কেনাকাটার ঝড়ো ব্যাটিং পুজোর শেষ রবিবারে।

 কেনাকাটার ঝড়ো ব্যাটিং পুজোর শেষ রবিবারে।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পুজোর আগে শেষ রবিবার বলে কথা।স্বাভাবিকভাবেই ভারত-পাক ক্রিকেট ম্যাচের চেয়েও একটু বেশিই যেন উত্তেজনা ছিল আজ শহর আগরতলার জামা-শাড়ি-কাপড় দোকান থেকে শুরু করে জুতার দোকান এবং অবশ্যই কসমেটিক্স দোকানগুলি। তবে চুপি চুপি একটা কথা বলে রাখি। আজ দেখলাম রেকর্ড ভিড় শহরের নামী দামি বিউটি পার্লারগুলিতে। পুজো আসছে বলে কথা। একটু তো চুলের স্টাইল বা চেহেরার লুক্ বদল প্রয়োজন। কি সত্যি বলছি তো?আগামী শনিবার মহাসপ্তমী।তবে শাস্ত্রমতে ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন হলেও অনেক পুজোর প্যান্ডেল কিন্তু চতুর্থ বা পঞ্চমীতেই উদ্বোধন হয়ে যাবে। তাই আজ রবিবার মানে পুজোয় বেরুতে মাত্র তিন দিন মাঝে। তাই আজ সকাল থেকেই যেন শহর আগরতলা ভেঙে পড়েছিল কামানচৌমুহনী, মসজিদ পট্টি, সূর্যরোড, শকুন্তলা রোড, হরি গঙ্গা বসাক রোড, হকার্স কর্ণার এবং অবশ্যই শহরের বড় বড় শপিং মল গুলিতে।বিশ্বাস করেন, সকাল ১১ টায় শহরের এক বনেদি কাপড়ের দোকানে ঢোকার মতো সুযোগ পাইনি। রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন দুটি শপিং মলের সামনে যা ভিড় দুপুরে তাতে যে কোন ভি ভিআইপি নেতার জনসভার চেয়ে বেশি মানুষ যেন মনে হলো। একই অবস্থা দেখলাম গোটা হকার্স কর্ণার জুড়ে। সেই তুলনায় একটু দেরীতেই যেন জেগে উঠতে দেখা গেল মসজিদ পট্টিকে। সারা বছর বিক্রি বাট্টা হলেও প্রথা মেনে সেই পুজোয় চাই নতুন জামা, নতুন জুতো এই স্লোগান যেন আজ শহর আগরতলা আরও একবার প্রতিষ্ঠা করলো।তবে শহরের যারা পুরানো বা আদি বা সনাতনী কাপড় ব্যবসায়ী তাদের মুখে অবশ্য খানিকটা আক্ষেপের কথা শোনা গেল। তাদের কথা, মানুষ এখন প্রচার আর সস্তার দিকেই বেশি ঝুঁকছে। তাদের ইঙ্গিত যে শহরের বড় বড় শপিং মলগুলির দিকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা জামা বা একটা প্যান্ট বা একটা কুর্তির সঙ্গে যখন একটা ফ্রি পাওয়া যায় তখনতো স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষ সে দিকে ঝুঁকছে।শপিং মলগুলির ব্যবসার আসল রহস্য কিন্তু ওই একটির সাথে একটি ফ্রি।এদিকে তিনদিন পর পুজোর দেখতে রাজপথে নেমে পড়েছেন মানুষ। ফলে যাদের এখনো কেনাকাটা শেষ হয়নি আজ তারাই যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন। যদিও এখন সারা বছরই মানুষ কেনাকাটা করে।গোটা শহরে মূলতঃ ভারত পাক ক্রিকেট ম্যাচের চেয়ে বেশি উত্তেজনার কাটিয়েছে আজকের দিনটি। এবার পুজোর শপিং মল ছেড়ে দিলে অন্য দোকানিদের নাকি প্রত্যাশিত বিক্রি হয়নি। শহরের এক নামি কাপড়ের দোকানদার স্বীকার করলেন যে, গত কয়েকদিন কিছু বিক্রি বা কিছু ভিড় হলেও প্রত্যাশিত বিক্রি তাদের হয়নি। শহরের কিছু প্রসিদ্ধ কাপড় দোকানদার আছেন যারা ভালো জামা-কাপড় বিক্রি করেন। তাদের মতে, দামি ও কোয়ালিটি জিনিসপত্র বিক্রি যে হয়নি তা কিন্তু নয়। তবে প্রত্যাশিত নয়। আগে পুজোর জুতার পরিচিত দোকানে ভীষণ ভিড় হতো। এবছর যেন সেই ভিড়টা কম। এবারের পুজোর কিন্তু তেমন নতুন কোনও ফ্যাশন নেই। শপিং মলে অবশ্য রেডিমেড জামা কাপড়ের দাপট।সেই জিন্স আর টি-শার্ট।তবে মেয়েদের মধ্যে চাহিদার কিন্তু ব্যতিক্রম ভাবনা এবার দেখা গেছে।দোকানিরা জানান, প্রচুর সালোয়ার, পাটিয়ালা, টপ, কুর্তি এবার বিক্রি হয়েছে। তবে টিনএজার মেয়েদের পছন্দের শীর্ষ নাকি শার্ট- জিন্স বা ফরম্যাল ড্রেস। কুর্তি বা টপের চাহিদাও যেমন, ছেলেদের আদি যুগের সেই জিন্স, প্যান্ট, টি শার্ট আর কিছু কিছু হাইনেক গেঞ্জি, শাড়ির বাজারে এবার কিন্তু বেশ জোর প্রতিযোগিতা দেখা গেছে। টিসু বেনারসী, কোরা বেনারসী, তসর সিল্ক, গুজরাট স্টিচ্, কাঁথা স্টিচ, ইক্কত, বেঙ্গালুরু সিল্ক আর আদি তাঁতের শাড়ি।তবে একটু খারাপ লেগেছে সরকারী খাদির দোকানগুলিতে অনেকটাই ফাঁকা দেখে। আসলে সবাই যে ছুটছে বাই ওয়ান গেট ওয়ানের দিকে। হকার্স কর্ণার জুড়ে কিন্তু আজ যেন ২০:২০ ম্যাচ ছিল। বিশেষ করে কসমেটিক্স সাজগোজের দোকানগুলিতে।অল্পবয়সি মেয়ে থেকে শুরু করে মা মাসিদেরও কিন্তু দেখা গেল বেশ পছন্দ করে দামি কোম্পানির কসমেটিক্স কেনাকাটা করছেন। পুজো বলে কথা। একটু তো সাজগোজ দরকার।হকার্স কর্ণারের এক দোকানি অবশ্য জানালেন যে,আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও পুজোর সময় সেই কসমেটিক্স ও সাজগোজের সামগ্রীর কিন্তু চাহিদা ভীষণ।আর পুজোর আগে শেষ রবিবার।ফলে সবাই আজকের দিনটা পুরোপুরি সদ ব্যবহার করে নিলে বলা চলে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.