মহুয়া উবাচ !
অনলাইন প্রতিনিধি :-কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পর,এবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।মোদি পদবি নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জেরে আদালতের শাস্তি ঘোষণার পর সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছিল রাহুল গান্ধীকে।এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বহু তোলপাড় হয়েছে।শেষে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে রেহাই পেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। দেশের সর্বোচ্চ আদালত রাহুল গান্ধীর শাস্তি মকুব করে দেওয়ার পর,পুনরায় ফিরে পেয়েছেন সাংসদ পদ। এই নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতে, ফের একবার সরগরম হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গে কৃষ্ণনগর লোকসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র।‘ক্যাশ ফর কোয়ারি’ অর্থাৎ মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে লোকসভায় একের পর এক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।শুধু তাই নয়,তার বিরুদ্ধে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার মতো অভিযোগও রয়েছে।গত ক’দিন ধরেই মহুয়া মৈত্রের এইসব কর্মকাণ্ডে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি।জাতীয় লোকপালও মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।স্বাভাবিকভাবেই নিয়ম অনুযায়ী মহুয়ার বিরুদ্ধে সংসদের এথিক্স কমিটিতে অভিযোগ দায়ের হয়। যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিতে সংসদের এথিক্স কমিটি তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ বাতিলের সুপারিশে সিল মোহর দেয় হস্পতিবার। এথিক্স কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছয়জনের ভোট মহুয়ার স্বপক্ষে যায় এবং চার ভোট তার পক্ষে যায়।এই খবর প্রকাশ্যে বাসতেই জল্পনা তুঙ্গে উঠে।খবরে প্রকাশ,মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ লোকসভার স্পিকারকে পাঠাতে চলেছে এথিক্স মিটি।এদিকে আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতে যাবে। আগামী ৩ ডিসেম্বর পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল গণনা হবে।ধারণা করা হচ্ছে, এর পরই সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। সংসদের প্রথম দিনই স্পিকার মহুয়া মৈত্রের ইস্যুটি সংসদে উত্থাপন করতে পারেন। এরপর আলোচনা হবে, ভোটাভুটিও হতে পারে। সংখ্যার নিরিখে জয়ী হবে শাসক গোষ্ঠ।ফলে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হওয়া, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলা যায়।কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়।এর আগেও তিনি নানা বিতর্কে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন।এর আগেও বছর দুয়েক আগে তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন, সাংবাদিকদের উদ্দেশে আলটপকা মন্তব্য করে।তখন তিনি শুধুই সাংসদ ছিলেন না, একই সাথে তখন তিনি নদিয়া জেলার তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীও ছিলেন।একটি সাংগঠনিক সভায় তিনি সাংবাদিকদের দু’পয়সার’ সাংবাদিক বলে মন্তব্য করে ছিলেন।তার এই মন্তব্যে তখনও প্রচুর জল ঘোলা হয়েছিল।এবার তাঁর বিরুদ্ধে দু’ কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন উত্থাপন করার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। তিনি দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দু’কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ।তৃণমূল সাংসদ অবশ্য দাবি করেছেন, ওই ব্যবসায়ী তার বন্ধু।বন্ধুর কাছ থেকে তিনি নগর অর্থ নেননি।বিভিন্ন উপহার নিয়েছেন।তবে সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ নিয়ে মুখ খুলছেন মহুয়া নিজেও।তিনি বলেছেন, আমি খুব সম্মানিত বোধ করছি এই কারণে যে ইতিহাসে আমিই প্রথম,যাকে এথিক্স কমিটি আনএথিক্যালি (অনৈতিকভাবে) বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে।তার কথায়, ‘এথিক্স কমিটি কখনও বহিষ্কারের সুপারিশ করতে পারে না।এক্তিয়ার রয়েছে কেবলমাত্র সংসদের স্বাধিকার রক্ষা (প্রিভিলেজ) কমিটির।এখানেই থামেননি মহুয়া,শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দাবি করছেন, ‘তিনি ফের কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হবেন এবং দ্বিগুন ব্যবধানে জিতবেন’।এখন প্রশ্ন হলো,সাংসদ পদ খারিজ হলে, তিনি কি পরবর্তী লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন?এই প্রশ্নের জবাব পেতে আরও কয়েকমাস অপেক্ষা করতে হবে।তার আগে মহুয়া বিতর্কের জল কতুটুক গড়ায় ? সেটাই এখন দেখার।