তুলো দিয়ে ব্যাটারি, সঙ্গী সমুদ্রের জল, তৈরি করছে জাপান!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বিশ্বব্যাপী সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা। তার চেয়েও দ্রুত বাড়ছে ব্যাটারির চাহিদা। শক্তিশালী ব্যাটারি তৈরির অন্যতম কাঁচামাল লিথিয়াম আয়ন।কিন্তু সেই খনিজের ভান্ডার সীমিত।তার উপর খনি থেকে লিথিয়াম উত্তোলনে পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে।এতে প্রচুর জল ও জ্বালানিরও প্রয়োজন হয়। তাই গবেষক ও শিল্পোদ্যোগীরা লিথিয়াম আয়ন এবং গ্রাফাইট ব্যাটারির বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছেন।এই পরিস্থিতির বিকল্প ব্যাটারি তৈরি করে চমকে দিয়েছে জাপানের এক সংস্থা। তুলো থেকে শোষিত কার্বন দিয়ে তারা ব্যাটারি তৈরি করে কার্যত চমকে দিয়েছে।আরও আশ্চর্যের বিষয়, এই ব্যাটারির অন্যতম কাঁচামাল সমুদ্রের জল।ভিন্নধর্মী এই ব্যাটারি প্রস্তুতকারক জাপানি সংস্থা পিজেপি আই।কোম্পানির চিফ ইন্টেলিজেন্স অফিসার ইনকেতসু ওকিনা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে বলেছেন, ‘আমাদের এই ব্যাটারি তৈরির পদ্ধতি গোপনীয়।কত তাপমাত্রায়, কোন পরিবেশে এটি তৈরি করা হয় সেটি আমরা এখনই প্রকাশ্যে আনছি না।কারণ, সবটাই আমাদের গবেষকদের উদ্ভাবন।’তবে ওকিনা জানান, ৩ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এক কেজি তুলোকে পুড়িয়ে প্রায় ২০০ গ্রাম পর্যন্ত কার্বন পাওয়া যায়। আর তা থেকে এক-একটি ব্যাটারি তৈরি করতে প্রয়োজন হয় মাত্র ২ গ্রাম কার্বন। বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বছর দশেক আগে এই ব্যাটারি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।পিজেপি আই ২০১৭ সালে যে পরিমাণ তুলো কিনেছিল,এখনও তা দিয়েই চলছে বিকল্প ব্যাটারি উৎপাদনের কাজ।পিজেপি আই-এর সূত্র উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, বিকল্প এই ব্যাটারি তৈরি করতে অ্যানোড হিসেবে তুলো থেকে পাওয়া কার্বন ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে সাধারণ ব্যাটারি তৈরির সময় অ্যানোড হিসেবে মূলত গ্রাফাইট ব্যবহার করা হয়।পিজেপি আইয়ের মতে,গ্রাফাইটের পরিবর্তে কার্বন ব্যবহার বেশি সুবিধাজনক। শুধু তাই নয়, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি গ্রাফাইটের অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।ওকিনা জানান, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে ব্যবহৃত কোবাল্টের বেশিরভাগই কঙ্গোর খনি থেকে উত্তোলন করা হয়। সেখানে কাজের সার্বিক পরিবেশও বেশ বিপজ্জনক। সেখানে তুলো পুড়িয়ে ব্যাটারি উৎপাদনে সমুদ্রের জল, জৈববর্জ্য, ন্যাচারাল পিগমেন্ট প্রকৃতিতে বিদ্যমান এ ধরনের নানা বিকল্প ব্যবহার করা হচ্ছে।বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হওয়া জরুরি। চিনা সংস্থা গোছিয়া মূলত জাপানের হিটাচির সঙ্গে মিলে একটি ই-বাইক তৈরি করেছে যাতে পিজেপি আই নির্মিত এই বিকল্প ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে।এটি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে এবং এক চার্জে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ওকিনা।