পাহাড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কালো চিতাবাঘ, আতঙ্কে হোম-স্টে ছাড়ছেন পর্যটকরা!!

 পাহাড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কালো চিতাবাঘ, আতঙ্কে হোম-স্টে ছাড়ছেন পর্যটকরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-সপ্তাহ খানেক ধরে কার্শিয়াংয়ের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি কালো চিতাবাঘ। কার্শিয়াংয়ের ডাউহিল হোম-স্টের জন্য বিখ্যাত। কার্শিয়াং ছেড়ে সেই কালো চিতা বা প্যান্থারকে দেখা গিয়েছে কালিম্পঙের লাগোয়া বাগোরা এবং দিলারামেও। গোটা এলাকা এখনও আতঙ্ক কাপছে।
জিপ কিংবা মোটরবাইকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে অনেকে দেখেছেন, আলো দেখে একবার পিছন ফিরে তাকিয়েই নিমেষে পাহাড়ের ফাঁকে এক লাফে আড়ালে চলে যাচ্ছে। কয়েকটি হোম-স্টের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে প্যান্থারের ছবি। যাকে দেখে বন আধিকারিকরা নিশ্চিত পূর্ণ বয়স্ক চিতাবাঘ সেটি। এক বনকর্তা জানালেন, পাহাড়ি এলাকায় চিতাবাঘের দেখা পাওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু যেহেতু তার নিকষ কালো শরীর, তাই আতঙ্ক আরও বাড়ছে। ক্যামেরায় যে রাতের ছবি ফুটে উঠেছে তাতে কেবল জ্বলজ্বল করছে প্যান্থারের দু’টি চোখ।
চিতার আতঙ্কে ভয়ে কাটা এলাকার বাসিন্দারা। অনেকেরই বাড়ির পোষা মুরগি উধাও হয়ে যাওয়ার খবর এসেছে বন দপ্তরে। বনকর্তারা এখনও আশ্বাস দিয়ে বলছেন, ‘এতটা আতঙ্কের কিছু নেই। অঢেল খাবারের জোগান থাকলে চিতাবাঘ সচরাচর মানুষের উপরে হামলা করে না। আর পাহাড়ি এলাকায় সেটা যথেষ্ট পরিমাণেই রয়েছে।কিন্তু সে কথা শুনছে কানে তুলছেন না এলাকাবাসী। ডাউহিলের এক হোম স্টের মালিক যুধিষ্ঠির শর্মা বলেছেন, ‘হোম-স্টেতে রাত কাটাতে আসা পর্যটকদের রাতে বার হতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।’ কার্শিয়াং শহরের বাসিন্দাদের কাছে ডাউহিলই তাদের ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু। অনেকেই রাতের আকাশ দেখতে সন্ধ্যা নামতেই ডাউহিলের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। হোটেল এবং হোম-স্টের মালিকেরাও এখন পর্যটকদের দিনের আলো ফুরলে রাস্তায় যেতে নিষেধ করছেন। আর এই খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগে নি। রাতে দূষণহীন আকাশ দেখতে না পারার যন্ত্রণা তার সঙ্গে প্যান্থারের আতঙ্কে বুকিং বাতিল করছেন শয়ে শয়ে পর্যটক।ডাউহিল এলাকা বন দপ্তরের ভাষায় ‘টেরিটোরিয়াল এরিয়া’। সহজ ভাবে বললে; বন দপ্তর ঘোষিত কোনও সংরক্ষিত অরণ্য নয়। কিন্তু পাহাড়ে অরণ্যের বিস্তার ভালো করে খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, ডাউহিল আসলে সিঞ্চল অভয়ারণ্যের বর্ধিত এলাকা। ফলে সারা বছরই এই এলাকায় বুনো মুরগি, শুয়োর ঘুরে বেড়ায়। কখনও সখনও চিতাবাঘও দেখা যায়। কিন্তু চিতাবাঘের রং কালো হওয়াতেই যত বিপত্তি। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে প্রশাসন চিতাবাঘের কালো রূপেই তটস্থ। প্রশাসনের তরফে রীতিমতো মাইকিঙ করে ঘোষণা করা হচ্ছে যাতে সন্ধ্যার পরে ঘরের বাইরে কেউ বার না হন। দিনের বেলাতেও বাচ্চাদের ঘরের বাইরে না রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।কাজ সেরে যাদের ফিরতে রাত হচ্ছে, তাদেরকেও বাড়ি পৌঁছে দিতে বন দপ্তর জিপ দিচ্ছে। তাও আবার একা কাউকে জিপে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। জনা ছয়েক স্থানীয়কে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি ছাড়ছে। ডাউহিল জুড়ে নামী হোটেল থেকে হোম-স্টের ছড়াছড়ি। রয়েছে দু’টি সরকারি স্কুল এবং হস্টেল। দার্জিলিংয়ে এড়িয়ে যাঁরা নির্জন পাহাড়ে সময় কাটাতে যান তারা প্রায় সারা বছরই ডাউহিলে বেড়াতে আসেন। কালো চিতাবাঘের কথা শোনার পরে সন্ধ্যা নামার অনেক আগেই গ্রামের নির্মল পরিবেশ ফেলে শহরে ফিরে আসছে। কার্শিয়াংয়ের ডিএফও হরিকৃষ্ণ পি জে বলেছেন, ‘কালো চিতাবাঘটি কেবল ডাউহিলই নয়, বাগোরা এলাকাতেও ঘোরাফেরা করছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.