আগরতলাজুড়ে মশার তাণ্ডব!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-শীতের মরশুম শুরু হতেই আগরতলা পুর নিগম এলাকায় মশার মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রব বেড়ে গেছে।আইজিএম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে।এমনিতেই আগরতলা পুর নিগম এলাকায় সারা বছরই মশার উপদ্রব থাকে। তারপর এখন নভেম্বরের এ সময় অল্প ঠাণ্ডা পড়তেই মশার যন্ত্রণায় পুর নাগরিকরা প্রচণ্ড অতিষ্ঠ।দিনের আলো গিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই মশার দল ঘরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে।ঘরবাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সব জায়গায় সন্ধ্যার পর মশার বাড়বাড়ন্ত মারাত্মক হয়ে উঠছে।মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, এনকেফেলাইটিস ইত্যাদি জটিল ও মারাত্মক রোগ হয়। কিন্তু রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলি অঞ্চলে মশার উপদ্রব এতটায় বেড়ে গেছে যে, মানুষ ঘরের ভেতর, বারান্দায় কোনও জায়গায়
মশার যন্ত্রণা থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না।আগরতলা পুর নিগমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে যে,পুর নিগম বাস্তব ও আন্তরিকভাবে মশার যন্ত্রণা ও উপদ্রব বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ বহু জায়গায় নালা অপরিষ্কার হয়ে পড়ে রয়েছে। নালায় দীর্ঘদিন ধরে ময়লা
জল আটকে রয়েছে। আবর্জনার স্তূপভজমে থাকছে।এসব জায়গায় মশা খুব সহজেই ডিম পেড়ে দ্রুত বংশবিস্তার করছে।মশার বংশবিস্তার রোধে ও মশার নিধনে সব জায়গায় এন্টি লার্ভা স্প্রে করা হচ্ছে না। ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে না।কোনও কোনওবজায়গায় এন্টি লার্ভা স্প্রে করা হলেও
নামকাউয়াস্তে করা হচ্ছে। ফগিং মেশিন দিয়ে মশা তাড়ানোর কাজও এখন বন্ধ রয়েছে। কোনও সময় শুধু ভিআইপি এলাকায় ফগিং মেশিন দিয়ে মশা তাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।তাতেই পুর নিগম এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার বাড়বাড়ন্ত।এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে মশার যন্ত্রণায় ও সম্ভাব্য রোগ থেকে পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে প্রতিটি বাড়িতে প্রচুর পকেটের টাকা খরচ করে মশা তাড়ানোর উপকরণ দোকান থেকে কিনে আনছেন।তাতেই প্রতি মাসে প্রতিটি পরিবারের মশার যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে মশা তাড়ানোর উপকরণ কিনে আনতে প্রচুর টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।এমনিতেই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য আকাশছোঁয়ার কারণে গরিব ও অল্প আয়ী মানুষের সংসারের খরচ মেটাতে জেরবার অবস্থা। তার মধ্যে আবার মশা তাড়ানোর উপকরণ প্রতিদিন কিনতে গিয়ে আর্থিক সংকট আরও বাড়ছে।পুর নিগম এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দাবি পুর নিগম যাতে সঠিক ও বাস্তবভিত্তিক মশা নিধনে ও উপদ্রব বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়।এদিকে পুর নিগমের এক আধিকারিক জানান, মশার উপদ্রব ও যন্ত্রণা বন্ধে পুর নিগম কাজ করছে।নালা, নর্দমা, আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে।পুর নিগমের ওই আধিকারিক আরও জানান,বহু বাড়ি আছে যে সেসব বাড়িতেই আবর্জনার স্তূপ জমে থাকছে। বাড়ির ভেতর ছোট ছোট নালায় দীর্ঘ দিন ধরে ময়লা জল আটকে থাকছে।তাতেও মশা বংশবিস্তার করছে। বাড়ির মালিক সঠিকভাবে এসব বিষয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে মশা বংশবিস্তার করার সুযোগ পায়।পুর নিগমের ওই আধিকারিকের দাবি সকলে যদি যার যার বাড়িঘর ও বাড়ি প্রাঙ্গণ নিয়মিত ও সঠিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বজায় রাখেন তাতে মশার উপদ্রব অনেকটা কমে যাবে। এদিকে জিবি হাসপাতাল ও আইজিএম হাসপাতালেও মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।জিবি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম হলেও রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র আইজিএম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কেবল বাড়ছে।জিবির মেডিকেল সুপার বৃহস্পতিবার জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গুর রোগী এখন কম।ভর্তি আছেন ৭-৮ জনের মতো।কিন্তু আইজিএম হাসপাতালে খবর নিয়ে জানা গেছে, শুধু নভেম্বর মাসেই এখন পর্যন্ত মেডিসিন বিভাগে ৫৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগে নভেম্বরে এখন পর্যন্ত ১৬ জন ভর্তি হয়েছে। তবে ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি বলে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দাবি।ডেঙ্গুতে আক্রান্তরা আড়ালিয়া, রামনগর, যোগেন্দ্রনগর, অভয়নগর, ধলেশ্বর সহ আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন।আগরতলার বাইরে থেকেও ডেঙ্গুতে আক্রান্তর আসছেন বলেও হাসপাতাল তরফে দাবি।তবে দুটি হাসপাতালেরই দাবি ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত নেই।