বেকার ঠকানোর কারখানায় পরিণত হয়েছে টিপিএসসি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-চাকরির নামে বেকার ঠকাচ্ছে রাজ্য সরকার বকলমে টিপিএসসি। শুধুমাত্র চাকরির বিজ্ঞাপনের নামে বেকারের পকেট কাটা হচ্ছে।এরপর পরীক্ষার নামে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিশ বাও জলে।বেকার বিক্ষোভের চাপে পড়ে একাংশ ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে ঠিকই।তবে এক্ষেত্রে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে প্রথমে রাজ্য মহাকরণে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের নামে সাংবাদিক সম্মেলন,এরপর নিয়োগের বিজ্ঞাপন, আবেদনপত্র সংগ্রহ, দুই ধাপে লিখিত পরীক্ষা,মৌখিক পরীক্ষার নামে পাঁচ বছর চলে যাচ্ছে।আর রাজ্য সরকারের এই ধীরগতির জন্য রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে চাকরি জীবনের পাঁচ বছর গায়েব হয়ে যাচ্ছে।ফলে বেকাররা চাকরির ফুল বেনিফিট পাচ্ছেন না।রাজ্যে প্রত্যেক বছর বয়স উত্তীর্ণ বেকার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।কিন্তু এরপরও একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া এক বছরের মধ্যে শেষ করছে না রাজ্য সরকার এবং ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন। শুধু তাই নয়, রাজ্যের বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে দুই বছরের ছাড়ের জন্য রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত মানা হচ্ছে না ।
যার ফলে রাজ্যে বেকার বিক্ষোভ চরমে উঠেছে।রাজ্য সরকারের টিপিএসসি বেকারের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস পরীক্ষা ত্রুটিপূর্ণ এবং সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে।যাতে বেকার ইঞ্জিনীয়ারদের চাকরি না হয়। এমনকী বেকার বিক্ষোভের ভয়ে এখন ফলাফল প্রকাশ বন্ধ।এখন আবার সতেরো ডিসেম্বরের আয়োজিত কম্বাইন্ড মিসিলিনিয়াস পরীক্ষা পর্যন্ত সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপত্র করে দেখালো টিপিএসসি। পরীক্ষায় ভারতের সংবিধান বিভাগে ৯৯ শতাংশ প্রশ্ন কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিষয় থেকে করা হয়।অথচ বিষয়টি ছিল ভারতের সংবিধান।তবে ভারতের সংবিধানের প্রশ্ন নেই!মেন্টাল অ্যাবিলিটি, সিম্পল অ্যারিথমেটিক্স এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও জেনারেল নলেজ বিভাগের প্রশ্নপত্রের পর্যন্ত একই হাল। বেকার যুবক-যুবতীদের অভিযোগ,ত্রিপুরা লোকসভা আয়োগ কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে যাদের সিলেবাস সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই তাদের দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরিতে ব্যস্ত।যার ফলে রাজ্যের মেধাবী যুবক-যুবতীদের চাকরি অধরা।জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার ও টিসিএসসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চাকরির দাবিতে এখন রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছেন রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা।টিপিএসসি সূত্রে খবর প্রায়, ছয় বছর হচ্ছে অথচ কম্বাইন্ড মিসিলিনিয়াস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ বন্ধ।২০১৮ সালে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে নতুন নিয়োগ নীতির নামে সব নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছিল।এর ঠিক দু’বছর বাদে আবার ঘটা করে কম্বাইন্ড মিসিলিনিয়াস পদের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। তবে নিয়োগ হয়নি।এরপর আবার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে মহিলা সংরক্ষণের প্রচার করে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনগুলির আবেদনের দিনক্ষণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।এমনকী তড়িঘড়ি লিখিত পরীক্ষার দিনক্ষণ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।রাজ্য সরকারের ভাবখানা এমন ছিল যে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের আগেই টিপিএসসির মাধ্যমে সব চাকরি প্রদান হয়ে যাবে। এমনকী সব নিয়ম লঙ্ঘন করে নতুন বিজ্ঞাপন না দিয়ে পুরনো কম্বাইন্ড মিসিলিনিয়াস নিয়োগের সাথেই পনেরোটি ফুড ইন্সপেক্টর পদ পর্যন্ত জুড়ে দেওয়া হল।অথচ নির্বাচন শেষ হয়ে নতুন সরকার ক্ষমতায়ও এসে গিয়েছে। তবে নিয়োগ তো দূর অস্ত। এখন পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার ফলাফল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।এখন আবার লোকসভা নির্বাচন আসছে। তবে সহজেই অনুমেয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া অতি সহসাই হচ্ছে না।এদিকে টিসিএস এবং টিপিএস পঁয়ত্রিশটি পদে, পঞ্চায়েত এগজিকিউটিভ অফিসার চারশটি পদে,আইসিডিএস সুপারভাইজার ১৫৫টি পদে, সিডিপিও তেইশটি পদে, ফুড ইন্সপেক্টর পনেরোটি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা নিল টিপিএসসি। আর এখন তিন বছর শেষ হচ্ছে। তবে নিয়োগ নেই।