ভাড়া গুনতে নাভিশ্বাস!!

 ভাড়া গুনতে নাভিশ্বাস!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :কেন্দ্রীয় সরকারের অসারিক বিমান পরিবহন মন্রক যাত্রী পরিষেবার নামে বিমান যাত্রীদের সঙ্গে রীতিমতো রসিকত শুরু করেছেন। দেশের বিভিন্ন বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলো মর্জিমতে যাত্রী পিছু বিমান ভাড়া নির্ধারণের নামে তুঘলকি ব্যবসা শুরু করেছে।কেন্দ্রীয় সরকার তো বহুদিন আগেই দেশের একমাত্র রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রি বিমান পরিবহণ সংস্থা ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স যা পরবর্তী সময়ে এয়া ইন্ডিয়া নামে পরিচিত হয়েছে,তার মূলধন- মালিকানা বেসরকার সংস্থার হাতে তুলে দিয়ে ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দা সেজে বসে আছে।আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমস্ত বিমান সংস্থাগুলো বিমানের যাত্রী টিকিটের ভাড়া পূর্বের তুলনায় কয়েকগু বাড়িয়ে দিয়ে হরিনাম সংকীর্তনের লুঠের বাতাসার মতো যে যার খুশ বিভিন্ন চড়া হারে বিমানের টিকিট বাবদ সাধারণ মানুষের পকে কাটছে।একদিকে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক নামকা ওয়াস্তে মন্ত্রক সামলালেও এবং এই মন্ত্রকের দায়িত্বে একজন মন্ত্রী এবং মাথাভারী প্রশাসন থাকলেও মন্ত্রকের নিজস্ব বিমান নেই। এমন কি বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলোর বিমানে যাত্রী ভাড়া বাবদ টিকিটের দাম কত পড়বে তার উপর ন্যুনতম নিয়ন্ত্রণ আরোপের মতো কোন এক্তিয়ার মন্ত্রকের নেই। কারণটা হলো,২০২৩ সালে কোভিড অতিমারি সময় কেন্দ্রের তরফ থেকে বিমানসংস্থাগুলোর উপর নির্দিস্ট এয়ার ফেয়ার (Airfare)বসানো হয়েছিল। কিন্তু গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে আগষ্টে সরকারের তরফ থেকে এই এয়ার ফেয়ার তুলে নেওয়া হয়।আর এই এয়ার ফেয়ার প্রত্যাহার করার পরই বিমানের টিকিটের যাত্রী ভাড়ার উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বিমান সংস্থাগুলোর হাতে চলে যায়। এর অর্থ হলো বিমান সংস্থাগুলো যে ভাড়া নির্ধারণ করবে,যাত্রীদের সেই ভাড়াতেই ভ্রমণ করতে হবে। কেন্দ্রের এই একতরফাভাবে এয়ার ফেয়ার তুলে নেওয়ার ঘটনায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে গত প্রায় ১ বছরে। এতদিন পর্যন্ত বিমানের ভাড়ার বিষয়ে, কোম্পানিগুলোকে কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে চলতে হতো। এখন থেকে আর সে নিয়ম কার্যকর হচ্ছে না।বিমান টিকিটের ভাড়ার পুরো বিষয়টিই এখন থেকে কোম্পানিগুলোর হাতে।যে কারণে গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে বিমানভাড়া লাগামহীনভাবে বাড়ছে।প্রশ্ন হলো কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের হাতে যদি টিকিটেরনভাড়া নির্ধারণের কোণও এক্রিয়ারই না থাকে,তাহলে টেবিলে সাজানো ফুলের তোড়ার মতো অহেতুক এই মন্ত্রকটি রেখে লাভ কী?আগে থেকেই সবেমাত্র নীলমণি ধন এয়ার ইন্ডিয়াও বিক্রি হয়ে গেছে।বিমান বন্দরগুলোর দায়িত্ব কর্পোরেট সংস্থাগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।লক্ষ্যণীয় হলো, আগরতলা-কলকাতা রুটে আকাশপথে দূরত্ব ৩২৭
নটিক্যাল মাইল।অথচ এত কম দূরত্বের এবং প্রায় ৪৫ মিনিটে সময়েরনউড়ানের জন্য যাত্রীপিছু ভাড়া নেওয়া হচ্ছে লাগামছাড়া।যা কখনো
কখনো আগরতলা-দিল্লী রুটের ভাড়াকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে।যদিও বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলোর তরফে প্রায়ই বলা হয়।শুধু দূরত্ব দিয়ে বিমানের ভাড়া বিবেচনার সুযোগ নেই।কিন্তু ত্রিপুরাবাসীর বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো,সবসময়- এই পথেই (আগরতলা-কলকাতা)
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।বিমান সংস্থাগুলো যতই দাবি করুন না কেন, সব রটে একভাবে ভাড়া হিসাব করার সুযোগ নেই।কারণ পার্কিং, ল্যান্ডিং, সিকিউরিটি,রুট নেভিগেশন, ফুয়েল প্রাইস, এয়ার ক্র্যাফটিং লিজিং মানি, পাইলট-ক্রুদের বেতন ভাতা এবং বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স একসঙ্গে জুড়ে দিয়ে তারপর বিমান টিকিটের ভাড়া ঠিক করা হয়।আবার একথাও বলা হয়, কোনও রুটে যদি ভাড়া বেশি হয়ে থাকে তাহলে সেটার অতিরিক্ত আদায় দিয়ে আরেকটি রুটে সাবসিডি দেওয়া হয়। আগরতলা-কলকাতা রুটের ক্ষেত্রেও ঘটছে এই পরিস্থিতি। এই রুটে যাত্রী ভিড় বেশি এবং দূরত্ব ও সময় দুটোই কম।আর একে কাজে লাগিয়ে বিমান সংস্থাগুলো অমানবিকভাবে এ রাজ্যের মানুষের পকেট কাটছে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বিগত দিনগুলোতে বামেদের টানা শাসনকালে বিমানের টিকিটের অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধির নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিবহণমন্ত্রী, মুখ্যসচিব সকলেই দিল্লীতে দৌড়ঝাপ করে বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতেন।কিন্তু বর্তমান সময়ে এরকম কোনও উদ্যোগবনেই।নিন্দুকেরা বলেন, যেটা আছে, সেটা কেবলই ঢক্কা নিনাদ।এই
মূহূর্তে বিমান ভাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে রেল ভাড়াও। রাজ্যবাসীর এই অসহায় অবস্থায় প্রশাসন ও সরকারের নির্বিকল্প ভূমিকার কারণেবএকমাত্র ঈশ্বরই ত্রিপুরাবাসীর একমাত্র আশ্রয়ও ভরসাস্থল।কারণ
সখের সফর করতে এই রাজ্যের সবাই আকাশপথে হিল্লী দিল্লী করেন না।মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা,উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে,জরুরি বিশেষ
পরিস্থিতিতেই রাজ্যবাসীকে বিমানে বহিঃরাজ্যে পাড়ি দিতে হয়।কিন্তু বিপন্ন অসহায় দমবন্ধ দশা মানুষের এই চরম ও অবর্ণনীয় অবস্থা থেকে
উত্তোরণের পথ কীভাবে মিলবে সেটাই বড় জিজ্ঞাস্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.