মেডিক্যাল হাব গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে সরকার : মুখ্যমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান সরকার রাজ্যে মেডিক্যাল হাব গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।বহিঃরাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা রাজ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
প্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করছে।অনেকে মেডিকেল কলেজ খোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে অনেকগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ উন্নত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রবিবার আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে জাতীয় দন্ত চিকিৎসক দিবস উদযাপন ও ২২ তম বার্ষিক দন্ত সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা একথা বলেন।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার সামগ্রিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনার মতো মুখ্যমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনা রূপায়ণের উদ্যোগ নিয়েছে।এজন্য বাজেটে বছরে ৫৯ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।তাছাড়া রাজ্যের ১০০টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্যও বাজেটে সংস্থান রাখা হয়েছে।উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা
সম্প্রসারণে ধলাই জেলা হাসপাতালে একটি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট খোলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এদিনও নিজের চাকরি জীবনের সংগ্রাম ও তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও অনুষ্ঠানেমেলে ধরেন।বাম জমানায় কাজের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডেন্টাল সার্জনদের মর্যাদা ছিল না।বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বর্তমানে তা অর্জিত হয়েছে।ক্ষুদ্র স্বার্থ এবং লাভালাভের প্রশ্নে এই মর্যাদা খর্ব করা সমীচীন হবে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন উল্লেখ করেন।তিনি বলেন,রাজ্যের দন্ত চিকিৎসকদের মানুষের জন্য দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে হবে।দেশাত্মবোধের ভাবনাকে প্রাধান্য দিতে হবে। ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগ্রাম, ন্যাশনাল হেলথ মিশন ত্রিপুরা ও ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা গভর্নমেন্ট ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের মধ্য দিয়ে রাজ্যবাসীর একটি দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।রাজ্যের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক।এই কলেজের পরিকাঠামো অন্যান্য রাজ্যের ডেন্টাল কলেজের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়।মুখ্যমন্ত্রী বলেন,এই ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের যন্ত্রগুলিকে নিজেদের মতো করে ভাবতে হবে।হাসপাতালকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সকলের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই ডেন্টাল কলেজটি আগামীদিনে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। রাজ্যে দত্ত চিকিৎসকদের অধিকার ও আত্মসম্মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যাদের অবদান রয়েছে তাদের আজ সম্মান ও স্মরণ করার দিন বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।উল্লেখ্য,প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক তথা ভারতরত্ন ডা. রফিউদ্দিন আহমেদের জন্মদিনে জাতীয় দন্ত চিকিৎসক দিবস হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. রফিউদ্দিন আহমেদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা রাজ্যের ডেন্টাল কলেজের ফ্যাকাল্টিদের উদ্দেশ্যে বলেন,এমন কিছু করে যেতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়।শিক্ষার্থীদের কাছে একজন আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নতুন নতুন দন্ত চিকিৎসা বিষয়ক বৈজ্ঞানিক উন্নতিগুলি সম্পর্কেও দন্ত চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।জাতীয় দন্ত চিকিৎসক দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক রাণা বলবীর জংকে সংবর্ধনা জানানো হয়। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর, ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের ত্রিপুরা শাখার সম্পাদক ডা. সজল নাথ,অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সমীর রঞ্জন দত্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন কুমার দাস এবং মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা ডা. এইচপি শৰ্মা উপস্থিত ছিলেন।স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপঅধিকর্তা (ডেন্টাল) ডা. রাজেশ অনিল আচার্য।ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সম্পাদক ডা. সুজিত কুমার রায়।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন।কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগ্রামে ত্রিপুরার ডেন্টাল সার্জনদের দুদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।এছাড়া অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মসূচিসমূহ এবং আগরতলা সরকারী ডেন্টাল কলেজের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। জাতীয় দত্ত চিকিৎসক দিবস উদ্যাপন ও ২২তম বার্ষিক দত্ত সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডা মানিক সাহা প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।