রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
ভোটের বাদ্যি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-পাঁচ রাজ্যে ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।উৎসবের মরশুমে পাঁচ রাজ্য মাতবে ভোট উৎসবে। রাজ্যগুলি হলো মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা এবং পূর্বোত্তরের মিজোরাম। মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৩০, রাজস্থানে ২০০, তেলেঙ্গানায় ১১৯, ছত্তিশগড়ে ৯০ এবং মিজোরামে ৪০।
পাঁচ রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ।ছোট রাজ্য মিজোরাম।রাজস্থানে ক্ষমতায় কংগ্রেস,মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি, ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস, মিজোরামে আঞ্চলিক দল এমএনএফ এবং তেলেঙ্গানায় বিআরএস দল ক্ষমতায়।গত ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিন রাজ্যে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস।ছত্তিশগড়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে জয়ী হয় কংগ্রেস।তেলেঙ্গানায় জয়ী হয় সে সময়কার আঞ্চলিক দল টিআরএস (বর্তমানে বিআরএস) এবং মিজোরামে জয়ী হয় আঞ্চলিক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট।এবারের ভোট এক অন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক মহল এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় যে জনমত সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে তাতে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বেশ মজবুত অবস্থানে রয়েছে কংগ্রেস।
বিজেপি বেশ চাপে রয়েছে সেই সমস্ত রাজ্যে। তেলেঙ্গানায়ও বিজেপির তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। আর মিজোরামকে কেউ গণনায় আনতে চাইছে না। কেননা মিজোরামের বিধানসভা ভোট জাতীয় রাজনীতিতে কোনও ছাপ ফেলবে না বলেই মিজোরাম ভোট নিয়ে মাতামাতিতে কেউ নেই।মধ্যপ্রদেশে গতবার কংগ্রেসই ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু সরকার গড়ার ১৫ মাসের মধ্যে সে রাজ্যে কংগ্রেস সরকারের পতন হয়েছিল।কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া প্রায় ২৫ জন কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।ফলে সে রাজ্যে কংগ্রেস সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে।পরবর্তীতে কংগ্রেস সরকার ফেলে দেবার জন্য জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে পুরস্কৃত করে কেন্দ্রীয় সরকার।
মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় জ্যোতিরাদিত্যকে।এবারও মধ্যপ্রদেশে বিজেপির মধ্যে প্রকাশ্যে অন্তর্কোন্দল দেখা দেওয়াতে বিজেপি শিবির বেজায় উদ্বিগ্ন।বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী খোদ শিবরাজ সিং চৌহানকে এখন পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদদের গণহারে টিকিট দেওয়া হচ্ছে রাজ্যে। ফলে স্বভাবতই বলা যায় মধ্যপ্রদেশে এবার বিজেপি প্রচণ্ড বেকায়দায় রয়েছে।প্রতিদিনই বিজেপির বহু শীর্ষনেতা কংগ্রেস শিবিরে ভিড়ছেন।ছত্তিশগড় নিয়ে কংগ্রেস খুব একটা ভাবিত নয়। ছত্তিশগড়ে গত পাঁচ বছরে ভালো কাজ হয়েছে।
ফলে ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা প্রবল। এমনকী বিভিন্ন মিডিয়ার জনমত সমীক্ষায়ও কংগ্রেসকে এগিয়ে রাখা হয়েছে ছত্তিশগড়ে।যদিও কংগ্রেসের আসন কিছুটা কমতে পারে। রাজস্থানে লড়াই হতে পারে সবচেয়ে জমজমাট। রাজস্থানে কংগ্রেসের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছে বিজেপি। বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে যে কেউ ব্রাজস্থানে জিততে পারে। কেননা রাজস্থানে গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের ঘরে অশান্তির কথা কারো অজানা নয়। তবে সে রাজ্যে বিজেপিও স্বস্তিতে নেই। বসুন্ধরা রাজ্যে সিন্ধিয়াকে নিয়েও বিজেপি শিবিরে স্বস্তি নেই।প্রধানমন্ত্রী যদিও রাজস্থানে গিয়ে দুর্নীতি ইস্যুতে কংগ্রেসকে বিঁধেছেন। শেষপর্যন্ত রাজস্থানে কে বাজিমাত করে সেদিকে রাজনৈতিক মহলের নজর থাকবে।তেলেঙ্গানায় অবশ্য ভিন্ন আঙ্গিকে ভোট হচ্ছে। তেলেঙ্গানা জন্মের পর থেকেই সে রাজ্যে শাসন করছে আঞ্চলিক দল টিআরএস। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের নেতৃত্বে সহিংস আন্দোলনের পরবর্তীতে তেলেঙ্গানা নামক পৃথক রাজ্যের জন্ম হয়েছিল। কংগ্রেস সে সময় দিল্লীতে ক্ষমতায়। কিন্তু তেলেঙ্গানা জন্ম দেওয়ার কোনওরকম সুবিধা কংগ্রেস ঘরে তুলতে পারেনি। তেলেঙ্গানায় এবার ধরে নেওয়া যাক ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। দক্ষিণের এই রাজ্যে বিজেপি প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে ঠিকই। তবে কতখানি বিজেপি সুবিধা করতে পারবে তা সময়ই বলবে। অন্যদিকে কংগ্রেসও দাবি করছে যে, ক্ষমতায় এবার কংগ্রেসই আসছে। তবে দক্ষিণের এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতার দখল কোন্ দল পাবে তা ৩রা ডিসেম্বর জানা সম্ভব হবে।পাঁচ রাজ্যের ভোট এবার কেন্দ্রের শাসকের কাছে চ্যালেঞ্জেরই। কেননা, ইন্ডিয়া নামক বিরোধী জোট নরেন্দ্র মোদিকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যদিও ছত্তিশগড়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানায় ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেসই বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করছে। কংগ্রেস সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছে, তারা চাইছে পাঁচ রাজ্যের ভোটে অন্য শরিকরা কংগ্রেসের পাশে থাকুক।প্রচারে অংশ নিক। ইন্ডিয়া জোটের কাছে বড় এবং প্রথম পরীক্ষা পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। মোদি বনাম ইন্ডিয়া জোটের লড়াই এবার পাঁচ রাজ্যের অন্যতম উপভোগ্য বিষয় হতে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা এখন পর্যন্ত যতটুকু দেখা যাচ্ছে পাঁচ রাজ্যে বিজেপির প্রচারের মুখ মোদিই।প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই পালা করে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানায় গিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।গত কয়দিনে একাধিকবার ছত্তিশগড়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রীকে সভা করতে দেখা গেছে এবং প্রচারের ধরনও অনেকটাই পাল্টে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এবার প্রধানমন্ত্রী বলছেন, এবার কোনও মুখ দেখবেন না, দলই হচ্ছে আসল।একটাই প্রতীক – – পদ্ম, একেই ভোট দিন। এতদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখে প্রচার চালাত বিজেপি। তাই এবার পাঁচ রাজ্যের ভোটে প্রমাণ হয়ে যাবে মোদি বনাম ইন্ডিয়া জয়ী হয় কারা।