মানব পাচার ও ত্রিপুরা!!

 মানব পাচার ও ত্রিপুরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-র্বতমান ডাবল ইঞ্জিন সরকার যে শুধু প্রচারসর্বস্ব এবং বিজ্ঞাপনের বউপর ভর করে চলছে, তার আর একবার স্পষ্ট হলো।

শুধু তাই নয়, বর্তমান সরকারের আমলে সীমান্তবর্তী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, পুলিশি ব্যবস্থা এবং গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক, এই সবই বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে।বলা যায় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজ্য পুলিশকে ব্রাত্য রেখে ত্রিপুরার একাধিক জায়গায় জাতীয় তদন্তকারী এজেন্সির (এনআইএ) বিশেষ টিমের অভিযান এবং ত্রিপুরা থেকে ২১জন আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পর, রাজ্য আরক্ষা প্রশাসনের কঙ্কালসার অবস্থাটা ফের একবার প্রকট হয়ে উঠেছে। এই ঘটনা যে সীমান্তবর্তী রাজ্য ত্রিপুরার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তার জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং চিন্তাজনক তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গোটা দেশেই মুখ পুড়ছে ত্রিপুরা ও ত্রিপুরাবাসীর।

গোটা দেশেই মানব পাচারের করিডর এবং আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ‘ত্রিপুরা’ বলে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। এই নিয়ে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এতে বদনাম হচ্ছে ত্রিপুরার, ত্রিপুরাবাসীর। এনআইএ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এই রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক কতটা দুর্বল।অথচ এই রাজ্যের সরকার, সরকারের প্রতিনিধিরা, সরকারের প্রধান মাথা সুযোগ পেলেই পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অন্য রাজ্য থেকে অনেক ভালো বলে ঢোল বাজিয়ে প্রচার করছেন।কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আদতে কী? সেটা গত মঙ্গলবার গভীর রাতে এনআইএ স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। বলতে গেলে, একেবারে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়ে গেছে। রাজ্যের সরকার প্রধান, যিনি রাজ্য আরক্ষা দপ্তরেরও অভিভাবক, এনআইএ অভিযান নিয়ে তাঁর মুখে এখনো অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।এনআইএ অভিযান থেকে সবথেকে বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে, রাজ্যে গোয়েন্দা বিভাগের দুর্বলতা।এটি এখন সাইনবোর্ড সর্বস্বই বলা যায় ৷ তা না হলে এমন কাণ্ড দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে চলে কী করে? ভৌগোলিক দিক দিয়ে ত্রিপুরা আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী রাজ্য।স্বাভাবিক ভাবেই নানা কারণে এই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা অন্য রাজ্যগুলি থেকে আলাদা হওয়া জরুরি।ওই সব রাজ্যে পুলিশ এবং গোয়ন্দা সংস্থাগুলোকে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। সব কিছুর উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হয়। সীমান্তে এবং রাজ্যের অভ্যন্তরে সমস্ত সন্দেহজনক গতিবিধির উপর নজর রাখতে হয়। নিতে হয় আগাম ব্যবস্থা। কিন্তু কোথায় কী?ত্রিপুরা আন্তর্জাতিক মানব পাচার এবং আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে।এই খবর সবার জানা। এটা বি নতুন কিছু নয়।নেশার বিরুদ্ধে সরকার ও আরক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও, আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের একজন মাথাও পুলিশের জালে আটক হয়নি।একই অবস্থা মানব পাচারের ক্ষেত্রেও। যাদের পাচার করা হচ্ছে, তারা মাঝে মধ্যে ধরা পড়ছে। কিন্তু মাথারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।অথচ ওই মাথারা রাজ্যে বহাল তবিয়তে বসবাস করছে। এনআইএ যাদের তুলে নিয়ে গেছে ( ২১জন), এরা প্রত্যেকেই এই রাজ্যের বাসিন্দা। রাজ্য থেকেই এরা মানব পাচারের নেটওয়ার্ক চালিয়ে গেছে।রাজ্য পুলিশ এবং গোয়েন্দারা এদের টিকির নাগালও পায়নি।

শুধু মানব পাচার, মাদক পাচারই নয়, রাজ্যে বর্তমানে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা, নিগো বাণিজ্য, মাফিয়ারাজ, চুরি, মারাত্মকভাবে বেড়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সব মৃত্যুই কি আত্মহত্যা?কোথায় পুলিশি তদন্ত? কোথায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এসটিএফ ? কোথায় ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মতৎপরতা ? কোথায় গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ? যদি থাকতো, তাহলে এনআইএ-কে এই রাজ্যে অভিযানে আসতে হতো না বলে রাজ্যবাসীর অভিমত।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.