পুজোর প্রাককথন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-এক পক্ষকালও বাকি নেই বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ পার্বণ দুর্গাপুজোর।আকাশে বাতাস তাই এখন শারদীয়ার গন্ধ। লতা ঢোক নেই এবাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ পার্বন গুমরো মুখে কিন্তু আকাশের গুমরো মুখে পুজো উদ্যোক্তারা চিন্তিত।
পুজোর পসরা নিয়ে যারা বসেছেন তারাও চিন্তিত। বরুণ দেবতা এবার কি একটু বেশিই রুষ্ট? প্রতিদিনই প্রায় পালা করে বর্ষণ হচ্ছে।যা পুজোর প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটাতে যথেষ্ট।শাস্ত্রমতে দেবীর আগমন হচ্ছে এবার ঘোটকে।
তেমনি গমনও ঘোটকে।এর অর্থ শাস্ত্রে লেখা রয়েছে ছত্রভঙ্গ পরিস্থিতি।গোটা বিশ্বের নিরিখে বলা যায় এক অস্থির পরিস্থিতি চলছে দেশে দেশে।মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয়েছে যুদ্ধের আগ্রাসন।যার প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা বিশ্বে। আমাদের দেশে সিকিমের পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় সর্বস্বান্ত অবস্থা ছোট্ট এই পাহাড়ি রাজ্যের।অর্থাৎ পুজোর মুখে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি গোটা সিকিমজুড়ে।এর প্রভাবে প্রভাবিত উত্তরবঙ্গও।স্বভাবতই মন ভালো নেই সিকিম সহ গোটা উত্তরপূর্ববাসীরও।আর কদিন পরই পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হবে গোটা বিশ্ব। বিশেষ করে বাঙালিপ্রধান রাজ্য এবং দেশে বিদেশে যেখানে বাঙালিরা থাকেন সেখানে দুর্গাপুজোর আয়োজন হয় বেশ ধুমধাম করে।আমাদের ছোট্ট রাজ্যের কথা যদি ধরা যায় তাহলে বলা যায়, গ্রাম ত্রিপুরায় পুজোর উন্মাদনা এবার নেই বললেই চলে। গ্রাম পাহাড়ে পুজোর প্রস্তুতি সে অর্থে এখনও শুরু হয়নি। আগরতলা শহরের কথাও যদি ধরা যায় তাহলেও এবার খুব একটা উন্মাদনা নেই পুজো নিয়ে।লাখোয়ারি বাজেটের পুজো উদ্যোক্তাদেরও পুজো প্রস্তুতি অনেকটা ম্যাড়মেড়ে।পুজোর বাজারেও ব্যস্ততা অনেক কম। শহর আগরতলারও যদি এই চিত্র হয় তাহলে গ্রাম ত্রিপুরার অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়।অথচ পুজো বছরে একবারই আসে। ছোট পুজো হোক কিংবা বড় বাজেটের পুজোই হোক, কিংবা বাড়িঘরের পুজোই হোক— পুজোর মুখে উন্মাদনা থাকতো তুঙ্গে।দিনদিনই যেন আধুনিকতার আড়ালে তা আজ হারিয়ে যাচ্ছে।এই অবস্থায় প্রশাসনের একটা গাছাড়া ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।শহর আগরতলায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি ভীষণভাবে প্রশ্নের মুখে। পুজোর মুখে শহর আগরতলার পরিষ্কারের উদ্যোগ কোথায়?চারিদিকে জঞ্জাল আর আবর্জনার স্তূপ। ওয়ার্ড কাউন্সিলারদের একটা উদাসীনতার ভাব।একই অবস্থা রাস্তাঘাটের।
রাস্তাঘাটের সারাই জরুরি পুজোর মুখে।কিন্তু রাস্তাঘাট সারাই হচ্ছে কই?একই অবস্থা রাস্তার আলোর ব্যবস্থা। রাজপথ হোক কিংবা গলিপথ হোক – রাস্তায় লাইটের দারুণ অভাব।বিদ্যুৎ নিগম কিংবা পুর নিগম — দৌড়ঝাপ কোথায়।বিদ্যুৎ নিগম তো এক কথায় রাজধানী সহ গোটা রাজ্যের মানুষের সাথে রসিকতা করে বেড়াচ্ছে।সম্প্রতি পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে বিভিন্ন ক্লাব কর্তারা এ নিয়ে নানা প্রশ্নে প্রশাসনকে বিব্রত করেছে।রাস্তাঘাটের যে অবস্থা রাজধানীর তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।এয়ারপোর্টের কাছে একটি পুজো উদ্যোক্তারা বড় বাজেটেরে পুজো করেন।এই উপলক্ষে প্রতি বছরই হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড় হয় এই রাস্তায়।শহর এবং শহরতলি থেকে প্রচুর মানুষজন ভিড় করেন এখানে।কিন্তু গত প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সড়কে রাস্তার কাজ হচ্ছে।কিন্তু কাজ হচ্ছে অত্যন্ত ধীরলয়ে।শুধু তাই নয়,বলা যায় বর্তমানে দুর্জয়নগর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এবং বড়জলার রাস্তাটি অন্যতম বিপজ্জনক রাস্তা হিসাবে পরিগণিত হয়েছে।প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে গাড়িঘোড়া চলতে হচ্ছে। প্রতিদিন যান দুর্ঘটনা ঘটছে এই রাস্তায়।পুজোর মুখে এই রাস্তা সারাইয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই।বরং যেটা করা যেতে পারে পুজোর মুখে রাস্তার কাজ আপাতত বন্ধ রাখাই শ্রেয়।পুজো উদ্যোক্তারা এই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।এছাড়া রাজধানীতে যে নেশার বাণিজ্য তাতে উৎসবের দিনগুলিতে লাগাম টানার জন্যও পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। রাজধানীতে প্রায়ই পুলিশি হানায় নেশার কারবারিরা ধরা পড়ছে।
নেশার করাল থাবা থেকে কোনও মতেই রক্ষা করা যাচ্ছে না যুবসমাজকে। উৎসবের মুখে তার লাগাম টানতেই হবে।না হলে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে লাগাম টানতে হবে।উৎসবের দিনগুলি যেন বিবর্ণ না হয়ে ওঠে তা দেখা প্রশাসনের কর্তব্য।