সাপের বিষ বিক্রি করেই ধনী চিনের এই গ্রাম।।
অনলাইন প্রতিনিধি :-সাপকে ভয় পায় না এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা।অথচ বছরে লক্ষাধিক বিষাক্ত সাপের ‘চাষ’ করেই যে কোনও অভিজাত শহরকে টেক্কা দিচ্ছে চিনের ঝেজিয়াং প্রদেশের জিসিকিয়াও গ্রাম। একদা এই গ্রামটি ভৌগোলিক ভাবে প্রত্যন্ত ছিল। কিন্তু সাপ এবং সাপের বিষ রপ্তানির সূত্রে চিনের যে কোনও বড় শহরকে ঠাটবাটে টেক্কা দিতে পারে জিসিকিয়াও। সাপের বিষের দাম সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই।
১ গ্রামে বিষের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৬ লক্ষ টাকা।সাপের বিষের দাম বস্তুত আকাশছোঁয়া।কারণ এই বিষ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে।অতিমারি শুরুর সময় চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, সেখানকার মানুষের বাদুড় খাওয়ার অভ্যাসের কারণে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে।যদিও এর সত্যতা প্রমাণিত হয়নি।তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাপের কাছে নতিস্বীকার করে চিন বিদেশি প্রাণী বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।তবে মজার ব্যাপার হল, চিনের ঝেজিয়াং রাজ্যের জিসিকিয়াও গ্রামে কিন্তু রমরমিয়ে সাপের চাষ চলছে। যেভাবে গ্রামে-গঞ্জে মুরগি বা ছাগলের চাষ হয়, সেভাবে জিসিকিয়াও ছাড়াও চিনের একাধিক গ্রামে সাপ পালন করা হয়। জিসিকিয়াওকে বলা হয় ‘স্নেক ভিলেজ’।
গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরেই চলে সাপের চাষ। প্রায় সত্তর বছর আগে এই গ্রামে সাপ পালন শুরু হয়েছিল। প্রতি বছর এই গ্রামে ৩০ থেকে ৫০ হাজার সাপের জন্ম হয়।সাপ প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদের বিদেশে বিক্রি করা সাপের চামড়া নয়, বিষাক্ত সরীসৃপটির তেল এবং বিষও চিকিৎসায় কাজে লাগে।আয়ুর্বেদে যেমন ভেষজ থেকে ওষুধ তৈরি করা হয়, একইভাবে চিনে এখনও ওষুধ তৈরি করা হয় সাপের বিষ থেকে।জিসিকিয়াও গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা হু জাও স্থানীয় সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ক্রেইট, পিট ভাইপার, র্যাটল স্নেকের চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি, কারণ তাদের বিষের মাত্রা বেশি। তবে কয়েক দশক ধরে কোবরাও এই ক্যাটাগরিতে এসেছে।এগুলিকে একসঙ্গে বি-ছয়া-শি বলা হয়।এই সাপগুলোর বিষ থেকে একটি মিশ্রণ তৈরি হয়।চিনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ওষুধ তৈরির পাশাপাশি সাপের মাংসও বিক্রি করা হয়। যদিও প্রতি বছর কতগুলি সাপ চিন ওষুধের কাজে ব্যবহার করে এবং কতগুলো বিদেশে বিক্রি করে, তার সুস্পষ্ট তথ্য বাইরে আসতে দেয়নি চিন।এই নিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র ওষুধ তৈরির জন্য চিনই বছরে ৫০ লাখের বেশি সাপ হত্যা করছে।