ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট মেটাতে পর্ষদের নানা সিদ্ধান্ত!!

 ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট মেটাতে পর্ষদের নানা সিদ্ধান্ত!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্তের সংকট কীভাবে সারা বছর দূর করা যায় ও স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে
ঘাটতি পূরণে সেই বিষয়ে মঙ্গলবার দিনভর প্রজ্ঞাভবনে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যণ দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত বৈঠকে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডা.সন্দিপ রাঠোর, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ইনচার্জ অধিকর্তা ডা.
জুবিলি দেববর্মা, ত্রিপুরা রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের ডা. বিশ্বজিৎ দেববর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।বৈঠকে আগরতলা সহ গোটা রাজ্যে কিভাবে আরও বেশি সংখ্যার স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির করার মাধ্যমে হাসপাতাল গুলির ব্লাড ব্যাঙ্ককে রক্ত মজুত করা যায় তার উপর জোর দেওয়া হয়।বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কলেজও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন সমিতি, সংগঠন, ক্লাব, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির করার জন্য উৎসাহ প্রদানের জোর দেওয়া হয়।বৈঠকের পর ত্রিপুরা রাজ্যে রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের মেম্বার সেক্রেটারি ডা. বিশ্বজিৎ দেববর্মা জানান, ২০২৪ সালে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে ৪২ হাজার ইউনিট রক্ত জোগান দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।রাজ্যের জনসংখ্যা ৪২ লক্ষ। রাজ্যে জনসংখ্যায় এক শতাংশ ধরে ৪২ হাজার ইউনিট রক্ত প্রয়োজন বলে তিনি জানান। এই লক্ষ্যমাত্রার বেশিও ঘটনা দুর্ঘটনার কারণে আরও রক্তের জোগান প্রয়োজন পড়ে।চলতি বছরেও রক্ত জোগানের অনুরূপ লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল ও স্বেচ্ছা রক্তদানের মধ্যে পাওয়া গেছে বলেও শ্রী দেববর্মার দাবি। যদিও তার বেশিনরক্তের প্রয়োজন পড়েছে।তিনি জানান,প্রতি মাসে গড়ে সারা রাজ্যে সাড়ে তিন হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন পড়ে।কিন্তু চাহিদামতো সারা বছর স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির না হওয়ায় ও বিরাটবঘাটতি থাকায় ব্লাডব্যাঙ্কে মাঝে মধ্যেই রক্তের সংকট দেখা দেয়।ফলে ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে হাসপাতালে ভর্তি মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্ত সব সময় মিলছে না।রোগীর আত্মীয়কে হন্যে হয়ে ডোনারবখুঁজে এনে মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে হচ্ছে।তাতে দূর দূরান্তের রোগীরা ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের সংকটে কারণ ডোনার খুঁজে আনতে গিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন।সেই বিষয়ে এদিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহ জোগাতে রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ জোগাতে কলেজে কলেজে সেমিনার-ক্যাম্প করা হবে। ছাত্রছাত্রী, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে রক্তদানে কিভাবে বেশি করে উৎসাহী করা যায় তার উপর বিশেষ প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের ১-৩ তারিখ অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে তিন দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হবে। ত্রিপুরা রাজ্য থেকে রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের তিনজন ও দু’জন চিকিৎসক (এমও) প্রশিক্ষণ শিবির যোগ দেবেন। রাজ্যের ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত সারা বছরই প্রচণ্ড সংকট থাকায় রোগীরা যে ভীষণ ভাবে বিপাকে পড়েন সেই বিষয়ে রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বলে বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনা হয়।রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের মেম্বার সেক্রেটারি ডা. বিশ্বজিৎ দেববর্মা আরও জানান, জানুয়ারী মাসের ৭ তারিখ নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের তালিকাভুক্তদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। আগরতলা সহ রাজ্যে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিনশো মানুষের শরীরে বিভিন্ন নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত রয়েছে বলে স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে।জিবি, আইজিএম, টিএমসি সহ হাসপাতাল গুলির ব্লাড ব্যাঙ্কে নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ফোন নম্বর সহ তালিকা রয়েছে।নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের সংকট মেটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে শ্রীদেববর্মা জানান। জিবি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ১০০০ ইউনিট রক্ত মজুত রাখার ক্ষমতা রয়েছে। আইজিএমের ব্লাড ব্যাঙ্কে ৬০০ ইউনিট, টিএমসি ব্লাড ব্যাঙ্কে ৫০০ ইউনিট, গোমতী জেলার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ৫০০ ইউনিট ধর্মনগরস্থিত জেলা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে ৫০০ ইউনিট, শান্তিরবাজার, বিলোনীয়া হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ৩০০ ইউনিট রক্ত মজুত করে রাখার ক্ষমতা রয়েছে বলে তিনি জানান। শ্রীদেববর্মা জানান, সাধারণত ৩৫ দিন সময় ধরে রক্ত মজুত রাখা যায়। এদিকে স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির করতে বৈঠকে ক্লাব, সংগঠন কলেজের নাম সহ ২০২৪ এর জন্য ক্যালেন্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ডা.প্রদীপ ভৌমিক, ডা. কনক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.