সেমিফাইনাল!!

 সেমিফাইনাল!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাঁচ রাজ্যের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। এবার ফলাফলের পালা।তবে ফলাফলের আভাস ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে।এই ভোটকে অনেকেই সেমিফাইনাল বলে মনে করছে।যে পাঁচ রাজ্যে ভোট হয়েছে এই রাজ্যগুলি হচ্ছে গোবলয়ের তিন রাজ্য ছত্তিশগড়,মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং দক্ষিণের রাজ্য তেলেঙ্গানা, অপর রাজ্য উত্তরপূর্বের রাজ্য মিজোরাম। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, সবচেয়ে ছোট রাজ্য মিজোরাম।মিজোরামের জাতীয় রাজনীতিতে ইমপেক্ট নেই বললেই চলে।এই রাজ্যে ভোট প্রচারে বিজেপি তাই কোনও গুরুত্বই দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিজোরামে ভোট প্রচারে যাননি।অন্যদিকে বাদবাকি চার রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাবড় বিজেপি নেতারা প্রচারে গেছেন।যে রাজ্যগুলিতে ভোট হয়েছে সেই রাজ্যগুলিতে বিজেপির প্রতিপক্ষ হিসাবে কংগ্রেসই প্রধান শক্তি।তাই এই ভোটে বিজেপি বিরোধী জোট হিসাবে ইন্ডিয়া অনুপস্থিত।মধ্যপ্রদেশে গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিলো।কিন্তু পনেরো মাসের মধ্যেই সেই রাজ্যে কংগ্রেস থেকে ক্ষমতা নিজেদের দিকে নিয়ে নেয় বিজেপি।এবার মধ্যপ্রদেশে শুরু থেকে চাপে ছিল বিজেপি।বেশ কয়েক দফা ভোটের প্রার্থী দেবার পর একেবারে শেষদিকে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে দল টিকিট দেয় এবং এই নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী, বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হয়নি।তেমনি টিকিট দেওয়া হয়েছে বহু সাংসদকে।মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাউকে প্রজেক্টও করেনি বিজেপি।বিজেপির অন্দরের অবস্থাটা বেশি সুবিধাজনক ছিল না। ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের বেশি সময় দিতে হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। রাজ্য ধরে রাখাটা বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জের।যদিও ভোট শেষে বিভিন্ন জাতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছে তাতে মধ্যপ্রদেশে অধিকাংশ চ্যানেলগোষ্ঠী বিজেপিকেই এগিয়ে রেখেছে।তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, মধ্যপ্রদেশে যে কেউ জিততে পারে। অবস্থা ৫০-৫০ দাঁড়িয়ে রয়েছে।বিজেপির অবস্থা রাজস্থানেও অনেকটা একই রকম। শাসক কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতান্তর সবার জানা সে রাজ্যে।কিন্তু এরপরও মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট নিজেই একটা ফ্যাক্টর।বিজেপির ক্ষমতায় আসা এবং কংগ্রেসের ক্ষমতা ধরে রাখা -এর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে রয়েছেন অশোক গেহলট।কংগ্রেস যদি সে রাজ্যে জয়ী হয় তাহলে এর পুরো কৃতিত্ব যাবে অশোক গেহলটের উপর।যদিও রাজস্থানের ভোটের পর বিভিন্ন চ্যানেল সমীক্ষকদের বেশিরভাগই বিজেপিকে এগিয়ে রেখেছে।এক্ষেত্রেও স্পষ্ট জনাদেশ নেই বিভিন্ন চ্যানেলগোষ্ঠীর তরফে।এ রাজ্যেও অবস্থা ৫০- ৫০ হয়ে রয়েছে।যে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারে।ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানায় অবশ্য স্পষ্ট আভাস মিলেছে সমীক্ষায়। সবচেয়ে চমক থাকতে পারে এবার তেলেঙ্গানায়।দক্ষিণে যদি শেষ পর্যন্ত বিআরএসের পতন হয় এবং কংগ্রেস সরকার গঠিত হয় তাহলে কর্ণাটকের পর দক্ষিণের আরেক রাজ্য দখলে সমর্থ হবে কংগ্রেস।দক্ষিণের এই রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ সবার মুখে মুখে।গত দশ বছর তেলেঙ্গানা জন্মের পর থেকে বিআরএসই রাজ্যের ক্ষমতায়।দিল্লীতে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীনই তেলেঙ্গানার জন্ম হয় ২০১৩ সালে।কিন্তু ২০১৪ সালে কিংবা ২০১৮ সালে এর কোনও ফায়দা তুলতে পারেনি কংগ্রেস।ফলে এবার কোমর বেঁধে আগেভাগেই ময়দানে নামে কংগ্রেস।যার সুফল পেতে চলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস প্রথম থেকেই কনফিডেন্ট তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে। বিভিন্ন চ্যানেল সমীক্ষক গোষ্ঠীই কংগ্রেসকে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা দিয়েছে।একইভাবে ছত্তিশগড়েও কংগ্রেস নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাচ্ছে – সব চ্যানেল গোষ্ঠীই তাদের এগজিট পোলে জানিয়েছে।তবে কংগ্রেসের সিট অনেক কমছে।মিজোরামে অবশ্য কোনও দলই গরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বলে আভাস মিলেছে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস সে রাজ্যে নির্ণায়ক শক্তি হতে পারে।পাঁচ রাজ্যের এই ভোটের ফলাফল আগামী বছর লোকসভা ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে চলেছে।গত ২০১৮-এর নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে কংগ্রেস জিতেছিলো।তেলেঙ্গানায় বিআরএস।এরপরও বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হয়েছিলো ২০১৯ সালে।যদিও এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন।বিজেপির ঘাড়ে এবার নিশ্বাস ফেলছে কংগ্রেস।এনডিএ-কে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি হয়েছে ইন্ডিয়া। স্বাভাবিকভাবে এবার ২০২৪ -এ ভোট বৈতরণী পার হতে বিজেপিকে অনেক ‘যদি’, ‘কিন্তু ইত্যাদির উপর ভরসা করতে হবে।ফলে পাঁচ রাজ্যের ভোট সেমিফাইনাল। দক্ষিণে কেন্দ্রের শাসক দলের অস্তিত্ব নেই।রাজ্যগুলিতে বিজেপি কি তাই কেবল ফের গো বলয়ের দল হিসাবে গণ্য হতে যাচ্ছে?কিছুটা উপরি পাওনা উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.