“শাসকের গৃহযুদ্ধ চরমে”!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের অন্দরে কোন্দল নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই কোন্দল বর্তমানে চরম আকার নিয়েছে।
বিশেষ করে ড: মানিক সাহা দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর,কোন্দল ক্রমশ চরমে পৌছায়। বাইরে থেকে তেমন কিছু মনে না হলেও, দলের অন্দরে এককথায় বলা যায় গৃহযুদ্ধ চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে,শীর্ষ নেতা – নেত্রীরা কেউ কারো নাম মুখে নেওয়া তো দূরের কথা,একে অপরের মুখ দেখা দেখিতেও নারাজ।
ত্রিপুরা বিজেপির এই চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির খবর দিল্লীর কাছেও রয়েছে। দিল্লীর নেতৃত্বও সব কিছু জানে।
বিজেপি দলীয় সূত্রে খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ভয়ানক রাজনৈতিক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।একসময় বিপ্লব দেব যাদের অন্ধের মতো ভালোবাসতেন, অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন, যাদের পরামর্শে কাজ করতেন, তাদেরই কয়েকজনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে সূত্রের দাবী। যে কারণে আচমকা তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সরে যেতে হয়েছিল। যদিও,দিল্লীর শীর্ষ নেতৃত্ব পরে সেটা বুঝতে পারে বলে সুত্রের দাবি।
বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ড: মানিক সাহার বিরুদ্ধে সবথেকে বড় অভিযোগ, তিনি সকলকে নিয়ে একসাথে চলতে পারছেন না। দলের একটি বড় অংশকে এড়িয়ে তিনি নিজের মতো চলার চেষ্টা করছেন। এতে বিরোধ আরও চরমে উঠেছে। সেই বিরোধের বহিঃপ্রকাশ রাজ্যবাসী প্রায়ই লক্ষ্য করছে।
এতে মুখ্যমন্ত্রী ড: মানিক সাহার উপরেও যে চাপ বেড়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।মুখ্যমন্ত্রী ড: মানিক সাহার মুখে যেমন প্রকাশ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকের নাম উচ্চারণ করতে বা তাদের নাম নিতে শোনা যায় না, তেমনি ওই দুই শীর্ষ নেতা নেত্রীর মুখেও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর নাম শোনা যায়না। এই বিষয়গুলি রাজ্যবাসীর নজর এড়াচ্ছে না।সেই বিরোধের আরেকটি রূপ দেখা গেল, সদ্য উদয়পুর মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে দীপাবলি উৎসব উদ্বোধন কে কেন্দ্র করে ।
আমন্ত্রন পত্রে রাজ্যের তিন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, প্রতিমা ভৌমিক এবং রেবতী ত্রিপুরার নাম থাকা সত্ত্বেও, এরা কেউই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাননি। অথচ প্রত্যেকেই রাজ্যে ছিলেন। বিভিন্ন পূজো মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন রাতভর।
শুধু তাই নয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে রাতে একা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে এসেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব।
প্রতিমা ভৌমিকও একা গেছেন মাতাবাড়িতে। এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে এখন চরম গুঞ্জন চলছে। অনেকেই বলছেন,বিরোধ এবার চরমে পৌঁছেছে।
এখানেই শেষ নয়, গত চার পাঁচ মাস ধরে পূর্ব ত্রিপুরার সাংসদ রেবতী ত্রিপুরাকে আর সেইভাবে দলীয় কাজে দেখা যাচ্ছে না। পাহাড়ে এখন তাঁর তৎপরতা অনেকটাই কমে গেছে।
এখন পরিবারের সাথেই তাকে বেশি সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। তবে কি আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি পুনরায় টিকিট পাচ্ছেন না? এমন আভাষ কি তিনি পেয়ে গেছেন? তা না হলে তিনি আচমকা এমন গুটিয়ে গেলেন কেন? তবে সব ছাড়িয়ে রাজ্য বিজেপির ঘরে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, সেই যুদ্ধ অচিরে থামাতে না পারলে আগামীদিনে দলকে অনেক বড় মূল্য দিতে হতে পারে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।