিপিএসসি পরিচালিত টিইএস পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরে ইঞ্জিনীয়ার পদে প্রায় ১৭৭৫ জনকে নিয়োগ করা হয়। এরপর ২০১৭ সাল থেকে রাজ্যে এক অদৃশ্য কারণে ইঞ্জিনীয়ার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০১৫ সালের মধ্যে রাজ্যে ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজ ১০টি হয়ে যায়।আর এখন মাত্র ৪০০টি পদের জন্য হলো টিইএস পরীক্ষা।ত্রদিকে বেকারদের অভিযোগ,যে প্রশ্নপত্র করা হলো এর ভিত্তিতে অধিকাংশ যুবক-যুবতীর সরকারী চাকরির পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.