জিবির ‘জন্মদিনে’ নেই উৎসাহ উপস্থিতি দেখে উষ্মা মুখ্যমন্ত্রীর।

 জিবির ‘জন্মদিনে’ নেই উৎসাহ উপস্থিতি দেখে উষ্মা মুখ্যমন্ত্রীর।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজ ও গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ ক্ষোভের কথা চেপে ও রাখেননি।এই প্রসঙ্গে জিবি হাসপাতালের সঙ্গে তুলনা টানেন রাজ্যের অপর মেডিকেল কলেজ টিএমসির।পাশাপাশি সাধারণভাবে জন্মদিন পালনে ঘাটতি থাকলে তা মন কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে উল্লেখ করেন।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা জিবি হাসপাতালের তেষট্টিতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

রাজ্যের দ্বিতীয় প্রবীণ এবং প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা দিবস ঘিরে উৎসাহের অভাব টের পান মুখ্যমন্ত্রী।দেখেন সভাগৃহের বহু আসন ফাঁকা। তখনই জিবি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনে আয়োজকদের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। কথা বলেন, জিবি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়ে আগ্রহের অভাব নিয়ে।শনিবার ১৪ অক্টোবর জিবি হাসপাতালের তেষট্টিতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় কার্ল ল্যাণ্ড স্টেইনার সভাগৃহে। দেখা যায় সভাগৃহের বহু আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। নিজের ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা সরাসরি উল্লেখ করেন প্রসঙ্গটির।

মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে গুরুত্ব আরোপ করেন ইতিহাস সচেতনতার উপর। তিনি ঐতিহাসিক তথ্য তুলে ধরে জানান, ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জিবি নামে পরিচিত গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতাল।গোবিন্দ বল্লভ পন্থের ছেলে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী কৃষ্ণ চন্দ্র পন্থের হাত ধরে এর সূচনা হয়। তারপর জিবি হাসপাতাল ঘিরে রাজ্যবাসীর আগ্রহ বেড়েছে।এক সময় জিবি মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে। ডা. রথিন দত্ত ও ডা. হেমেন্দ্র শঙ্কর রায় চৌধুরীর মতো চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস যেন ভরপুর হয়ে উঠে। সর্বস্তরের চিকিৎসকদের মানুষের এই বিশ্বাস অর্জনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জিবি
হাসপাতাল বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসায় স্থাপন করেছে নয়া দৃষ্টান্ত।এ কারণে খোদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আলাদা মর্যাদা রয়েছে জিবির। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা বর্তমানে যথেষ্ট উন্নত। এই কারণে জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও বহি রাজ্যে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরিমাণ কমেছে।জিবি হাসপাতালে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সাতটি নতুন সুপার স্পেশালিটি সেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে। অধ্যাপক ডা. সাহা তার ভাষণে উল্লেখ করেন রাজ্যের চিকিৎসকদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে যথেষ্ট ক্ষমতা ও দক্ষতা রয়েছে।করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মাধ্যমে রাজ্যের চিকিৎসকরা এ কথা প্রমাণ করেছেন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি তার ভাষণে রাজ্যে নেশার প্রতি আসক্তি বাড়ছে বলে ইঙ্গিত দেন। বলেন, রাজ্য সরকার নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার কথা ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণা কার্যকরে নানা সঙ্কট রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।এ প্রসঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেন তিনি।বলেন,গভীর রাতে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে নেশাসক্তদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে জানান, হাসপাতাল অথবা চিকিৎসকের কাছে রোগী ও পরিজনরা বিপদগ্রস্ত অবস্থায় আছেন।তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বুঝতে হবে তাদের সমস্যা। তিনি জিবি হাসপাতাল করার সময় প্রয়াত কিরীট বিক্রম দেববর্মণের জমি দান করার কথা তুলে ধরে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তার ভাষণে উঠে আসে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রকল্পের কথা।তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রকল্প ও পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন অগ্রগতির খতিয়ান তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র কুমার সিন্হা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব ডা. সন্দীপ আর রাঠোর, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক, অধিকর্তা পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ ডা. অঞ্জন দাস, অধিকর্তা চিকিৎসা শিক্ষা ডা. হর প্রসাদ শর্মা, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ ডা. অনুপ কুমার সাহা ও সঞ্জীব কুমার দেববর্মা সহ মেডিকেল সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী অংশ নেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.